ঝালকাঠির গাবখান-ধানসিঁড়ি-সুগন্ধা-বিষখালী-বাসন্ডা নদীর মোহনায় জেগে ওঠা চরে ‘ধানসিঁড়ি ন্যাশনাল ইকো পার্ক প্রকল্পটি কাজ শুরু কওে ১৬ বছরেও বাস্তবায়িত হয়নি। স্থানীয় একটি চক্রের মামলা আরও দুই মন্ত্রণালয়ের রশি টানাটানিতে থেমে আছে কাজ।

২০০২ সালে গাবখান-ধানসিঁড়ি-সুগন্ধা-বিষখালী-বাসন্ডা নদীর মোহনায় জেগে ওঠা চরে ‘ধানসিঁড়ি ন্যাশনাল ইকো পার্ক প্রকল্পটি কাজ শুরু হয় বালু ও মাটি ভরাট করে। পার্কটি নির্মাণের উদ্দেশ্য ছিল, দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জন্য বিভিন্ন সুবিধা সংবলিত একটি আধুনিক পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্র নির্মাণ করা। কিন্তু এর পর ১৬ বছর পেরিয়ে গেলেও নানা জটিলতায় প্রকল্পটি আলোর মুখ দেখেনি আর।’

অভিযোগ রয়েছে- ভূমি ও বন মন্ত্রণালয়ের মধ্যকার জটিলতায় এ প্রকল্পের ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে স্থানীয় ভূমিগ্রাসীদের মামলা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়- ঝালকাঠি শহরের অদূরে পাঁচ নদীর মোহনায় জেগে ওঠা চরের প্রায় ৫০ একর খাস জমিতে ইকো পার্ক স্থাপনের প্রস্তাব করা হয়। যা বাস্তবায়ন করার কথা ছিল বন বিভাগের। প্রস্তাবিত এ পার্কে রেস্ট হাউজ, প্যাডেল বোট, গাড়ি পার্কিংয়ের স্থান, তথ্যকেন্দ্র, বিভিন্ন পশুপাখির ভাস্কর্য, বাগান, নদীর গাইড ওয়াল, বাঁধানো ঘাট, বিভিন্ন দুর্লভ প্রজাতির গাছ ও অভ্যন্তরীণ ছোট ছোট সড়ক থাকার কথা ছিল।’

বিগত ৪ দলীয় জোট সরকারের আমলে একনেক সভায় প্রকল্পটি জাতীয় পর্যায়ের পার্ক হিসেবে অনুমোদনও পায়। কিন্তু এর পরই জমির দাম নিয়ে ভূমি ও বন অধিদপ্তরের মধ্যে সংকট তৈরি হয়। ওই সময় ভূমি অধিদপ্তর জমির মূল্য ১৮ কোটি টাকা নির্ধারণ করে, যা দিতে অস্বীকার করে বন বিভাগ।’

এরই মধ্যে বালি দিয়ে ভরাট করা হয় প্রকল্প এলাকা। এর পর ২০০৭-০৮ অর্থবছরে প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ করা হয় ৪ কোটি টাকা। কিন্তু প্রকল্প এলাকার ৩৫ একর জমির মালিকানা দাবি করে একটি চক্র মামলা দায়ের করে। এতে আটকে যায় প্রকল্পের কাজ।’

ফলে আদালতের নিষেধাজ্ঞায় বরাদ্দ ওই অর্থ অব্যবহৃত অবস্থায় ফেরত যায়।

পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ধানসিঁড়ি ইকো পার্ক বাস্তবায়নে অনুমতি প্রদানের জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয়া হয়েছিল। এতে ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে জেলা প্রশাসকের কাছে এ বিষয়ে প্রতিবেদন চাওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসন ২০১০ সালে ভূমি মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দাখিল করে।’

ওই প্রতিবেদনে উল্লেথ করা হয়, আদালতের স্থগিতাদেশ থাকা অবস্থায় এখানে কোনো বনায়ন বা অবকাঠামো নির্মাণ করা সম্ভব নয়। সব মামলা নিষ্পত্তি হলে সেখানে প্রস্তাবিত ইকো পার্ক নির্মাণ করা সম্ভব হবে। প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, জীববৈচিত্র সংরক্ষণসহ বিপন্নপ্রায় উদ্ভিদ সংরক্ষণেও পার্কটি জাতীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ন অবদান রাখবে।

এ বিষয়ে ঝালকাঠি সদর উপজেলা বন কর্মকর্তা জিয়াউল হক জানান, মামলার কারণে ইকো পার্কের কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। আইনি জটিলতা কাটিয়ে শিগগিরই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।’’