বরিশাল: বরিশালের জনপ্রিয় অনলাইন গণমাধ্যম ‘বরিশালটাইমস’ পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর বাবুগঞ্জ থানার সেই চাঁদাবাজ সহকারি উপ-পরিদর্শক (এএসআই) রাসেলের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে তাকে থানা থেকে সরিয়ে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে। একই সাথে চাঁদাবাজির ঘটনা তদন্তে একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়। সেই কমিটিকে দ্রুত তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলেছে বরিশাল জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) এসএম আক্তারুজ্জামান।

এমতাবস্থায় ধারণা করা হয়েছে- চাঁদাবাজির বিষয়টি প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে আরও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হতে পারে। কারণ অনেকটা স্বচ্ছ মনের মানুষ এসপি আক্তারুজ্জামান ব্যক্তি বিশেষের দায় কখনোই তার মাথায় নেবেন না। যার দরুণ এএসআই রাসেলের চাঁদাবাজির বিষয়টি পত্রিকার শিরোনাম হওয়ায় সাথে সাথে জরুরি পদক্ষেপ রেখে দেখিয়ে দিলেন তিনি। পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তার এই তাৎক্ষণিক পদক্ষেপে নির্যাতিত কিশোর শাহিন হাওলাদারের পরিবারও খুশি হয়েছে। সেই সাথে পুলিশের প্রতি ফিরে পেয়েছে আস্থা।

babugonj

বাবুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম জানিয়েছেন- পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ দেখে প্রশাসনের শীর্ষ মহল থেকে এএসআই রাসেলের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ আসে। যে কারণে তাকে থানা থেকে ‘ক্লোজড’ করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়। এর আগে গত ২ অক্টোবার রাতে থানার আওয়াতাধীন কেদারপুর ইউনিয়নের পশ্চিম ভুতেরদিয়া গ্রামের হাওলাদার বাড়ির ছেলে শাহিন হাওলাদারকে বাসা থেকে বের করে মাদক ক্রয়-বিক্রির সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে নির্মম নির্যাতন করে। সেই সময় কিশোরের বাবা-মা ছেলেকে ছেলে দেওয়ার আকুতি জানালে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে এএসআই রাসেল।

সেই টাকা দিতে কিশোরের পরিবার অপরগতা প্রকাশ করলে বেড়ে যায় নির্যাতনের মাত্রা। ছেলের ওপর অমানুষিক নির্যাতন থেকে মা শেফালি বেগম গরু বিক্রি করা ৬০ হাজার টাকা থেকে ২৫ হাজার টাকা এনে দেন। কিন্তু এতেও থামেনি এএসআই রাসেলের বর্বরতা। একদিকে চালাতে থাকে নির্যাতন অন্যদিকে ঘরে প্রবেশ করে পুলিশ সদস্যরা লুটে নেয় আরও ৩৫ হাজার টাকা। পরবর্তীতে কিশোর শাহিনকে মারতে মারতেও থানার দিকে নিয়ে যায়। কিন্তু রাত ২টার দিকে খবর আসে শাহিনকে বাড়ির অদুরে খেয়াঘাট এলাকায় ফেলে রেখে যায়। ওই রাতে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে সেখানেও চাঁপ প্রয়োগ করে নামটি কাটিয়ে দেয়া হয়।’

এমন খবর নির্ভরযোগ্য সূত্রের কাছ থেকে নিশ্চিত হয়ে অনুসন্ধান শুরু করে বরিশালটাইমসের এ প্রতিবেদক। যা সংবাদ আকারে গত বৃহস্পতিবারের পত্রিকায় তুলে ধরা হয়। ফলশ্র“তিতে এএসআই রাসেলের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করলেন পুলিশ সুপার। এ খবর শাহিনের মা-বাবাসহ পুরো এলাকাবাসীকে স্বস্তি দিয়েছে। কারণ এএসআই রাসেলের বিরুদ্ধে একাধিক চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে।

এলাকার নিরিহ কিশোরদের জিম্মি করে সে ইতিমধ্যে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। সঙ্গত কারণে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও তার ওপর নাখোশ হওয়ায় দাবি করেছেন আরও কঠোর শাস্তি। এমনকি নির্যাতিত কিশোর শাহিন হাওলাদারের পরিবারও একই দাবি জানিয়ে হাতিয়ে নেয়া টাকা ফেরত পেতে পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামণা করেছেন।’