৩রা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার

তসলিমা নাসরিনের ক্লাসিক মাসাজ পছন্দ

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১২:০২ অপরাহ্ণ, ২১ মার্চ ২০১৬

শরীর নিয়মিত মাসাজ করান বিশিষ্ট লেখিকা -প্রবন্ধকার তসলিমা নাসরিন। তার পছন্দ সুইডিশ ক্লাসিক মাসাজ। আজ সোমবার নিজের ফেসবুকে মাসাজ করার ছবি পোষ্ট করেছেন তিনি। নিচে লিখেছন সুইডিশ ক্লাসিক মাসাজ সবচেয়ে ভালো। এত আরাম, আমি একবার ঘুমিয়েই পড়েছিলাম। ওরা মুখে গোলাপের সুগন্ধ ছিটিয়ে জাগিয়েছিল আমাকে।

তসলিমা নাসরিনের মাসাজের ছবি পোষ্ট করার পর এ নিয়ে নানান জনে নানান মন্তব্য করেছেন। কেউ কেউ সমালোচনা করেছেন ছবি। তন্ময় কুমার হীরা তার মন্তব্যে লিখেছেন একটু ভিন্ন মতঃ একান্তই ব্যাক্তিগত মতামত। ভালোবাসার সম্পর্কে আবদ্ধ নই এমন কারো মাধ্যমে নিজের শরীরের আরাম করিয়ে নেয়া আমার কাছে অশ্লীল লাগে এবং একই সাথে নিজেকে বড় অপরাধী মনে হয়। সেলুনে অনেক ব্যাক্তিকেই দেখি সেলুনওয়ালাকে দিয়ে নিজের চুল মাথা গাল বানিয়ে নিচ্ছে। কী অশ্লীল! একটা মানুষ যার সাথে আমার ভালোবাসার সম্পর্ক নেই সে আমার শরীর টেপা টিপি করবে- ভাবতেই গা ঘিনঘিন করে। তাই ওইসব ব্যাক্তির এই আচরণকে আমি ঘৃণার চোখে দেখি। কেবল তার কাছ থেকেই আমি আমার শরীরের ম্যাসাজ করা প্রত্যাশা করি যার শরীরে আমিও ম্যাসাজ করি। যেখানে একদম সম্ভব হয়না সেটা ভিন্ন ব্যাপার।

 

যেমন আমি আজ পর্যন্ত সেলুনে সেভ করিনি কেননা যা আমি পারি তা অন্যকে দিয়ে করানো অন্যকে দাস আর নিজেকে প্রভু মনে করা ছাড়া আর কিছুই না। যেহেতু চুল আমি নিজে কাটতে পারিনা তাই আমি সেলুনে যাই। আবার সেই ব্যাক্তি আমার দাঁড়ি সেভ করে দিলে রাজি আছি যার দাঁড়ি আমি সেভ করে দেই বা তার ওই রূপ কাজ আমি করে দেই।

তন্ময় আরো লেখেন শরীর ম্যাসাজ করা কতোটা জরুরী আমি জানিনা। তবে হয়তো শরীর, শরীরের আভ্যন্তরীণ গঠন, রোগের উপস্থিতি অনুপস্থিতির ওপর ভিত্তি করে হয়তো প্রয়োজন নির্ভর করে। হতে পারে তোমার জন্য, তোমার শরীরী সুস্থতার জন্য ওটা জরুরী, এবং তোমার সেরকম ভালোবাসার মানুষ নেই তাই বিশেষ প্রয়োজনে অর্থের বিনিময়ে ম্যাসাজের নিজের শরীরের কিছুটা প্রয়োজন মিটিয়েছ। তবে তার ছবিটা কতোাটা জরুরী ছিল আমি জানিনা।

 

বোধ হয় না দিলেই পারতা। তুমি নিশ্চয়ই ওনার শরীর ম্যাসাজ করে দাও না। কেবল উনিই তোমার শরীর ম্যাসাজ করে দেয়। মানে প্রভু-দাসের সম্পর্ক ছাড়া আর কি হতে পারে। সেই দাসী, হোক সে টাকার বিনিময়ে, অর্থের বিনিময়ে, যে তোমার শরীরের সেবা করছে তার সেই সময়ের ছবি আপলোড করাটা আমার কাছে অশ্লীল মনে হয়েছে। নগ্নতায় এমন কি যৌনতায় ও অশ্লীলতা নেই।

 

অশ্লীলতা সে বস্তু যা অন্যকে ছোট করে, অপমান করে, অসম্মান করে, অন্যের স্বাধীনতাকে খর্ব করে। উনি তো আমার কিংবা তোমার মতই একজন মানুষ। ধর, তুমি ওনার শরীর ম্যাসাজ করে দিলে এবং সেই ছবি উনি আপলোড করল তখন তোমার খারাপ লাগবে না? অর্থ দিলেই কি কাউকে মর্যাদা দেয়া হয়? তাহলে তো বলা যায় যৌনকর্মীকে টাকা দিয়ে শরীরের সুখ লাভ হালাল এবং যৌনকর্মীকে অমর্যাদা করা হয় না। কিন্তু যৌন কর্মীকে যত টাকাই দেয়া হোক না কেন তাকে মুল্য দেয়া হয় না।

taslima-2

আমার এই উদাহরনের অর্থ এই নয় যে ওনারা যৌন কর্মী। আমার উদাহরনের অর্থ হচ্ছে অর্থের বিনিময়ে নিজের শরীরের সুখের জন্য অন্য একটা মানুষকে ব্যাবহার তো খুব অশ্লীল। তাই নয় কি? তোমার এই পোস্ট ও কাজটি কেবল তখনই শ্লীল মনে হবে তুমি যদি আর একটা ছবি আপলোড করো যেতে তুমি ওনার শরীর ম্যাসাজ করে দিচ্ছে তাহলে, যদি তোমার শরীরের জরুরী প্রয়জন থাকে এবং একই সাথে তোমার এমন কোন ভালোবাসার মানুষ নেই যাকে তুমি এবং যে তোমাকে ম্যাসাজ করে দিতে পারে। সবশেষে বলছি, তোমার অধিকার ও স্বাধীনতা আছে অর্থের বিনিময়ে কাউকে দিয়ে নিজের শরীরের সুখ নেয়া। আমি সে স্বাধীনতার কথা বলছিনা। এবং তোমাকে আমি কোনভাবে অসম্মান করছিনা। তুমি লেখক। অনেক উঁচুমানের ব্যাক্তি। কিন্তু তুমিও মানুষ যেমন উনিও মানুষ। কিন্তু নিতান্ত প্রয়োজন না হলে অর্থের বিনিময়ে কাউকে দিয়ে নিজের শরীরের সুখ আদায় এটা এক প্রকার ধর্ষণ, যেমন ধর্ষণ করে পুরুষ পতিতালয়ের পতিতাদের।

 

যে পুরুষের যৌনতার খুব দরকার, শরীরী আবশ্যকতা, এবং সে যদি ব্যাক্তি জীবনে কোন নারী নানা কারনে ভালোবাসার মানুষ হিসেবে না পায়, তবে তার সে ভালোবাসার মানুষের অভাবে বিশেষ পরিশ্তিতি মকাবেলায় পতিতালয়ে জেতেও পারে কেননা তার শরীরী আবশ্যকতা পুরনে আর কোন পথ খোলা নেই। কিন্তু যার সুযোগ আছে, আজ পরিস্থিতি জরুরী নয়, সে যদি অর্থের বিনিময়ে কাউকে কিনে নেয় তবে কি তা হালাল হয়ে যায়? নাকি ধর্ষণ, অশ্লীলতা হয়?
আবার বলছি, আমার লেখায় যদি আঘাত পায়, যদি মনে করো আমি তোমাকে অশ্রদ্ধা করছি তবে ক্ষমা করে দিয়ো। আর যদি আমি ভুল দৃষ্টিভঙ্গি লালন করি তবে এক লাইনের হলেও একটা ব্যাখ্যা দিয়ো যদি সম্ভব হয়। তোমার অধিকার আছে সে বিষয়ে আমার কোন সন্দেহ নেই। আমাদের সমাজের মানুষ বিশেষ করে পুরুষ প্রায় পুরোপুরি বিকৃত জীবন যাপন করে সে বিশয়েও আমার কোন সন্দেহ নেই। তবে তোমার এ পোস্ট টি শ্লীল নাকি অশ্লীল- সে বিষয়ে আমার যথেষ্ঠ সন্দেহ আছে।

অনিয়ন রহমান মন্তব্য করেছেন অন্যের হাতের মাসাজ খারাপ লাগে না গো ম্যাম!!?? বিশেষ করে পুরুষের শক্ত হাতের মাসাজ আমি সবচাইতে পুলকবোধ করি….যাই হোক,কিছু গুণ তো ইশ্বর স্বত্তাভিত্তিকভাবে দিয়েই দিয়েছেন…

জবাবে তসলিমা লিখেছেনএই মাসাজের সঙ্গে যৌনতার কোনও সম্পর্ক নেই।

42 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন