জোর করে তুলে নিয়ে তরুণীকে বিয়ে ও নির্যাতন করেছিলেন বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিআইজি) মিজানুর রহমান। এই ঘটনায় তার বিরুদ্ধে গঠিত তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দিয়েছে।
ওই প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করেই ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আছাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
রাজধানীর পুলিশ স্টাফ কলেজে (পিএসসি) বৃহস্পতিবার পুলিশ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন- পুলিশ সদর দফতরে ডিআইজি মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে গঠিত কমিটি তাদের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
তিনি বলেন, কমিটির জমা দেয়া ওই প্রতিবেদন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হলে সেখানে উল্লেখিত সুপারিশগুলো পর্যালোচনার পরই ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জোর করে তুলে নিয়ে তরুণীকে বিয়ে ও নির্যাতনের অভিযোগে ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে গঠিত তদন্ত কমিটি গত সোমবার তাদের প্রতিবেদন জমা দেয়।
মঙ্গলবার পুলিশ সদর দফতরের একাধিক সূত্র পরিবর্তন ডটকমকে জানায়, সোমবার তদন্ত কমিটির সদস্যরা আইজিপি ড. মোহাম্মদ জাভেদ পাটোয়ারীর কাছে এই প্রতিবেদন জমা দেন।
সূত্র আরো জানায়, ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে সরকারি চাকরিতে দায়িত্বরত অবস্থায় অসদাচরণ করার অভিযোগ উল্লেখ করে তদন্ত কমিটি এই প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
তদন্ত কমিটির প্রধান পুলিশ সদর দফতরের অতিরিক্ত আইজিপি (অর্থ) মইনুর রহমান জানান, তারা গত সোমবার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। তবে প্রতিবেদনে কি বলা হয়েছে তা জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি।
মরিয়ম আক্তার ইকো নামের এক নারী ব্যাংক কর্মকর্তা সম্প্রতি গণমাধ্যমে সাক্ষাতকারে জানান, গত জুলাই মাসে তার বাসা থেকে তাকে কৌশলে তুলে নিয়ে গিয়েছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা মিজান। পরে বেইলি রোডে তার বাসায় নিয়ে তিন দিন আটকে রাখা হয়েছিল ওই তরুণীকে।
আটকে রাখার পর বগুড়া থেকে তার মাকে ১৭ জুলাই ডেকে আনা হয় এবং ৫০ লাখ টাকা কাবিননামায় ডিআইজি মিজানকে বিয়ে করতে বাধ্য করা হয়। পরে লালমাটিয়ার একটি ভাড়া বাড়িতে ওই তরুণীর সঙ্গে বসবাস করেছেন ডিআইজি মিজান।
নিজের ফেসবুকে স্ত্রী পরিচয় দিয়ে একটি ছবি শেয়ারের পর ওই তরুণীর ওপর ক্ষেপে যান মিজান। বাড়ি ভাঙচুরের একটি মামলায় তাকে গত ১২ ডিসেম্বর কারাগারে পাঠানো হয়। সেই মামলায় জামিন পাওয়ার পর মিথ্যা কাবিননামা তৈরির অভিযোগে আরেকটি মামলায় তাকে আটক দেখানো হয়। দুই মামলাতেই জামিনের পর ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ তোলেন ওই তরুণী।
পরে অভিযোগ তদন্তে পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশে অতিরিক্ত আইজিপি (অর্থ) মইনুর রহমান চৌধুরীকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়।
কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন- ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার শাহাবুদ্দিন কোরেশী এবং পুলিশ সদর দফতরের অতিরিক্ত ডিআইজি হাবিবুর রহমান।
শিরোনামOther