উন্নত দেশগুলোর জোট জি-সেভেনের সম্মেলনের আউটরিচ বৈঠকে যোগ দিতে আগামীকাল বৃহস্পতিবার কানাডা যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সফরে তিনি কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্র–ডোর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকও করবেন।

মঙ্গলবার (৫ জুন) বিকালে মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। জি-সেভেনের ওই বৈঠকে রোহিঙ্গাদের দ্রুত ও নিরাপদ প্রত্যাবাসন এবং জাস্টিন ট্র–ডোর সঙ্গে বৈঠকে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি নূর চৌধুরীকে কানাডা থেকে ফিরিয়ে আনার বিষয়টি গুরুত্ব পাবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘জি-সেভেন জোটের সভাপতি ও কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্র–ডোর আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী আউটরিচ সেশনে অংশ নেবেন। সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১২ জন রাষ্ট্র/সরকারপ্রধান এবং বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংস্থাপ্রধানকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে জলবায়ু সহিষ্ণুতা শক্তিশালীকরণে সমন্বিত অভিযোজন পরিকল্পনা, দুর্যোগ মোকাবেলায় জরুরি প্রস্তুতি এবং পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে লিঙ্গভিত্তিক উদ্যোগ ও পরিকল্পনার বিষয়টি তুলে ধরবেন।’

আগামীকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী কানাডার উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন। ৯ জুন তিনি জি-সেভেনের ৪৪তম সম্মেলনের বিশেষ আউটরিচ সেশনে যোগ দেবেন এবং ১২ জুন ঢাকা ফিরবেন। প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা কানাডা যাচ্ছেন। কানাডার কুইবেকে আগামী ৮-৯ জুন এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। বিশ্ব অর্থনীতির সাত পরাশক্তির জোট জি-সেভেন সম্মেলনের পাশাপাশি আঞ্চলিক উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির বিষয়ে আলোচনার জন্য জোটের বাইরে থেকে বিভিন্ন দেশকে আলাদা বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। একেই বলা হয় জি-সেভেন আউটরিচ মিটিং।

এবারের জি-সেভেন সম্মেলনে সাগরের পরিবেশ সুরক্ষা ও উপকূলীয় অঞ্চলে বসবাসকারীদের দুর্যোগ সহনশীলতা নিয়ে আলোচনা হবে বলে কানাডার প্রধানমন্ত্রীর অফিস জানিয়েছে।

কানাডা ছাড়া জোটের বাকি ছয় সদস্য হলো- যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, জাপান ও ইতালি। জোটভুক্ত দেশগুলো বিশ্বের মোট সম্পদের (২৮০ ট্রিলিয়ন) ৬২ শতাংশের প্রতিনিধিত্ব করে।

তিস্তা চুক্তি : সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি নিয়ে প্রশ্ন করেন এক সাংবাদিক। এর উত্তরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দুঃখিত। বিষয়টি আমি জানি না। আমার কোনো মন্তব্য নেই।’ ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের বাংলাদেশ সফরের সম্ভাবনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখনো কিছু হয়নি। এগুলো বলা মুশকিল।’

আইসিসির চিঠির জবাব : রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) চিঠির জবাব বাংলাদেশ দিচ্ছে কি না- এমন প্রশ্নের উত্তরে মাহমুদ আলী বলেন, ‘যে জনগোষ্ঠীকে আমরা আশ্রয় দিয়েছি, আমরা চাই তারা সসম্মানে, স্বেচ্ছায় ও নিরাপত্তার সঙ্গে চলে যাবে এবং প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। একই সঙ্গে বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থকেও সংরক্ষণ করতে হবে। এ দুটোকে সামনে রেখেই বাংলাদেশ কাজ করছে।’

আগামী ১১ জুনের মধ্যে ওই চিঠির জবাব দেওয়ার সময়সীমা রয়েছে।