মোঃ জসীম উদ্দিন, বাউফল: আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে দলের এমপি-মন্ত্রীদের প্রতি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে উপজেলা নির্বাচনে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ না করতে। একই সঙ্গে পরিবারতন্ত্র কায়েম করতে বারণ করা হয়েছিল। কোনো প্রার্থীকে সমর্থন না দিতেও বলা হয়েছিল দলের পক্ষ থেকে।
কেন্দ্রের এ নির্দেশনা পাত্তাই দিচ্ছেন না পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও স্থানীয় এমপি আসম ফিরোজ। চলমান উপজেলা নির্বচনের ভোটে স্থানীয় এমপি আসম ফিরোজ পরিবারতন্ত্র কায়েম করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
তিনি আওয়ামী লীগের ব্যানারে ঈদ পূর্নমিলনী অনুষ্ঠানের নামে বিভিন্ন ইউনিয়নে সভা করে নিজের পছন্দের ব্যক্তিকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীদের সমর্থন ও তার পক্ষে কার করতে বাধ্য করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তিনি দরীয় সভা ডেকে তার পছন্দনীয় একক প্রার্থীকে সমর্থন দিচ্ছেন। অভিযোগ রয়েছে এমপি আসম ফিরোজ দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে হুমকি – ধমকি দিচ্ছেন তার পছন্দের প্রাথীর পক্ষে কাজ করার জন্য। প্রশাসনকে ‘অবৈধভাবে’ ব্যবহার করে পছন্দের প্রার্থীকে বিজয়ী করে আনবেন-এমন ঘোষণাও দিচ্ছেন তার কাছের কেউ কেউ।
এ নিয়ে আওয়ামী লীগের মাঠপর্যায়ে নেতা কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ বিরাজ করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলার প্রবীণ নেতারা বলছেন, উপজেলা নির্বাচন নিয়ে এমপি’র হস্তক্ষেপ, কোথাও কোথাও বাড়াবাড়ি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে কোনো সময়ে অভ্যন্তরীণ খুনোখুনি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এখনই শক্তহাতে ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে আওয়ামী লীগকে কঠিন মাশুল দিতে হবে।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল মোতালেব হাওলাদার বলেন, এখনো সময় আছে আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড যদি কঠোরভাবে এমপি আসম ফিরোজের বাড়াবাড়ি বন্ধ না করে তাহলে খুনোখুনি বাড়বে। সুষ্ঠ ভোট গ্রহনে বাঁধা তৈরি হবে।
দলের ভিতরে চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে। দলীয় সভানেত্রীর নির্দেশনা রয়েছে স্থানীয় এমপিরা কোন প্রাথীকে সমর্থন দিতে বা কারও পক্ষে কাজ করতে পারবেনা। কিন্তু তিনি (আসম ফিরোজ) বিভিন্ন ইউনিয়নে বৈঠক করে একক প্রার্থী ঘোষণা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। দলের হাইকমান্ড যে কথাগুলো বলে, সেগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে।
তা না করলে দলে সংকট আরও বাড়বে। মাঠপর্যায়ে অস্থিরতা বাড়বে। স্থানীয় এমপি আসম ফিরোজ প্রকাশ্যে তার বিরুদ্ধে বক্তব্য-বিবৃতি দিয়ে যাচ্ছে। তবে এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ উপজেলা আওয়ামী লীগের বেশির ভাগ নেতা-কর্মীরা। এমপির বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি কর্মকান্ডের অভিযোগে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে লিখিত অভিযোগও করেবেন বলে তিনি জানান।
এদিকে ১৭ মার্চ বুধবার উপজেলার নওমালা ইউনিয়নে ঈদ পূর্নমীলনী সভায় এমপি আসম ফিরোজ যোগদান করে তিনি তার পছন্দের চেয়ারম্যান প্রাথী মোশারেফ হোসেন খানের পক্ষে ভোট চাইলে স্থানীয় নেতাকর্মীরা ভূয়া,ভূয়া বলে ডাক চিৎকার দিয়ে মাইকের তার ছিরে মাইক বন্ধ করে দেয়। এ অবস্থায় এমপি বক্তব্য না দিয়ে স্টেইজ ত্যাগ করেন ।
অন্যদিকে একই দিনে অপর একটি সভায় এমপি আসম ফিরোজ বলেন আমি ষোল ইউনিয়নের অভিভাবক। আমি যদি কারও পক্ষে না থাকি সেই লোক বাউফলে ইলেকশন করবে ক্যামনে? তার এই বক্তব্যটি সুষ্ঠ নির্বাচনের ক্ষেএে হুমকি স্বরুপ’। এ বিষয়ে আসম ফিরোজ এমপি বলেন, আমি সরাসরি সম্ভাব্য কোন প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছিনা।
তৃনমূল আওয়ামী লীগ যাকে সমর্থন দিয়ে আমার কাছে পাঠিয়েছে আমি তার পক্ষে আছি। পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী আলমগীর হোসেন বলেন,কেন্দ্রের নির্দেশনা অমান্য করে কোন এমপি যদি কোন প্রাথীর পক্ষে সমর্থন বা ভোট চায় সেটা দলীয় শংখলা ভঙ্গের সামিল। দলের নির্দেশনা অমান্য করা মানেই আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রকে প্রশ্নবিদ্ধ করা। যারাই এই কাজ করবে তাদের বিরুদ্ধে দল অবশ্যই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে।