বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব ও বরিশাল মহানগর বিএনপির সভাপতির পদ আগলে রাখার কৌশল স্পষ্ট হয়ে গেছে দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার কাছে। তা নিয়ে কড়া নির্দেশনা দিয়েছেন দলনেত্রী। এর মাধ্যমে নির্ধারিত হয়ে গেল সরোয়ারের মহানগর বিএনপির সভাপতির পদ ছাড়ার বিষয়টি। যদিও পদ ধরে রাখতে দলীয় চেয়ারপার্সনের নির্দেশ উপেক্ষা করে স্থানীয় নেতাদের দ্বারা পুনরায় লিখিত আবেদন পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি বলে একাধিক নেতা নিশ্চিত করেছেন।
তবে সরোয়ার বিরোধী গ্রুপও রয়েছে চাঙ্গা মুডে। এর আগে সরোয়ারকে মহানগর বিএনপির সভাপতির পদ থেকে সরানোর জন্য তার রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত খারাপ দিক তুলে ধরে দলের চেয়ারপার্সন বরাবর দালিলিক প্রমানসহ অভিযোগ পাঠিয়েছিল। যার মাধ্যমে স্থানীয় রাজনীতিতে সমালোনায় পরে সরোয়ার।
এদিকে কেন্দ্রিয় বিএনপি সূত্র নিশ্চিত করেছে, বরিশাল বিএনপির সভাপতির পদ না ছাড়ার কৌশল হিসেবে চারদিন আগে ভিন্ন আবদার নিয়ে যান দলীয় চেয়ারপার্সনের কাছে। মজিবর রহমান সরোয়ার অনুরোধ করেন তার সভাপতির পদ ছাড়ার আগে মহানগরে কাউন্সিল দিতে চান। বেগম খালেদা জিয়া অনুমতি দিলে অতিদ্রুত কাউন্সিল দিয়ে সরে দাড়াবেন তিনি।
কিন্তু সরোয়ারের এমন প্রস্তাবে রাজি হননি দলপ্রধান। উল্টো ভৎর্সনার সুরে তাকে যে নির্দেশনা প্রদান করেছে দল তা মেনে নিতে বলেন। বেগম জিয়ার বরাত দিয়ে কেন্দ্রিয় আরেক যুগ্ম-মহাসচিব মুঠোফোনে জানান, ম্যাডাম এমন কথা শুনে মজিবর রহমান সরোয়ারের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। ধমকের সুরে বলেন, আপনাকে বরিশাল বিএনপির কাউন্সিল নিয়ে ভাবতে হবে না। কেন্দ্রে আপনাকে দ্বায়িত্ব দেয়া হয়েছে, আপনি কেন্দ্রে কাজ করুন। সূত্রের দাবী, একইসাথে বরিশাল মহানগর বিএনপির পদ থেকে সরে দাড়ানোর জন্য পুনরায় বলেন বেগম জিয়া।
জানা গেছে, বিএনপিকে ঢেলে সাজানো ও বিশেষ বিশেষ স্থানে নের্তৃত্ব বিকেন্দ্রিকরণের লক্ষ্যে উদ্যোগ নেয় কেন্দ্র। এর অংশ হিসেবে দেশের ৪৫জন নেতাকে চিঠি পাঠানো হয় তাদের বহুপদ আগলে রাখা থেকে সরে এসে মাত্র একটি পদের নের্তৃত্ব রেখে বাকিগুলো থেকে পদত্যাগ করার জন্য। সেই ৪৫জন নেতার মধ্যে বরিশাল মহানগর বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রিয় যুগ্ম-মহাসচিব এ্যাড. মজিবর রহমান সরোয়ারের নাম রয়েছে।
এ নির্দেশনা আসার পর নড়েচড়ে বসে সরোয়ার কোরাম। একইসাথে নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে উঠেপরে লেগে যায় সরোয়ার ঘরানার বাইরের বিএনপির নেতারা। সে সংবাদ জানতে পেরে তড়িঘরি করে সংবাদ সম্মেলন করে সরোয়ার অনুসারিরা। সেখানে কেন্দ্রিয় নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে গণপদত্যাগের হুমকী দেয় গুটিকয়েক নেতা। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে নিজের অবস্থান জানান দিলেও কেন্দ্রে তোপের মুখে পরেন তিনি।
এদিকে পদ ছাড়ার আগে মহানগরের কাউন্সিল দেবার প্রস্তাব নিয়ে দলীয় চেয়ারপার্সনের কাছে যাবার বিষয়টি নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে বিএনপিতে। স্থানীয় নেতারা মনে করেন এমন প্রস্তাবও সরোয়ারের কর্তৃত্ব আগলে রাখার কৌশল। কারন কাউন্সিল দিলে সে তার পছন্দের লোকদের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসিয়ে যাবেন এবং এর মাধ্যমে নিজে কেন্দ্রে থাকলেও অঙ্গুলীহেলনে নিয়ন্ত্রন করবে সরোয়ার।
সূত্রানুযায়ী, সভাপতির পদ দেবার জন্য কামরুল আহসান শাহীন এবং সাধারণ সম্পাদকের পদে জিয়া উদ্দিন শিকদারকে বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলেও জানা গেছে। পদ ছাড়ার প্রশ্নে মজিবর রহমান সরোয়ার বলেন, নেত্রী যে নির্দেশনা দিবেন আমি সেটাই মেনে নিব। বরিশাল মহানগর বিএনপির কাউন্সিলের প্রস্তাব নিয়ে যাবার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ঘটনাটি তিনি অস্বিকার করেন।