ঝালকাঠিতে খোলাবাজারে ওএমএস এর চাল বিক্রিতে নিয়ম মানছে না ডিলাররা। মাস্টাররোলে গ্রাহকদের ঠিকানা না লিখে টিপসই রেখেই দেয়া হচ্ছে। সঠিকভাবে দেয়া হচ্ছে না মাস্টাররোলে ক্রমিক নম্বরও। খাদ্য অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিনিধি দেয়া হলে তারাও ঠিকভাবে তদারকির দায়িত্ব পালন করছেন না। এ সকল কাজে ফাঁকি দিয়ে বেশি ক্রেতা দেখিয়ে চাল কালোবাজারে বিক্রিরও আিভযোগ উঠেছে। বুধবার দুপুর ১২ টার দিকে ডিলার পয়েন্ট ঘুরে এসব চিত্র দেখা গেছে।

ঝালকাঠি জেলা খাদ্য অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাজমুল হোসেন জানান, রোববার থেকে ঝালকাঠি জেলা শহরে প্রতিকেজি ৩০ টাকা মূল্যে ওএমএস চাল বিক্রি শুরু হয়েছে। জেলার বাকি ৩ উপজেলায় বুধবার সকাল থেকে শুরু হয়েছে। ঝালকাঠি জেলা শহরে ৯ জন, নলছিটিতে ৪ জন, রাজাপুরে ৩ জন ও কাঠালিয়ায় ৫ জন ডিলার ওএমএস’র চাল বিক্রি করছেন। প্রতিজন ক্রেতা/গ্রাহক ৫ কেজি করে চাল নিতে পারবে।

শহরের কাঠপট্টি এলাকায় ডিলার মোঃ বেলায়েত শরীফের দোকানে গিয়ে দেখা গেছে, সকাল ৯ টায় ওএমএস‘র চাল বিক্রি শুরু হয়ে দুপুর ১১টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত ১শ ১৪ জনে চাল নিয়েছেন। সেখানের মাস্টাররোলে ক্রেতার নাম ও টিপ সহি থাকলেও কোন ক্রেতার স্বাক্ষর এবং ঠিকানা নেই। সেখানে চাল বিক্রি করতে ছিলেন দিপংকর সিকদার নামের ডিলারের নিয়োগকৃত এক যুবক। তিনি জানান, চালের প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ আছে। আমরাও সকাল থেকে দিয়ে যাচ্ছি বিকেল ৫ টা পর্যন্ত থাকবো। এ চাল বিক্রি বেশ কিছুদিন অব্যাহত থাকলে চালের বাজার দর নিয়ন্ত্রণ হবে। মাস্টাররোলে ঠিকানা না থাকার বিষয়ে তিনি জানান, ভীড় বেশি থাকার কারণে ঠিকানা লেখা সম্ভব হয়নি।

শহরের কালাবাগান এলাকার ডিলার গোপাল কৃষ্ণ পালের দোকানে দুপুর ১২ টায় গিয়ে দেখা গেছে, মাস্টাররোলে ৪৩ জনের নাম ও টিপসহি থাকলে কোন ক্রেতার ঠিকানা কিংবা স্বাক্ষর নেই। গোপাল কৃষ্ণ পাল জানান, সকাল ৯ টা থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত ১০৯ জনের কাছে চাল বিক্রি করা হয়েছে। ভীড় বেশি থাকার কারণে ঠিকানা লেখা সম্ভব হয়নি বলেই তিনি তাড়াহুড়ো করে মুখস্থভাবে ঠিকানা লিখতে শুরু করেন।

স্থানীয়রা জানান, ডিলার আমাদের চাল বিক্রিতে সীমাবদ্ধতার অজুহাত দেখিয়ে রাতের আধারে কালোবাজারে বিক্রি করছেন। প্রশাসন থেকে দেখাশুনা করলে সঠিকভাবে ক্রেতারা চাল পেত।

এসব অভিযোগের বিষয়ে খাদ্য অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাজমুল হোসেন জানান, ডিলারদের তদারকির জন্য খাদ্য অধিদপ্তর এবং জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধি রয়েছেন। তারা সঠিকভাবে তদারকি করছেন কিনা তারও তদারকি করা হচ্ছে। ডিলাররা আমাদের কাছে যখন মাস্টাররোল জমা দেয় তখন সব নিয়ম-কানুন মেনেই জমা দেয়। জমা দেয়ার পূর্বে সবকিছু ঠিক করে দেয়।