ঝালকাঠিতে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত হতদরিদ্রদের খাদ্যবান্ধব প্রকল্পের আওতায় ১০টাকা দরের চাল বিতরণে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। হত দরিদ্রদের তালিকা প্রনয়নে দলীয় বিবেচনা, স্বজন প্রীতি, উৎকোচ আদায়সহ নানা অভিযোগ রয়েছে ডিলারদের বিরুদ্ধে। জেলার প্রায় এলাকায়ই এমন চিত্র লক্ষ্য করা গেছে।

 
রাজাপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) শাহ মো. রফিকুল ইসলাম অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। গত শনিবার উপজেলার গালুয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. মোস্তফা ও ডিলার ইউনিয়ন আ’লীগ সাধারণ সম্পাদকের পুত্র মো. রফিক শরীফের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন ভুক্তভোগীরা। ইউপি সদস্য মোস্তফা ও ডিলারের বিরুদ্ধে হতদরিদ্রদের কাছ থেকে প্রতি কার্ডে ১০০- ২০০টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। তাদের অভিযোগ, যারা টাকা দিতে পেরেছেন শুধু তারাই ১০টাকা দরের চালের কার্ড পেয়েছেন। এছাড়া ডিলার রফিক শরীফের বিরুদ্ধে জনপ্রতি  ৫ কেজি চাল কম দেয়ার অভিযোগ রয়েছে।

 
এমন অভিযোগের বিত্তিতে স্থানীয় সাংবাদিকরা শনিবার উপজেলার গালুয়া ইউনিয়ন পরিষদে সরেজমিন গিয়ে দেখেন, চাল নিতে এসেছেন কয়েকশ মানুষ তাদের মধ্যে গালুয়া গ্রামের আ. হক, আ. জলিল ও হাবিবুর, পুটিয়াখালী গ্রামের রিজিয়া বেগম ও ইলিয়াস অভিযোগ করেন, আমাদের প্রতিটি কার্ডের জন্য ওয়ার্ড মেম্বরকে ১০০-২০০টাকা দিতে হয়েছে তার পরেও আমাদের ৩০ কেজি চালের পরিবর্তে ২৫ কেজি চাল দিচ্ছে ডিলার। এছাড়া যারা এই বাড়তি টাকা দিতে পারেনি তাদের সমপরিমান টাকার চাল কম দেয়া হচ্ছে।নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ একই এলাকার আরও কয়েকজন ভুক্তভোগী জানান, গত সেপ্টেম্বর মাসের চাল আমাদের নামে বরাদ্দ থাকলেও সেই চাল আমরা পাইনি। অথচ আমাদের কার্ডে লিখে দেয়া হয়েছে দুই মাসের চাল আমরা নিয়েছি।

 
এ ব্যপারে রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) শাহ মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, হতদরিদ্রদের কাছ থেকে প্রতি কার্ডে ১০০- ২০০টাকা হাতিয়ে নেয়া, তালিকা প্রনয়নে অনিয়মসহ বিভিন্ন অভিযোগ আসায় ডিলার ও ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তাকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী দশ কার্যদিবসের মধ্যে এই তদন্ত কমিটিকে নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

 
এ অভিযোগের বিষয়ে গালুয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মুজিবুল হক কামাল বলেন, আমি মৌখিক ভাবে এ অভিযোগ শুনেছি। যে ডিলার ও মেম্বরদের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যাবস্থা নেয়া হবে।