মোহাম্মদ নবীর ঘূর্ণিতে বিপিএলের ‘উদ্বোধনী’ ম্যাচে চিটাগং ভাইকিংসের বিপক্ষে ২৯ রানে হেরে গেছে শিরোপাধারী কুমিল্লা ভিক্টেরিয়ানস। ১৬২ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ৮ উইকেটে ১৩২ রানে শেষ হয় তাদের পথচলা। নবী ৪ ওভারে ২৪ রানে ৪ উইকেট নিয়ে হয়েছেন চিটাগং ভাইকিংসের জয়ের নায়ক। এর আগে ভাইকিংস ২০ ওভারে ৩ উইকেটে করেছিল ১৬১ রান।

টি-টোয়েন্টি বিশেষজ্ঞ ডোয়াইন স্মিথ কেন বল হাতে বিপজ্জনক, তার অনুপম প্রদর্শনী ছিল ৪ ওভারের স্পেলটিতে। অফ স্টাম্পের বাইরে, লেগ স্টাম্পেরে ওপরে বল পিচ করে ও বলের গতিতে পরিবর্তন এনে তিনি সেট হতে দেননি কুমিল্লার ওপেনার ইমরুল কায়েস ও লিটন কুমার দাশকে। ইমরুল কায়েস স্মিথের বলে ৬ রানে কট বিহাইন্ড হন।

মাঠে নেমে রানের গতিটা বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছিলেন মারলন স্যামুয়েলস। ১৮ বলে ১ টি ছক্কা ও দুটি চারে  ২৩ রান করে ভালোই এগিয়ে চলছিলেন, বাঁধা হয়ে দাঁড়ালেন আব্দুর রাজ্জাক। তার লেগ স্টাম্পে পড়া বল মিডউইকেটের ওপর দিয়ে মারতে গিয়ে তাসকিনের হাতে ধরা পড়েন ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যান।

এরপর বিদায় নেন লিটন কুমার দাশ। নবীর বল ব্যাকফুটে কাট করতে গিয়ে তিনি এনামুল হক বিজয়ের গ্ল্যাভসে দ্বিতীয় ক্যাচ জমা দেন। ‘অপয়া’ ১৩ ছিল তার সংগ্রহ।

কুমিল্লার যখন প্রয়োজন একটি মারমুখী ইনিংস, তখন কেউই সেই চাহিদা পূর্ণ করতে পারেননি। আফগানিস্তানের আসহার জাইদির ওপর ছিল সেই দায়িত্ব, স্বদেশি নবীকে ক্রস ব্যাটে খেলে তিনি দেখেন ভেঙে গেছে উইকেট। ৮ বলে ২ রান করতে পেরেছিলেন আফগান হার্ডহিটার এই ব্যাটসম্যান।

ব্যাট হাতে ব্যর্থ হন অধিনায়ক মাশরাফিও। ইংলিশ বোলার টাইমাল মিলসের বলে ১ রানে বোল্ড হন  তিনি। ক্রিজে যেন থাকতেই চাননি কুমিল্লার ব্যাটসম্যানরা, তাসকিনকে প্রথম বলেই ৪ মেরে পরের বলে বিদায় নেন পাকিস্তানি ইমাদ ওয়াসিম।

শেষ ৫ ওভারে কুমিল্লার প্রয়োজন ছিল ৬৪ রান। প্রথমবার বিপিএল খেলা বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসেন শান্ত ধরে রেখেছিলেন এক প্রান্ত, কিন্তু অন্য প্রান্তে পাননি কোনও সঙ্গী। ৪৪ বলে ৬টি চারে ৫৪ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি।

এর আগে রান আউটে বিপর্যস্ত চিটাগং ভাইকিংস টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ২০ ওভার শেষ করে ৩ উইকেটে ১৬১ রানে।

মারমুখী মেজাজে ছিলেন তামিম ইকবাল। ৩৮ বলে দুটি ছক্কা ও ছয়টি চারে ৫৪ রান করে তিনি রান আউট হন। আউটের জন্য অবশ্য তিনিই দায়ী, কারণ অন্য প্রান্তে এনামুল হক বিজয় আগে থেকেই হাত তুলে রেখেছিলেন যে রানের দরকার নেই, কিন্তু তামিম সেটি লক্ষ্য করেননি। লিটন দাসের থ্রো থামায় তামিমের ইনিংস।

এরপর নিজেই আবার রান আউটের শিকার হন বিজয়। মিডউইকেটে পুশ করে তিনি আর বোলিং প্রান্তে পৌঁছাতে পারেননি। মারলন স্যামুয়েলস ভেঙে দেন উইকেট। ১৮ বলে দুই চারে ২২ রান ছিল এনামুলের সংগ্রহ।

এর আগে ডোয়াইন স্মিথ ৯ রানে বিদায় নিলে দৃঢ় সূচনাটা পায়নি ভাইকিংস। তামিম ও বিজয় বিদায় নেওয়ার পর হাল ধরেন পাকিস্তানি শোয়েব মালিক, সঙ্গে পান জহুরুল ইসলামকে। মালিক অপরাজিত ছিলেন ২৮ বলে ৪২ রানে, আর জহুরুল ২১ বলে খেলেছেন হার না মানা ২৯ রানের ইনিংস।

কৌশলের সঙ্গে বোলারদের ব্যবহার করেছেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। ওপেন করিয়েছেন স্পিনার ইমাদ ওয়সিমকে দিয়ে। বাঁহাতি স্পিনার আসার জাইদি ও অভিজ্ঞ মোহাম্মদ শরিফকে ছোট ছোট স্পেলে ব্যবহার করে ভাইকিংসকে সেট হতে দেয়নি তার দল।