বরিশাল: মেঘের গর্জন শুনলেই ভোলায় বিদ্যুৎ চলে যায়। বিদ্যুতের উৎপাদন কেন্দ্র ভোলায় সম্প্রতি বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে জেলার গ্রাহকরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। জেলার সাত উপজেলায়ই বিদ্যুৎ বিভ্রাট এখন চরম আকার ধারণ করেছে। এখানে বিদ্যুৎ আসে আর যায়। গতকাল  সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার দুপুরে এ রিপোর্ট লেখার সময়  পর্যন্ত বেশ কয়েকবার বিদ্যুৎ বিভ্রাটে দেখা দিয়েছে।

গ্রাহকরা জানায়, হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে ভোলা সদর উপজেলার বিশ্বরোড এলাকায় গ্যাসভিত্তিক ৩৪.৫ মেগাওয়াট রেন্টাল বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এ ছাড়া বোরহানউদ্দিন উপজেলার কুতুবা ইউনিয়নের দক্ষিণ কুতুবা গ্রামে গ্যাসভিত্তিক ২২৫ মেগাওয়াট সাইকেল বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্রসহ প্রায় আড়াই শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র স্থাপন করার পরও জেলায় বিদ্যুৎ বিভ্রাটে সাধারণ গ্রাহকদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। গ্রাহকরা আরো জানায়, ভোলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্র ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কম্পানির  (ওজোপাডিকো) বিদ্যুৎ লাইনটি জরাজীর্ণ হওয়ায় সামান্য বৃষ্টি বা বাতাসের অজুহাতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়।

অপরদিকে বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্র থেকে সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র কর্তৃপক্ষও উৎপাদন বন্ধ রাখে।

ভোলা শহরের কালিবাড়ি রোড এলাকার বিদ্যুৎ গ্রাহক অমিতাভ অপু বলেন, “মেঘ দেখলেই ভোলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।” তিনি বলেন, “সোমবার রাত প্রায় সাড়ে ৯টার দিকে সামান্য মেঘের গর্জনের সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় এক ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। একইভাবে আজ মঙ্গলবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে মেঘের গর্জনের সঙ্গে ফের বিদ্যুৎ  চলে যায়, আসে দুপুর ১২টায়।

পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিদ্যুৎ গ্রাহক আবু তাহের বলেন, “বিদ্যুৎকেন্দ্রের জেলা ভোলায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট মেনে নেওয়া যায় না।”  বিদ্যুৎ বিভাগের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর কারণে ভোলায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট হচ্ছে বলেও মনে করেন তিনি।

এ ব্যাপারে বিদ্যুৎ বিতরণ কেন্দ্র ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কম্পানি (ওজোপাডিকো) ভোলার নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী বলেন, “বাতাসের কারণে বিভিন্ন স্থানে গাছ পড়ে বৈদ্যুতের তার ছিড়ে  যায়। ফলে ভোলায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দেয়।” বিদ্যুৎ সংযোগ লাইনটি জরাজীর্ণ থাকার কথা স্বীকার করে তিনি আরো বলেন, “বিদ্যুৎ লাইনটি আন্ডারলাইন হলে এ সমস্যা থাকবে না।”

এ বিষয়ে ভোলার গ্যাসভিত্তিক ৩৪.৫ মেগাওয়াট রেন্টাল বিদ্যুৎ  উৎপাদন কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক হাফিজুর রহমান বলেন, “রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রটি সচল রয়েছে। তবে, ঝড়-বৃষ্টির কারণে বিদ্যুৎ বিতরণ কেন্দ্র ওজোপাডিকোর বিদ্যুৎ লাইনটি জরাজীর্ণ হওয়ায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দেয়।” উল্লেখ্য, ভোলায় বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ১০ থেকে ১২ মেগাওয়াট।