পানের বরজে গোসল করালে বর ভাঙে (বিয়ের বাধা কেটে যায়), এমন ভ্রান্ত ধারণায় পানের বরজে এক তরুণীকে গোসল করিয়ে বিপাকে পড়েছেন অভিভাবকরা। পানের বরজে বিয়ে না হওয়া তরুণীর গোসল করালে পানের বরজ নষ্ট হয়ে যায়, এমন অজুহাতে ওই তরুণীর বিরুদ্ধে গ্রাম্য সালিশ বসেছে। সেখানে তরুণীর পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। মঙ্গলবার জরিমানার ধার্যকৃত টাকা পরিশোধের জন্যও নির্দেশ দেয়া হয়। এমন অবিশ্বাস্য ঘটনা ঘটেছে ভোলার লালমোহন ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের কুমারখালী গ্রামে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কুমারখালী গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমানের নাতনির বিয়ের জন্য এসে পাত্রপক্ষ ফিরে যায়। তার বিয়ে না হওয়াতে পানের বরজে গোসল করালে ‘বিয়ের বর ভাঙ্গবে’ অর্থাৎ বিয়ের বাধা কেটে যাবে এমন ধারণায় পাশ্ববর্তী মো. শাহাবুদ্দিনের পানের বরজে নিয়ে গোসল করানো হয় তাকে। এদিকে ওই পানের বরজের মালিক- স্থানীয় মুরুব্বি, সদ্য ইউপি নির্বাচনে পরাজিত মেম্বার প্রার্থী নুরে আলমের কাছে বিচার দাখিল করেন।’ সোমবার এ নিয়ে এলাকায় সালিশ বৈঠকও করা হয়।
সালিশ নুরে আলমেরে নেতৃত্বে এলাকার আলাউদ্দিন মোল্লা, মুজাম্মেল মিয়া, রহিম, আঃ করিমসহ কয়েকজন বৈঠক করে পানের বরজের ক্ষতিপূরণ বাবদ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য করেন। জরিমানার টাকা মঙ্গলবার দিতে হবে বলেও প্রধান সালিশ নুরে আলম জানিয়ে দেন। সালিশ নুরে আলমের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি জানান, ‘বিগত দিনে এমন গোসল করানোর ফলে অনেক পানের বরজ সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। ওই বরজে আর পান হয় না। তাই এ গোসলের ঘটনায় বরজ মালিকের ক্ষতিপূরণ বাবদ ওই টাকা জরিমানা করা হয়েছে।’
এ ধরণের ঘটনা কুসংস্কার কি-না জানতে চাইলে তিনি জানান, ‘গ্রামে এমন ঘটনা ঘটে আসছে। তাই পানের বরজের ক্ষতিপূরণ তাকে দিতেই হবে। সালিশে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা সঠিক।’ মঙ্গলবার ওই পানের বরজের ছবি তুলতে গেলেও সালিশ নুরে আলম বাধা দেন। লালমোহন উপজেলা কৃষি অফিসার মো. মোশারফ হোসেন জানান, এমন ঘটনা আমাদের কৃষি বিজ্ঞানে জানা নেই। এটি গ্রাম্য মানুষের মধ্যে বিরাজ করা এক ধরণের কুসংস্কার।’ লালমোহন থানা অফিসার ইনচার্জ মো. হুমায়ুন কবির জানান, এ ধরণের ঘটনা আমাদের কাছে কেউ জানায়নি। অভিযোগ পেলে আমরা ব্যবস্থা নেব।’