নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব তাহসিন জামান রোমেলের প্রকাশ্যে অস্ত্র হাতে নিয়ে তোলা একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে। এরই মধ্যে ওই ছবি ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
ছবিতে দেখা যায়, গত ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পরে বিক্ষুব্ধ জনতা রাজধানীর ভাটারা থানায় আগুন দেয়। সেই জলন্ত থানার সামনে প্রকাশ্যে একটি ভারী অস্ত্র নিয়ে ছবি তোলে যুবদল নেতা তাহসিন জামান রোমেল। ছবিটি নিয়ে উপজেলা বিএনপির নেতা কর্মী ও জনগণের মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।
জানা যায়, তাহসিন জামান রোমেল মঠবাড়িয়া পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ড এলাকার আবু জাফরের ছেলে ও মঠবাড়িয়া উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব। তার চাচা সিদ্দিকুর রহমান বাদশা মঠবাড়িয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইরাস চেয়ারম্যান। আরেক চাচা শাহাবুদ্দিন মঠবাড়িয়া উপজেলা আওয়ামী লিগের উপদেষ্টা ছিলেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা বিএনপির কয়েকজন নেতা জানান, গত ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পরে বিক্ষুব্ধ জনতা রাজধানীর ভাটারা থানায় আগুন দেয়। সেখানে মঠবাড়িয়া উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব তাহসিন জামান রোমেলের অস্ত্র হাতে একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে। এতে বোঝা যায় রোমেল সেখানে ছিল এবং সহিংসতায় অংশ নিয়েছে। তার এমন কাজে বিএনপির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে।
এ বিষয়ে আরও কয়েকজন বলেন, তার পরিবারের লোকজন আওয়ামী লীগের সাথে সরাসরি জড়িত থাকায় সে আওয়ামী লীগের সাথে মিলে এমন কাজ করতে পারে বলে আমরা ধারণা করছি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে মঠবাড়িয়া উপজেলা যুবদলের এক নেতা বলেন, তাহসিন জামান রোমেল ৫ আগস্টের পর থেকেই দলের নির্দেশনা অমান্য করে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের সাথে মঠবাড়িয়া উপজেলায় হামলা, ভাঙচুর চালাচ্ছে এবং জনমনে ভীতি ও ত্রাস সৃষ্টি করছে। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, গত ৭ আগস্ট রোমেল তার ফেসবুকে ছবিটি পোস্ট করে এবং কিছুক্ষণ পরে আবার ছবিটি সরিয়ে নেয় কিন্তু এর মধ্যেই ছবিটি বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তার এই কাজে বিএনপি এবং যুবদলের সম্মানহানী হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে মঠবাড়িয়া উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব তাহসিন জামান রোমেলের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, আমি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ৫ আগস্ট ১টা ১৫ মিনিটের দিকে রাজধানীর ভাটারা থানার সামনে রাস্তার ওপর কিছু সংখ্যক অস্ত্র পড়ে থাকতে দেখে তা তুলে সঙ্গে সঙ্গে সেখানে থাকা সেনাবাহিনীর কাছে দিয়ে দেই। এ সময় আবেগের বসে একটি সেলফি তুলে এলাকার এক ছোট ভাইকে পাঠালে সেও আবেগে ছবিটি ফেসবুকে পোস্ট করে। আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের লোকজন এটা নিয়ে সুবিধা নেওয়ার জন্য অপপ্রচার চালাচ্ছে।
পিরোজপুর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব গাজী অহিদুজ্জামান লাভলু বলেন, বিষয়টি জেনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে জাতীয়তাবাদী যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ ঘটনায় তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।