জঙ্গি কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে বন্ধ করে দেওয়া লেকহেড গ্রামার স্কুলটিকে খুলে দিতে আদালতের আদেশ অমান্য করে রাষ্ট্রীয় নথি পাচার করেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুই কর্মকর্তা-কর্মচারী। আর এ কাজের জন্য তারা নিয়েছিল মোটা অঙ্কের ঘুষ। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুই কর্মচারী ও লেকহেড স্কুলের এক পরিচালকের বিরুদ্ধে করা মামলার এজাহারে এ তথ্য রয়েছে।
এজাহারে বলা হয়েছে- শিক্ষামন্ত্রীর পিও ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার বাসিন্দা আসামি মো. মোতালেব হোসেন ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উচ্চমান সহকারী নাসির উদ্দিন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে কর্মরত থেকে আসামি খালেদ হাসান মতিনের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের উৎকোচের বিনিময়ে জঙ্গি কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে বন্ধ হওয়া লেকহেড গ্রামার স্কুলটিকে আদালতের আদেশের শর্ত ভঙ্গ করে দ্রুত খুলে দেওয়ার প্রক্রিয়ায় সহায়তা করতে এবং রাষ্ট্রীয় গোপন নথিপত্রে আসামি লেকহেড গ্রামার স্কুলের এমডি খালেদ হাসান মতিনের কাছে বেআইনিভাবে হস্তান্তর করে।
মামলার বিবরণীতে আরও বলা আছে- উৎকোচের পাওনা টাকার অবশিষ্ট ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা বনানী এলাকায় লেনদেন হবে জানতে পেরে ধানমন্ডি জোনাল টিমের টিম লিডার সহকারী পুলিশ কমিশনার জনাব মো.রবিউল আলমের নেতৃত্বে ২২ জানুয়ারি ডিবি অফিস থেকে রওনা হয়ে বিকেল ৪টায় বনানী ডি ব্লকের রোড নম্বর- ১৩/১৫ এর ৩৯ নম্বর হাউসের সামনে (আসামি এমডি খালেদ হাসান মতিনের অফিসের সামনে) রাস্তায় ওঁৎ পেতে থাকে। বিকেল অনুমান ৫টায় এক নম্বর আসামি মো. নাসির উদ্দিন অপর আসামি এমডি খালেদ হাসান মতিনের ওই অফিস হতে উৎকোচের টাকা গ্রহণ করে বের হয়। এ সময় তাকে রাস্তায় আটক করে উৎকোচের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে বিষয়টি নাসির স্বীকার করে।
শিক্ষামন্ত্রী পিও মোতালেব হোসেন, মন্ত্রণালয়ের গ্রহণ ও বিতরণ শাখার উচ্চমান সহকারী নাসিরউদ্দিন এবং লেকহেড গ্রামার স্কুলের পরিচালক খালেক হোসেন মতিনকে রোববার (২১ জানুয়ারি) সন্ধ্যার পর ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) আটক করে।
গুলশান ও বছিলা এলাকা থেকে তাদের আটকের পর গতকাল সোমবার ২২ তারিখ তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়।
লেকহেড স্কুলটি খুলে দিতে ওই স্কুলটির এমডির সঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উচ্চমান সহকারী নাসির উদ্দিন ও ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মোতালেব হোসেন গত ১৬ ডিসেম্বর ৪ লাখ ৩০ হাজার টাকার একটি গোপন চুক্তি করেন। চুক্তি অনুযায়ী ১৮ ডিসেম্বর নাসির উদ্দিন খালেক হোসেন মতিনের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা নেয়।
২৫ ডিসেম্বর আরও ৫০ হাজার এবং সর্বশেষ ১১ জানুয়ারি ২ লাখ টাকা নেয়। গত ২১ জানুয়ারি অবশিষ্ট ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা আনতে গিয়ে বনানীতে ডিবি পুলিশের পাতা জালে ধরা পড়ে তারা।’
শিরোনামOther