বরগুনার আমতলী উপজেলার চাওড়া চন্দ্রা গ্রামে নির্বাচন পরবর্তী সংহিসতা বাড়ি ঘরে হামলা ও দোকান লুটের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে যমুনা টিভির বরগুনা জেলা প্রতিনিধি হামলার শিকার হয়েছেন। এসময় ওই সাংবাদিককে মারধর করে ভিডিও ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়ে ভেঙে ফেলে এবং তার ব্যবহৃত ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোন নিয়ে যায়।
আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী এ্যাডভোকেট মো. মহশিন জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর পরই আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান বাদল খানের বড় ভাই দুলাল খান, নজীর গাজী, ইয়াকুব এবং  মোজাম্মেলের নেতৃত্বে ২০ থেকে ২৫ জনের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে চন্দ্রা গ্রামের  কাঞ্চন আলী গাজী, বদু ছিপাই, বারেক গাজী, জামাল মাতুব্বর, শহীদ হাওলাদার বাড়ি ভাঙচুর এবং ওই একই গ্রামের জাকির গাজীর ১টি মুদী দোকান ভাঙচুর করে দোকানের মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।

পরের দিন বুধবার সকাল ৯টার দিকে ওই গ্রামে ঢুকে পুনরায় নওয়াব মিয়া, মঈন উদ্দিন মুন্সী, হারুন মিয়া, মেজাম্মেল মীরা, বাদল দফাদারের বসত ঘরে হামলা, ভাঙচুর ও আপ্তের ছিপাই, আনছারুল ও নসু ফকিরের দোকানে হামলা করে প্রায় লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।’
এ ঘটনার সচিত্র সংবাদ সংগ্রহের জন্য বৃহস্পতিবার  যমুনা টিভির বরগুনা জেলা প্রতিনিধি মিরাজ হোসেন যাবের ও ক্যামেরা ম্যান রুবেল চাওড়া চন্দ্রা গ্রামে যান। ওই গ্রাম থেকে ফুটেজ সংগ্রহ করে  আউয়াল নগর গ্রামে যান। বিকেল ৫টার দিকে আউয়াল নগরের মঈন উদ্দিন মুন্সির বাড়ির হামলার ফুটেজ সংগ্রহ করা মাত্র জলিল হাওলাদার, খবির হাওলাদার, রুবেল খান এবং রেজাউল মুন্সির নেতৃত্বে ২০ থেকে ২৫ জনের সন্ত্রাসী বাহিনী তাদের ওপর হামলা করে। হামলাকারীরা যাবেরকে টেনে হিচঁড়ে এবং কিল ঘুষি লাথি মেরে মাটিতে ফেলে দিয়ে বেধড়ক মারপিট করে। এসময় ক্যামেরাম্যান রুবেলের হাত থেকে ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়ে আছার মেরে ভেঙে ফেলে।

এসময় তাদের ব্যবহৃত ল্যাপটপ ও একটি মোবাইল সেট ছিনিয়ে নিয়ে যায়। সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত সাংবাদিক যাবেরকে তাৎক্ষনিক স্থানীয়রা উদ্ধার করে আমতলী হাসপাতালে ভর্তি করে। তার  অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। আমতলী হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডা. আবুসাদ জানান, তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

এই সাংবাদিকের ওপর হামলার খবর পেয়ে আমতলী হাসপাতালে ছুটে আসেন বরগুনা প্রেসক্লাবের সভাপতি হাসানুর রহমান ঝন্টু, সম্পাদক আবু জাফর ছালেহ এবং বরগুনা জেলা টেলিভিশ সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি আনোয়ার হোসেন মনোয়ার। হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে দোষি ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানান।’

ঘটনার পরপরই ওই এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার  দেখার জন্য বরগুনা -১ আসনের এমপি এ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ সয়ম্ভু উপস্থিত হলে তাকে বিষয়টি জানালে তিনি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পুলক চন্দ্র রায় জানান, থানায় মামলা হয়েছে। আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’