‘বরিশালের ইলিশ, কেজি ৩৫০ টাকা’, ‘বড় বড় ইলিশ, খাইতে স্বাদ-দামে কম’, দেইখ্যা-শুইন্যা-বাইছ্যা লন’, ‘শ্যাষ  হইলে পাইবেন না’ ইত্যাদি স্লোগান এখন নগরীর বিভিন্ন মাছ বাজারে শোনা যাচ্ছে।

 

গত দুদিন ধরেই মাইকিং করে এভাবে বরিশালের সুস্বাদু ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে। ইলিশের দাম কমার কারণেই মূলত ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতেই বিক্রেতারা এ পদ্ধতি বেছে নিয়েছেন।

 

ইলিশ ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বিগত ৫ বছরের মধ্যে ইলিশের দাম এবারের মত কমেনি। যে কারণে সবাই ইলিশ কিনছে। বিশেষ করে মধ্যবিত্ত শ্রেণির লোকজন ইলিশ কিনতে বাজারে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। অনেকেই জমানো টাকা মাটির ব্যাংক ভেঙে ইলিশ কিনতে আসছেন।

 

নগরীর দক্ষিণ টুটপাড়া জোড়াকল বাজারে মাইকিং করে ইলিশ বিক্রি করছেন মো. আলকাস আকন, রমজান মোল্লা, আব্দুল মালেক, মো. রসুল ও মো. রানা।

 

শনিবার এবং রোববার দুদিনে এ বাজারে কমপক্ষে ৪০ মণ মাছ বিক্রি করেছেন তারা। এ ছাড়াও নগরীর ময়লাপোতা মোড়স্থ সন্ধ্যাবাজার এবং নিউ মার্কেটসহ বিভিন্ন বাজারেই মাইকিং করে ইলিশ বিক্রির খবর পাওয়া গেছে।

 

জোড়াকল বাজারে মাইকিং করে ইলিশ বিক্রি করা মো. আলকাস আকন রোববার দুপুরে রাইজিংবিডিকে জানান, সাগরে জেলেদের জালে এ কয়দিন বেশি ইলিশ ধরা পড়ছে। এ কারণে বাজারে ইলিশের সরবরাহ বেশি। তিনি শনিবার একাই ১২ মণ ইলিশ বিক্রি করেছেন। রোববারও ১০ মণ মাছ এনেছেন। তার মতো অনেকেই অন্য মাছ বিক্রি বন্ধ করে এখন ইলিশ বিক্রি করছেন।

 

তিনি আরও জানান, বর্তমানে বাজারে সাড়ে ৩০০ গ্রাম ওজনের এক কেজি ইলিশ ৩৬০ টাকা, ৪০০ গ্রাম ওজনের প্রতি কেজি ৫০০ টাকা এবং ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ কেজিপ্রতি ৭০০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।

 

বাজারে ঘুরে দেখা যায়, মাছ কিনতে বেশ ভিড়। সরকারি কর্মকর্তা মো. বাবুল আকতার এসেছেন ইলিশ কিনতে। তিনি ৪০০ টাকা হিসেবে ৮ কেজি ইলিশ কিনলেন।

 

ক্রেতা মো. আবু সাঈদ জানান, তার মা বাজারে গিয়ে সাড়ে ৩০০ টাকা হিসেবে ৫ কেজি ইলিশ কিনেছেন।

 

এদিকে খুচরা বাজারের মত নগরীর ৫ নম্বর ঘাটস্থ ইলিশের একমাত্র পাইকারি বাজার সরকারি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে গিয়েও অনেকেই পাইকারি দামে ইলিশ কিনছেন বলে জানান আড়তদার মো. সাঈদ হোসেন।

 

মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে ইলিশ কিনতে আসা ইমাম হাফেজ মুহাম্মদ কামরুজ্জামান জানান, ইলিশের দাম কমেছে শুনে তিনি পাইকারি দামে ইলিশ কিনতে এসেছেন। তিনি এখান থেকে ৫০০ টাকা কেজি দরে ৬ কেজি ইলিশ কিনেছেন।

 

একইভাবে সাংবাদিক আবু হাসান এবং শামসুদ্দিন দোহাও ৪ কেজি ৬ কেজি করে ইলিশ কিনেছেন। এভাবে ক্রেতারা ইলিশের প্রতি বেশ ঝুঁকে পড়েছে।