২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

সাদিক আব্দুল্লাহর নাম ভাঙিয়ে সাগরদীতে দুই ভাইয়ের ত্রাস

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০১:২৫ অপরাহ্ণ, ০৯ নভেম্বর ২০১৭

বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দল্লাহর নাম ভাঙিয়ে দীর্ঘদিন যাবত এলাকায় ত্রাস চালিয়ে আসছিলেন ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা শাহাবুদ্দিন সিকদার ও তার ভাই কুখ্যাত সন্ত্রাসী মহিউদ্দিন সিকদারর। এই দুই ভাইয়ের যন্ত্রণায় রীতিমত ওষ্ঠাগত ছিলেন সাগরদী বাজার ও সিকদার এলাকার বাসিন্দারা। সাধারণ মানুষের কাছ থেকে চাঁদা উত্তেলনসহ তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক অভিযোগ। কিন্তু ক্ষমতার বলে তারা কাউকে ‘থোরাও কেয়ার’ করছিলেন না।

ঘটনাচক্রে কোন ব্যক্তি বিশেষ তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হয়ে উঠলেও তাদের সন্ত্রাসের কাছে শেষতক হার মেনেছেন। এক্ষেত্রে তারা সর্বদাই বরিশাল মহানগর আ’লীগ নেতা সাদিকের নামটি ব্যবহার করেছেন। নেতা সাদিকের এই বিষয়টি অগচরে থাকায় পর্যায়ক্রমে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন ১৩ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক শাহাবুদ্দিন সিকদার ও তার ভাই মহিউদ্দিন সিকদার। কিন্তু বিস্ময়কর বিষয় হচ্ছে- পুলিশ তাদের এই অভিযোগ সম্পর্কে সুনিশ্চিত হয়ে বুধবার কুখ্যাত সন্ত্রাসী মহিউদ্দিন সিকদারকে গ্রেফতার করলেও রহস্যজনক কারণে আইনের চিপাগলি দিয়ে বের হয়ে গেছেন।

বুধবার দুপুরে শহরের জিলা স্কুল মোড় থেকে তাকে গ্রেফতার করেছিলেন কোতয়ালি মডেল থানার এসআই সমিরণ মন্ডল। ওই সময় এই পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন- গ্রেফতার মহিউদ্দিন আলেকান্দা সিকদারপাড়া এলাকার লোকমান সিকদারের ছেলে। তার বিরুদ্ধে ওই এলাকায় চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডসহ ১০টির বেশি অভিযোগ রয়েছে। এমনকি তার ভাই স্থানীয় যুবলীগ নেতা শাহাবুদ্দিন সিকদারকে অভিযোগের তালিকায় রেখেছিলেন।

পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল- তারা দুই ভাই ওই এলাকায় বেপরোয়া সন্ত্রাসে লিপ্ত। অবশ্য এই বিষয়টির ওপরে বরিশাল মেট্রোপলিটন কোতয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) আতাউর রহমানও জোর দিয়ে বলেছিলেন- সন্ত্রাসী মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডসহ ৮টি মামলা রয়েছে। ওই মামলার আসামি হিসেবে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এছাড়া আগেও একাধিকবার গ্রেফতার হয়েছিল মহিউদ্দিন সেই বিষয়টিও অবহিত করে বলেছিলেন আদালত থেকে জামিনে মুক্ত হয়ে ফের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন তিনি। কিন্তু এই পুলিশ কর্মকর্তাই ঘণ্টা পাঁচেক পরে এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন- এই মূর্তিমান সন্ত্রাসের অনায়াসে কী ভাবে মুক্তি পেলেন। অবশ্য সেই ঘটনা শুনলে হয়তো বা অনেকই হকচকিয়ে যাবেন। কার পুলিশ প্রথমে বলেছিল তার বিরুদ্ধে অন্তত ৮ টি মামলা রয়েছে।

আর সেই মামলায়ই তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হচ্ছে। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে জানিয়েছে- বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাকে ২ হাজার টাকা জরিমানা করে মুক্তি দিয়েছেন। তার অপরাধ হচ্ছে নিষেধাজ্ঞা থাকার পরেও ইলিশ শিকারের। এক্ষেত্রে প্রশ্ন হচ্ছে- যদিও অপরাধ এত লঘু হয়ে থাকে তাহলে তাহলে গ্রেপ্তারের পরে পুলিশের বুলি আওড়ানোর মানে কী।

পুলিশের পক্ষ থেকে এমন প্রশ্নের কোন উত্তর না আসলেও ক্ষমতাসীন মহল থেকে প্রভাবিত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। বিশেষ ওই মহল গ্রেপ্তার মহিউদ্দিনকে পুলিশের খাচা থেকে ছাড়িয়ে নিতে জোর তদবির রেখেছিল। যে কারণে বিষয়টি আর বেশি দূর পর্যন্ত যায়নি, অর্থের বিনিময়ে মহিউদ্দিন বেড়িয়ে গেছেন পুলিশের ওই খাচা থেকে।

তবে এ বিষয়ে এসআই সমিরণ মন্ডল কোন মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তাছাড়া এই দুই ভায়ের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের বক্তাব্য পাওয়া যায়নি।’’

9 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন