সাইদুল ইসলাম, বরিশাল:: বরিশাল শিক্ষা বোর্ডে গত ১৭ জুলাই প্রকাশিত উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর টেলিটকের খুদে বার্তায় তিন বিষয়ে ফেল দেখানো হয়েছে তাহিরা খানম নামে এক শিক্ষার্থীকে। রোববার পর্যন্ত একই বার্তা দিয়েছে টেলিটক।
তাহিরা ২০২০ সালের পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য চলতি মাসে ফরম পূরণ করেছেন। ওই দিন তার মা কৌতূহলবশত কলেজ থেকে নম্বরপত্র তুলে জানতে পারলেন, তাহিরা সবগুলো বিষয়ে পাস করে ৩ দশমিক ৮৩ পয়েন্ট পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। এরই মধ্যে হারিয়ে গেছে তাহিরার শিক্ষাজীবনের একটি বছর। তবে এর দায় স্বীকার না করে বরিশাল বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ইউনুস বলেছেন, টেলিটকের ‘কারিগরি ত্রুটি’র জন্য এমনটা হয়েছে।
তাহিরা বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার পৌর শহরের জাকির হোসেন খানের মেয়ে। বরগুনা সরকারি কলেজ থেকে তিনি ২০১৯ সালের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন।
তাহিরা জানান, গত ১৭ জুলাই ফল প্রকাশের পর টেলিটকের খুদে বার্তার মাধ্যমে জানতে পারেন, তিনি জীববিজ্ঞান, রসায়ন ও উচ্চতর গণিত বিষয়ে ফেল করেছেন। একাধিক বিষয়ে ফেল দেখানোয় উত্তরপত্র পুনঃমূল্যায়ন আবেদন না করে পরবর্তী পরীক্ষায় অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নেন। গত ১৭ ডিসেম্বর কলেজে গিয়ে পরবর্তী পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য তিন হাজার টাকায় ফরম পূরণ করেন। সেদিন তার মা সেলিমা খানম কলেজ থেকে ২০১৯ সালের পরীক্ষার নম্বরপত্র তুলে দেখেন, তাহিরা সবগুলো বিষয়ে পাস করেছে। তার মোট পয়েন্ট ৩ দশমিক ৮৩।
তাহিরার ভাই ফেরদৌস খান ইমন জানান, তিনি গত ২২ ডিসেম্বর বোনের নম্বরপত্র নিয়ে বোর্ড চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করেন। চেয়ারম্যান নিজের মোবাইল ফোনে সার্চ দিলে একই বার্তা দেওয়া হয়। পরে তিনি বোর্ডের সিস্টেম অ্যানালিস্টকে ডেকে পাঠান। সিস্টেম অ্যানালিস্ট নিজেদের কিছু ভুলত্রুটির কথা জানিয়ে বলেন, ফল প্রকাশের পরবর্তী ১৫ দিনের মধ্যে ভুল সংশোধন করে দেওয়া হয়েছে। ওই সময়েও এ দায় টেলিটকের ওপর চাপানোর চেষ্টা করেন তিনি।
তাহিরার মা সেলিনা খানম বলেন, পরীক্ষার পর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি কোচিংও করেছিল তাহিরা। ফল খারাপ হওয়ায় এক মাস আগে মেয়েকে বিয়ে দেন। কর্তৃপক্ষের ভুলে তার মেয়ের জীবন থেকে হারিয়ে গেছে একটি মূল্যবান বছর। এ ক্ষতির জন্য যারা দায়ী, তাদের কঠোর শাস্তি চান তাহিরার মা।
বরগুনা সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অধ্যাপক আবদুস সালাম বলেন, ফল প্রকাশের সময় তাহিরাকে ফেল দেখেছি। এখন দেখছি পাস। এটা বোর্ডের বিষয়।