বরিশালের পদ্মা ভাসমান অয়েল ডিপো থেকে পানি মিশ্রিত জ্বালানি তেল সরবরাহের অভিযোগ পাওয়া গেছে। কর্তৃপক্ষ বরাবর এমন অভিযোগ অস্বীকার করে এলেও গতকাল সোমবার তাদের উপস্থিতিতেই ধরা পড়েছে জ্বালানি তেলে পানি মিশিয়ে বিক্রির ঘটনা। এক ট্যাংক লরি (৯ হাজার লিটার) ডিজেলের মধ্যেই পাওয়া গেছে ৬০ লিটার পানি।
বরিশাল শহরের রূপাতলী বটতলা এলাকার হাজী ফিলিং স্টেশনের স্বত্বাধিকারী হাজী মিরন বরিশালটাইমসকে বলেন, দুই বছর আগে তিনি ফিলিং স্টেশন স্থাপন করেন। শহরের কেডিসিতে পদ্মা ভাসমান অয়েল ডিপো থেকে তার স্টেশনসহ দক্ষিণাঞ্চলের ২৬টি ফিলিং স্টেশনে জ্বালানি তেল (ডিজেল ও কেরোসিন) সরবরাহ হয়। শুরু থেকেই তিনি জ্বালানি তেলে পানি দিয়ে মিশ্রণ, পরিমাপে কমসহ ভেজালের সন্দেহ করেন। এই বিষয়টি নিয়ে বহুবার পদ্মা কর্তৃপক্ষের সাথে বাদানুবাদ হয়েছে।
কিন্তু তারা কোন দায় স্বীকার না করে উল্টো ডিলারদের হয়রানি করেছে। গতকাল তিনি সরকারি চালান কেটে পদ্মা ভাসমান ডিপো থেকে এক ট্যাংক লরি (৯ হাজার লিটার) ডিজেল উত্তোলন করেন। দুপুরে ট্যাক লরি তার ফিলিং স্টেশনে প্রবেশের পর তার সন্দেহ হয় এবং তিনি পদ্মা অয়েল কোম্পানির ডিএসকে অবহিত করেন।
ডিপো ইনচার্জ তাৎক্ষণিক একজন প্রতিনিধি পাঠিয়ে দেন হাজী ফিলিং স্টেশনে। তার উপস্থিতিতে ট্যাংকলরি থেকে ডিজেল খালাস করার পর তলানীতে ৬০ লিটার পানি পাওয়া যায়। এভাবে ডিপো থেকে পানি মিশ্রিত জ্বালানি তেল সরবরাহ করায় ফিলিং স্টেশনের বদনাম এবং ব্যবসায়িক অনেক ক্ষতি হয় বলে অভিযোগ করেন হাজী মিরন।
বরিশাল ট্যাংক লরি শ্রমিক ইউনিয়নের সিনিয়র সহ-সভাপতি খন্দকার মাসুম বরিশালটাইমসকে জানান, ডিপো থেকে জ্বালানি তেল পরিমাপে কম দেয়ায় অনেক সময় ফিলিং স্টেশন মালিকরা ট্যাংক লরি চালককে চোর সন্দেহ করে। এতে তাদের বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। জ্বালানী তেলে ভেজাল এবং পরিমাপে কম দেয়ার ঘটনা সুষ্ঠু তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান।
ট্যাংক লরি চালকরা অভিযোগ করেন, প্রতিটি গাড়িতে ৫০ থেকে ৬০ লিটার করে পানি পাওয়া যায়। পরবর্তীতে ডিপোতে অভিযোগ নিয়ে গেলে তাদের ৫ থেকে ৭ লিটার তেল দিয়ে উল্টো হুমকি-ধমকি দিয়ে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
এ ব্যাপারে পদ্মা অয়েল কোম্পানির লিমিটেডের বরিশাল ভাসমান ডিপোর সুপারিনটেন্ডেন্ট. শামছুল হক বরিশালটাইমসকে বলেন, ভাসমান ডিপো, পাশ থেকে যখন কোনো বড় নৌযান যায় তখন ঢেউয়ের দোলায় সামান্য পানি ঢুকতে পারে। তবে এতো পানি থাকার কথা নয়। এ রকম কোনো ঘটনা ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে সমাধান করে দেয়া হয়। তিনি বলেন, জ্বালানি তেল লোড করার আগে এবং পরে ট্যাংক লরি পরীক্ষা করা হয়। কিন্তু তারপরও এত পানি পাওয়ার কথা নয়। যে সমস্যা হয়েছে, তা তাৎক্ষণিক সমাধান করে দেয়া হয়েছে।
বরিশাল পদ্মা ভাসমান অয়েল ডিপো থেকে দক্ষিণাঞ্চলের ১০ জেলায় প্রতিদিন ৬২.৫১ টাকা দরে এক থেকে দেড় লাখ লিটার ডিজেল এবং ৬৩.৫৬ টাকা দরে প্রায় ১০ হাজার লিটার কেরোসিন সরবরাহ করা হয়।’’
শিরোনামOther