বরিশাল: ২২ গজে মেহেদী হাসান মিরাজের ঘূর্ণি জাদু চলছেই। রোববার বাংলাদেশের ঐতিহাসিক টেস্ট জয়ে কার্যকরী ভূমিকা রেখেছেন ডানহাতি অফ স্পিনার বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার আউলিয়াপুর এলাকার এই সন্তান। এই নিয়ে টেস্ট ক্যারিয়ারের চার ইনিংসের মধ্যে তৃতীয়বারের মতো ৫ উইকেট পেলেন মিরাজ। শেষ পর্যন্ত ৭৭ রান খরচায় তিনি নিয়েছেন ৬ উইকেট। তাতে পরিণত হয়েছেন এক ম্যাচে সর্বোচ্চ উইকেট নেওয়া বাংলাদেশি বোলার।

বাংলাদেশের হয়ে এক ম্যাচে সর্বোচ্চ উইকেটের মালিক এত দিন ছিলেন এনামুল হক জুনিয়র। ২০০৫ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মিরাজের সমান ১২টি উইকেট নিয়েছিলেন বাঁহাতি এই স্পিনারও। তবে উইকেট গড়ে এগিয়ে থাকায় শীর্ষে মিরাজ। এনামুল পাশে থাকলেও তিনি ছাড়িয়ে গিয়েছেন সাকিব আল হাসানকে। এক ম্যাচে সাকিবের উইকেট ছিল ১০টি। ২০১৪ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১০ উইকেট নিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান।

২৩৩ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ইংল্যান্ডে শুরুতেই ১০০ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশকে ব্যাকফুটে ঠেলে দেন। এই সময়ে প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেন মেহেদী হাসান। বেন ডাকেট মিরাজের স্ট্যাম্পের করা বলটি খেলতে গিয়ে ক্লিন বোল্ড হয়ে সাজঘরের পথ ধরেন। ডাকেটকে দিয়েই শুরু প্রথম উইকেটের মিশন।

দ্বিতীয় উইকেট হিসাবে গ্যারি ব্যালেন্সকে তুলে নেন মেহেদী হাসান। ব্যালেন্স ব্যাক্তিগত ৫ রানে তামিমের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে বিদায় নেন। একই ওভারের শেষ বলে মিরাজ তুলে নেন তার তৃতীয় উইকেট। আর ইংল্যান্ডের চার উইকেট পতনে বাংলাদেশ পুরোপুরি ম্যাচে ফেরে। মিরাজের স্ট্যাম্পে থাকা বলটি ব্যাটে লাগাতে ব্যর্থ হলে বাংলাদেশ এলবিডাব্লিউর আবেদন করে, সেই আবেদনে আম্পায়ার সাড়া দিলে মঈন আলী রিভিউ নেন। কিন্তু আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত বহাল থাকলে সাজঘরে ফিরে যেতে হয় মঈন আলীকে।

পরের ওভারে আবারও আক্রমণে মিরাজ। এবার তার ঘূর্ণি জাদুতে ফিরে যেতে হয়েছে ইংলিশ অধিনায়ক অ্যালিস্টার কুককে। বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান মেহেদীর ঘূর্ণি বুঝতে না পেরে সোজা ব্যাটে খেললেন। আর তাতেই সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মমিনুল হক তালুবন্দি করলেন বল। ব্যক্তিগত ৫৯ রান নিয়ে ফিরে গেলেন কুক। বাংলাদেশের দিকে পুরো ম্যাচটিই তখন হেলে পড়ে।

কুকের বিদায়ের পর মিরাজ তৃতীয়বারের মতো ৫ উইকেট শিকার থেকে ১ উইকেট দূরে ছিলেন। এই মাইলফলক স্পর্শ করতে খুব বেশি দেরি করলেন না মিরাজ। দলীয় ৩৭.৩ ওভারে শুভাগত হোমের ক্যাচে মিরাজ এই মাইলফলকে পৌঁছে যান বেয়ারস্টোকে ফিরিয়ে। আর শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে স্টিভেন ফিনকে আউট করে টানা দুই ইনিংসে ৬ উইকেট পেলেন তিনি।

প্রসঙ্গত, এর আগে চট্টগ্রাম টেস্টে ৭টি উইকেট নিয়েছিলেন মেহেদী হাসান। ঢাকা টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেটের পর দ্বিতীয় ইনিংসেও নিয়েছেন ৬ উইকেট।