ঘূর্ণিঝড় নাডার প্রভাবে কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর প্রচণ্ড উত্তাল হয়ে উঠেছে। কোনো ট্রলার ও জেলে নৌকা সাগরে মাছ ধরতে যায়নি। মৎস্য বন্দর আলীপুর, মহিপুর, ঢোস, খাল গোড়ার পোতাশ্রয়ে আশ্রয় নিয়েছে ওই সব জেলে নৌকা ও ট্রলারগুলো।

এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে উপকূলীয় পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় গত দু’দিন ধরে মূষল ধারে বৃষ্টি হচ্ছে। সেই সঙ্গে ঝড়ো হাওয়া বইছে। প্রবল বর্ষণে জনজীবন পুরোপুরি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ঝড়ো হাওয়ায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা। দিনভর প্রবল বর্ষণে আমন, ইরি ধান ক্ষেত ও শীতকালীন সবজির ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ে শঙ্কায় উপকূলের লাখ লাখ মানুষ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন।

আলীপুর মৎস্য আড়তদার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আনসার উদ্দিন মোল্লা জানান, ইলিশের প্রজনন মৌসুম শেষ হওয়ার পরই ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হওয়ার খবর পেয়ে সাগরবক্ষ থেকে মাছধারা ট্রলারগুলো ঘাটে ফিরে এসেছে।

বালিয়াতলী ইউনিয়নের বৌদ্ধপাড়া গ্রামের কৃষক মতিয়ার রহমান গাজী বলেন, প্রায় ৪০ বিঘা জমিতে ইরি ধান করেছি। ক্ষেতে ভালই ফসল হয়েছে। বাতাসের কারণে বেশিভাগ ক্ষেতের ফসল নুয়ে পড়েছে। এমন অবস্থা উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের শত শত কৃষকের।

এদিকে আন্ধারমানিক নদের জোয়ারের পানির চাপ ও প্রবল বর্ষার কারণে সবজি ক্ষেতগুলো তলিয়ে গেছে। এনিয়ে কৃষকরা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মসিউর রহমান বলেন, দুর্যোগের কারণে কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তার তথ্য-উপাত্ত পুরোপুরি না পাওয়ায় আসলে সঠিকভাবে বলা যাচ্ছেনা।

তিনি আরও জানান, বাতাসে যেসব ধান ক্ষেতের চারা নুয়ে পড়েছে, তা রোদ উঠলে ঠিক হয়ে যাবে বলে মনে করছি। আর তলিয়ে যাওয়া সবজির ক্ষেতের পানি নেমে গেলে সেসব গাছও ঠিক হয়ে যাবে।

ঢাকার আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ মো. রাশেদুজ্জামান বলেন, ঘূর্ণিঝড় ‘নাডা’ পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৪৯৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। রবিবার সকাল নাগাদ ঘূর্ণিঝড়টি উত্তর-উত্তর পূর্ব দিক দিয়ে অর্থাৎ বরিশাল-চট্রগ্রামের ওপর দিয়ে অতিক্রম করতে পারে।

তিনি আরও বলেন, গত ৬ ঘণ্টায় পটুয়াখালী জেলায় ৫০ মি.লি. মিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় নাডার কারণে নদী বন্দরের জন্য ২ নম্বর এবং সমুদ্র বন্দরের জন্য ৪ নম্বর সতর্ক সংকেত দেওয়া হয়েছে।