
১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১১:৫০
জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫ চূড়ান্ত করার শেষ পর্যায়ে রয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এরই মধ্যে ৭ দফার ভিত্তিতে সনদের চূড়ান্ত খসড়া গত বৃহস্পতিবার রাতেই দলগুলোকে দেওয়া হয়েছে। এ সনদে স্বাক্ষর করবেন—প্রতিটি দলকে এমন দুজন নেতার নাম আজ শনিবারের মধ্যে ঐকমত্য কমিশনকে জানাতে বলা হয়েছে। তবে জুলাই সনদ ঘোষণা করার চেয়ে তা বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়েই বেশি সংকট দেখা দিয়েছে।
বিশেষ করে সংবিধান সম্পর্কিত বিষয়গুলোর বাস্তবায়ন নিয়ে মতবিরোধ ও জটিলতা রয়েই গেছে। এ ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকারের দুর্বলতাকে দায়ী করছে দলগুলো। জুলাই জাতীয় সনদের সংবিধান সম্পর্কিত সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে গত বৃহস্পতিবারও দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দিনব্যাপী আলোচনা হলেও তাতে জটিলতা কাটেনি। যদিও ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫-এর চূড়ান্ত ভাষ্যে সব মতের প্রতিফলন ঘটানো হয়েছে।
এর আগে বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে দফায় দফায় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা করেছে ঐকমত্য কমিশন। পরে আবারও একটি চূড়ান্ত সমন্বিত খসড়া দলগুলোকে দেওয়া হয়। এর পরে ২৯টি দল লিখিতভাবে তাদের মতামত কমিশনে পাঠায়। দলগুলোর পরামর্শের ভিত্তিতে কমিশন দুই দফায় বিশেষজ্ঞ প্যানেলের সঙ্গে বৈঠক করে বিস্তারিত আলোচনা করেছে। কিন্তু সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এখনো মতভিন্নতা রয়ে গেছে।
বিশেষ করে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)—এই তিন দল তিন ধরনের পদ্ধতির কথা বলেছে। সংবিধান সংক্রান্ত প্রস্তাবগুলো আগামী জাতীয় সংসদ গঠনের দুই বছরের মধ্যে বাস্তবায়নের পক্ষে বিএনপি। তবে আগামী নির্বাচনের আগেই জামায়াতে ইসলামী রাষ্ট্রপতির বিশেষ আদেশ বা গণভোটের মাধ্যমে এবং এনসিপি গণপরিষদ গঠনের মাধ্যমে সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন চায়। এ নিয়ে আগামী রোববার দলগুলোর সঙ্গে আবার আলোচনা হবে বলে কমিশন সূত্র জানিয়েছে।
দফায় দফায় আলোচনা শেষে সাত দফা অঙ্গীকারনামার ভিত্তিতে জুলাই জাতীয় সনদের খসড়া চূড়ান্ত করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এখন তাতে স্বাক্ষর করলে এই সনদ নিয়ে আদালতে কোনো প্রশ্ন তুলতে পারবে না রাজনৈতিক দলগুলো।
স্বাক্ষরের জন্য এই চূড়ান্ত খসড়া গত বৃহস্পতিবারই রাজনৈতিক দলগুলোকে পাঠানো হয়। কিছু ক্ষেত্রে ভিন্নমতসহ (নোট অব ডিসেন্ট) মোট ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাবে ঐকমত্য হওয়ার কথা বলা হয়েছে এ চূড়ান্ত খসড়ায়।
এ ছাড়া সনদের চূড়ান্ত খসড়ার পটভূমি এবং অঙ্গীকারনামায় বেশকিছু বিষয়ে ভাষা ও শব্দগত পরিবর্তন হয়েছে। নতুন বিষয়ও যুক্ত হয়েছে। বিশেষ করে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ৭০ সালের নির্বাচনসহ পরবর্তী বিভিন্ন ধারাবাহিক ঘটনাপ্রবাহ এবং হত্যাকাণ্ডের বিষয় স্থান পেয়েছে, যা আগে ছিল না। তবে সনদ বাস্তবায়নের আইনি বাধ্যবাধকতার যে সুপারিশ এসেছিল, চূড়ান্ত খসড়ায় তা নেই। এ ছাড়া কখন সনদ স্বাক্ষরিত হবে, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
যেসব বিকল্প পদ্ধতি আলোচনায়: জানা গেছে, কোন রাজনৈতিক দল কোন উপায়ে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন চায়, তা গত বৃহস্পতিবারের আলোচনার শুরুতে তুলে ধরে ঐকমত্য কমিশন। পাশাপাশি বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে কমিশন কী পরামর্শ পেয়েছে, সেগুলোও উপস্থাপন করা হয়।
সংবিধান সম্পর্কিত প্রস্তাব বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে লিখিতভাবে মোটাদাগে ছয়টি সুপারিশ পেয়েছে কমিশন। সেগুলো হলো—পূর্ণাঙ্গ সনদ বা এর কিছু অংশ নিয়ে গণভোট, রাষ্ট্রপতির নির্বাহী ক্ষমতার বলে বিশেষ সাংবিধানিক আদেশ বাস্তবায়ন, গণপরিষদ গঠনের মাধ্যমে বাস্তবায়ন, ত্রয়োদশ সংসদের মাধ্যমে বাস্তবায়ন, সংসদকে সংবিধান সংস্কার সভা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে সনদের বিষয়গুলো সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা এবং সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের কাছে এই মর্মে মতামত চাওয়া যে, অন্তর্বর্তী সরকার এই সনদ বাস্তবায়ন করতে পারবে কি না। ওই বৈঠকে ঐকমত্য কমিশন জানায়, জুলাই সনদে অন্তর্ভুক্ত প্রস্তাবগুলো (ভিন্নমতসহ) চারভাবে বাস্তবায়নের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এগুলো হচ্ছে অধ্যাদেশ, নির্বাহী আদেশ, গণভোট ও বিশেষ সাংবিধানিক আদেশ।
সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে দলগুলোর বক্তব্য: বিএনপিসহ কিছু দলের অভিমত হলো—সংবিধান সম্পর্কিত সংস্কার আগামী সংসদ ছাড়া বাস্তবায়নের কোনো আইনি পথ নেই। বিএনপির মতে, সাংবিধানিক আদেশ জারি বা গণভোটের মতো প্রস্তাবগুলো অগ্রহণযোগ্য। এখনই এই সনদ কার্যকর হলে দেশে দুটি সংবিধান চলমান থাকবে। এদিকে জামায়াতে ইসলামী, এনসিপিসহ বেশ কিছু দল চায় জুলাই সনদের একটি আইনি ভিত্তি এবং জাতীয় নির্বাচনের আগে এর বাস্তবায়ন। গত বৃহস্পতিবার দলগুলো তাদের পৃথক মতামত আবারও তুলে ধরে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে যে প্রস্তাবগুলো এসেছে, সাধারণভাবে এগুলো অগ্রহণযোগ্য। দেশে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা আছে। এই ধারাবাহিকতা না থাকলে অন্তর্বর্তী সরকারসহ সব অবৈধ হয়ে যাবে।
জামায়াত ও এনসিপির প্রস্তাবের বিপক্ষে যুক্তি তুলে ধরে তিনি বলেন, গণপরিষদ হয় নতুন সংবিধান প্রণয়নের জন্য কিংবা সংবিধানের মূল কাঠামো ও চরিত্র পরিবর্তন করার জন্য। কিন্তু এখন সংবিধান আছে। জিয়াউর রহমানের আমলে প্রোক্লেমেশন জারির মাধ্যমে সংবিধানে পরিবর্তন আনা হয়নি।
তখন সংবিধান স্থগিত ছিল। তাই রাষ্ট্র পরিচালনার স্বার্থে ‘প্রোক্লেমেশন’ (ঘোষণা) জারি করা হয়েছিল। এগুলোর বৈধতা দেওয়া হয়েছিল পরবর্তী সংসদে। প্রোক্লেমেশনের মাধ্যমে সংবিধান পরিবর্তনের এখতিয়ার কারও নেই। তা ছাড়া সনদ এখন বাস্তবায়ন করা হলে দুটি সংবিধান চলার মতো অবস্থা হবে। কোনো নাগরিক আদালতে চ্যালেঞ্জ করলে আদালত প্রশ্ন করবেন, সংবিধান কে পরিবর্তন করল, কীভাবে করল, এই এখতিয়ার কারও আছে?
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, তাদের পরামর্শ হলো, সব দল এখন এই অঙ্গীকারনামায় সই করবে। আগামী সংসদে সংস্কার প্রস্তাবগুলো গ্রহণ করার জন্য দলগুলো যার যার নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লেখ করবে। যারাই সংসদে যাবে, তারা এটার বাস্তবায়ন করবে।
জুলাই সনদকে লঙ্ঘন করে ভবিষ্যতে কোনো দলের রাজনীতি করার সুযোগ আছে বলে তিনি মনে করেন না। সনদ বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এর জবাব তারা দিতে পারবেন না বরং তারা অঙ্গীকার করতে পারবেন। আর এখন সনদ বাস্তবায়নের কোনো আইনগত ভিত্তি বের করা গেলে বিএনপি তাতে একমত হবে।
বৃহস্পতিবার কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, সংস্কার আগামী সংসদের হাতে ছেড়ে দিলে গণঅভ্যুত্থানের প্রতি অবিচার করা হবে। নামমাত্র সংস্কার হলে হবে না। এর আইনি ভিত্তি লাগবে। তার ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে।
গতকাল তিনি বলেন, বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়েই সংকট রয়ে গেছে। তবে হাতে এখনো যে সময় আছে আমরা পর্যালোচনা করছি। দেখা যাক কমিশন কী উদ্যোগ নেয়। কেননা, এখানে সরকারেরও দুর্বলতা আছে। তিনি বলেন, লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্ক অর্ডারের (এলএফও) ভিত্তিতে ১৯৭০ সালের নির্বাচন হয়েছে।
সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আমলে ১৯৭৭ সালেও বিশেষ আদেশ জারি করা হয়েছে, যেটার ভিত্তিতে গণভোট হয়েছে। বিশেষ আদেশের মাধ্যমে সংস্কার বাস্তবায়ন করা যেতে পারে। গণভোটের মাধ্যমেও হতে পারে। গণভোটের মাধ্যমে হলে সেটা টেকসই হবে।
যদি জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি না থাকে, তাহলে আমরা এতদিন এটা কী করলাম—সবকিছু অর্থহীন হয়ে যাবে, সবকিছু বিফলে যাবে। বিপ্লবটাই ধ্বংস হয়ে যাবে। বিপ্লবকে ধ্বংস করে পুরোনো ধারায় ফিরে গেলে রাষ্ট্র বিপদে পড়বে, নির্বাচন ঝুঁকিতে পড়বে।
এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, আমরা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন চাই। বৃহস্পতিবার ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় দলের অবস্থান জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সেদিন বলেছি, সংস্কার প্রস্তাবগুলোর টেকসই বাস্তবায়নের একমাত্র পথ নতুন সংবিধান। যদি পুরোনো সংবিধানই ঘষামাজা করা হয় এবং এটা বাস্তবায়নে পরবর্তী সরকারের মর্জির ওপর নির্ভর করতে হয়, তাহলে সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না।
বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম গতকাল বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে কোনো বাধা নেই। আইনগতভাবে এটা যেভাবে কার্যকর করা দরকার আমরা চাই সেভাবেই কার্যকর হোক। কোনোটা রাষ্ট্রপতির অর্ডিন্যান্স দ্বারা, কোনোটা জাতীয় সংসদের দ্বারা এবং এমনভাবে করতে হবে যাতে টেকসই এবং আইনসম্মত হয়। আমরা সেভাবেই চিন্তা করছি এবং সেভাবেই বাস্তবায়ন চাই।
আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার যুবায়ের আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, অধ্যাদেশের মাধ্যমে বাস্তবায়নের বিষয়টি বর্তমান সংবিধান কার্যকর থাকা অবস্থায় কঠিন ও সাংঘর্ষিক হবে। সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে।
গণভোটের মাধ্যমে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করলে এতে জনগণের ইচ্ছা ও মতামতের প্রতিফলন ঘটবে, যা জুলাই জাতীয় সনদের আইনি ভিত্তি প্রদানের সবচেয়ে বাস্তবসম্মত উপায়। পাশাপাশি গণপরিষদ গঠনের মাধ্যমেও এটি বাস্তবায়ন করা যেতে পারে।
তিনি আরও বলেন, পরবর্তী সাধারণ কোনো সংসদ জুলাই জাতীয় সনদের আইনি ভিত্তি দিতে পারবে না। সংবিধানের ভিত্তিমূল পরিবর্তনে আইনি বৈধতা দিতে হলে গণভোট অথবা গণপরিষদ বা সংস্কার পরিষদ গঠনের মাধ্যমে বৈধতা দিতে হবে।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ও রাজনীতি বিশ্লেষক ড. মো. সাহাবুল হক বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন হবে বাংলাদেশের জন্য একটি যুগান্তকারী রাজনৈতিক মাইলফলক, যদি এটিকে রাজনৈতিক দলগুলোর সুবিধাবাদী সমঝোতার বাইরে নিয়ে গিয়ে আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর মধ্যে আবদ্ধ করা যায়। অন্যথায় এটি শুধু ইতিহাসের আরেকটি ব্যর্থ দলিলে পরিণত হবে।
তাই এ মুহূর্তে দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বের ওপর দায়িত্ব পড়েছে কথায় নয়, কাজে দেখানোর, যাতে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক যাত্রা আরেক ধাপ এগিয়ে যেতে পারে। সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোকেই কার্যকরের উপায় বের করতে হবে।
জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫ চূড়ান্ত করার শেষ পর্যায়ে রয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এরই মধ্যে ৭ দফার ভিত্তিতে সনদের চূড়ান্ত খসড়া গত বৃহস্পতিবার রাতেই দলগুলোকে দেওয়া হয়েছে। এ সনদে স্বাক্ষর করবেন—প্রতিটি দলকে এমন দুজন নেতার নাম আজ শনিবারের মধ্যে ঐকমত্য কমিশনকে জানাতে বলা হয়েছে। তবে জুলাই সনদ ঘোষণা করার চেয়ে তা বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়েই বেশি সংকট দেখা দিয়েছে।
বিশেষ করে সংবিধান সম্পর্কিত বিষয়গুলোর বাস্তবায়ন নিয়ে মতবিরোধ ও জটিলতা রয়েই গেছে। এ ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকারের দুর্বলতাকে দায়ী করছে দলগুলো। জুলাই জাতীয় সনদের সংবিধান সম্পর্কিত সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে গত বৃহস্পতিবারও দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দিনব্যাপী আলোচনা হলেও তাতে জটিলতা কাটেনি। যদিও ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫-এর চূড়ান্ত ভাষ্যে সব মতের প্রতিফলন ঘটানো হয়েছে।
এর আগে বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে দফায় দফায় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা করেছে ঐকমত্য কমিশন। পরে আবারও একটি চূড়ান্ত সমন্বিত খসড়া দলগুলোকে দেওয়া হয়। এর পরে ২৯টি দল লিখিতভাবে তাদের মতামত কমিশনে পাঠায়। দলগুলোর পরামর্শের ভিত্তিতে কমিশন দুই দফায় বিশেষজ্ঞ প্যানেলের সঙ্গে বৈঠক করে বিস্তারিত আলোচনা করেছে। কিন্তু সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এখনো মতভিন্নতা রয়ে গেছে।
বিশেষ করে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)—এই তিন দল তিন ধরনের পদ্ধতির কথা বলেছে। সংবিধান সংক্রান্ত প্রস্তাবগুলো আগামী জাতীয় সংসদ গঠনের দুই বছরের মধ্যে বাস্তবায়নের পক্ষে বিএনপি। তবে আগামী নির্বাচনের আগেই জামায়াতে ইসলামী রাষ্ট্রপতির বিশেষ আদেশ বা গণভোটের মাধ্যমে এবং এনসিপি গণপরিষদ গঠনের মাধ্যমে সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন চায়। এ নিয়ে আগামী রোববার দলগুলোর সঙ্গে আবার আলোচনা হবে বলে কমিশন সূত্র জানিয়েছে।
দফায় দফায় আলোচনা শেষে সাত দফা অঙ্গীকারনামার ভিত্তিতে জুলাই জাতীয় সনদের খসড়া চূড়ান্ত করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এখন তাতে স্বাক্ষর করলে এই সনদ নিয়ে আদালতে কোনো প্রশ্ন তুলতে পারবে না রাজনৈতিক দলগুলো।
স্বাক্ষরের জন্য এই চূড়ান্ত খসড়া গত বৃহস্পতিবারই রাজনৈতিক দলগুলোকে পাঠানো হয়। কিছু ক্ষেত্রে ভিন্নমতসহ (নোট অব ডিসেন্ট) মোট ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাবে ঐকমত্য হওয়ার কথা বলা হয়েছে এ চূড়ান্ত খসড়ায়।
এ ছাড়া সনদের চূড়ান্ত খসড়ার পটভূমি এবং অঙ্গীকারনামায় বেশকিছু বিষয়ে ভাষা ও শব্দগত পরিবর্তন হয়েছে। নতুন বিষয়ও যুক্ত হয়েছে। বিশেষ করে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ৭০ সালের নির্বাচনসহ পরবর্তী বিভিন্ন ধারাবাহিক ঘটনাপ্রবাহ এবং হত্যাকাণ্ডের বিষয় স্থান পেয়েছে, যা আগে ছিল না। তবে সনদ বাস্তবায়নের আইনি বাধ্যবাধকতার যে সুপারিশ এসেছিল, চূড়ান্ত খসড়ায় তা নেই। এ ছাড়া কখন সনদ স্বাক্ষরিত হবে, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
যেসব বিকল্প পদ্ধতি আলোচনায়: জানা গেছে, কোন রাজনৈতিক দল কোন উপায়ে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন চায়, তা গত বৃহস্পতিবারের আলোচনার শুরুতে তুলে ধরে ঐকমত্য কমিশন। পাশাপাশি বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে কমিশন কী পরামর্শ পেয়েছে, সেগুলোও উপস্থাপন করা হয়।
সংবিধান সম্পর্কিত প্রস্তাব বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে লিখিতভাবে মোটাদাগে ছয়টি সুপারিশ পেয়েছে কমিশন। সেগুলো হলো—পূর্ণাঙ্গ সনদ বা এর কিছু অংশ নিয়ে গণভোট, রাষ্ট্রপতির নির্বাহী ক্ষমতার বলে বিশেষ সাংবিধানিক আদেশ বাস্তবায়ন, গণপরিষদ গঠনের মাধ্যমে বাস্তবায়ন, ত্রয়োদশ সংসদের মাধ্যমে বাস্তবায়ন, সংসদকে সংবিধান সংস্কার সভা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে সনদের বিষয়গুলো সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা এবং সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের কাছে এই মর্মে মতামত চাওয়া যে, অন্তর্বর্তী সরকার এই সনদ বাস্তবায়ন করতে পারবে কি না। ওই বৈঠকে ঐকমত্য কমিশন জানায়, জুলাই সনদে অন্তর্ভুক্ত প্রস্তাবগুলো (ভিন্নমতসহ) চারভাবে বাস্তবায়নের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এগুলো হচ্ছে অধ্যাদেশ, নির্বাহী আদেশ, গণভোট ও বিশেষ সাংবিধানিক আদেশ।
সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে দলগুলোর বক্তব্য: বিএনপিসহ কিছু দলের অভিমত হলো—সংবিধান সম্পর্কিত সংস্কার আগামী সংসদ ছাড়া বাস্তবায়নের কোনো আইনি পথ নেই। বিএনপির মতে, সাংবিধানিক আদেশ জারি বা গণভোটের মতো প্রস্তাবগুলো অগ্রহণযোগ্য। এখনই এই সনদ কার্যকর হলে দেশে দুটি সংবিধান চলমান থাকবে। এদিকে জামায়াতে ইসলামী, এনসিপিসহ বেশ কিছু দল চায় জুলাই সনদের একটি আইনি ভিত্তি এবং জাতীয় নির্বাচনের আগে এর বাস্তবায়ন। গত বৃহস্পতিবার দলগুলো তাদের পৃথক মতামত আবারও তুলে ধরে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে যে প্রস্তাবগুলো এসেছে, সাধারণভাবে এগুলো অগ্রহণযোগ্য। দেশে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা আছে। এই ধারাবাহিকতা না থাকলে অন্তর্বর্তী সরকারসহ সব অবৈধ হয়ে যাবে।
জামায়াত ও এনসিপির প্রস্তাবের বিপক্ষে যুক্তি তুলে ধরে তিনি বলেন, গণপরিষদ হয় নতুন সংবিধান প্রণয়নের জন্য কিংবা সংবিধানের মূল কাঠামো ও চরিত্র পরিবর্তন করার জন্য। কিন্তু এখন সংবিধান আছে। জিয়াউর রহমানের আমলে প্রোক্লেমেশন জারির মাধ্যমে সংবিধানে পরিবর্তন আনা হয়নি।
তখন সংবিধান স্থগিত ছিল। তাই রাষ্ট্র পরিচালনার স্বার্থে ‘প্রোক্লেমেশন’ (ঘোষণা) জারি করা হয়েছিল। এগুলোর বৈধতা দেওয়া হয়েছিল পরবর্তী সংসদে। প্রোক্লেমেশনের মাধ্যমে সংবিধান পরিবর্তনের এখতিয়ার কারও নেই। তা ছাড়া সনদ এখন বাস্তবায়ন করা হলে দুটি সংবিধান চলার মতো অবস্থা হবে। কোনো নাগরিক আদালতে চ্যালেঞ্জ করলে আদালত প্রশ্ন করবেন, সংবিধান কে পরিবর্তন করল, কীভাবে করল, এই এখতিয়ার কারও আছে?
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, তাদের পরামর্শ হলো, সব দল এখন এই অঙ্গীকারনামায় সই করবে। আগামী সংসদে সংস্কার প্রস্তাবগুলো গ্রহণ করার জন্য দলগুলো যার যার নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লেখ করবে। যারাই সংসদে যাবে, তারা এটার বাস্তবায়ন করবে।
জুলাই সনদকে লঙ্ঘন করে ভবিষ্যতে কোনো দলের রাজনীতি করার সুযোগ আছে বলে তিনি মনে করেন না। সনদ বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এর জবাব তারা দিতে পারবেন না বরং তারা অঙ্গীকার করতে পারবেন। আর এখন সনদ বাস্তবায়নের কোনো আইনগত ভিত্তি বের করা গেলে বিএনপি তাতে একমত হবে।
বৃহস্পতিবার কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, সংস্কার আগামী সংসদের হাতে ছেড়ে দিলে গণঅভ্যুত্থানের প্রতি অবিচার করা হবে। নামমাত্র সংস্কার হলে হবে না। এর আইনি ভিত্তি লাগবে। তার ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে।
গতকাল তিনি বলেন, বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়েই সংকট রয়ে গেছে। তবে হাতে এখনো যে সময় আছে আমরা পর্যালোচনা করছি। দেখা যাক কমিশন কী উদ্যোগ নেয়। কেননা, এখানে সরকারেরও দুর্বলতা আছে। তিনি বলেন, লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্ক অর্ডারের (এলএফও) ভিত্তিতে ১৯৭০ সালের নির্বাচন হয়েছে।
সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আমলে ১৯৭৭ সালেও বিশেষ আদেশ জারি করা হয়েছে, যেটার ভিত্তিতে গণভোট হয়েছে। বিশেষ আদেশের মাধ্যমে সংস্কার বাস্তবায়ন করা যেতে পারে। গণভোটের মাধ্যমেও হতে পারে। গণভোটের মাধ্যমে হলে সেটা টেকসই হবে।
যদি জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি না থাকে, তাহলে আমরা এতদিন এটা কী করলাম—সবকিছু অর্থহীন হয়ে যাবে, সবকিছু বিফলে যাবে। বিপ্লবটাই ধ্বংস হয়ে যাবে। বিপ্লবকে ধ্বংস করে পুরোনো ধারায় ফিরে গেলে রাষ্ট্র বিপদে পড়বে, নির্বাচন ঝুঁকিতে পড়বে।
এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, আমরা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন চাই। বৃহস্পতিবার ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় দলের অবস্থান জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সেদিন বলেছি, সংস্কার প্রস্তাবগুলোর টেকসই বাস্তবায়নের একমাত্র পথ নতুন সংবিধান। যদি পুরোনো সংবিধানই ঘষামাজা করা হয় এবং এটা বাস্তবায়নে পরবর্তী সরকারের মর্জির ওপর নির্ভর করতে হয়, তাহলে সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না।
বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম গতকাল বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে কোনো বাধা নেই। আইনগতভাবে এটা যেভাবে কার্যকর করা দরকার আমরা চাই সেভাবেই কার্যকর হোক। কোনোটা রাষ্ট্রপতির অর্ডিন্যান্স দ্বারা, কোনোটা জাতীয় সংসদের দ্বারা এবং এমনভাবে করতে হবে যাতে টেকসই এবং আইনসম্মত হয়। আমরা সেভাবেই চিন্তা করছি এবং সেভাবেই বাস্তবায়ন চাই।
আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার যুবায়ের আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, অধ্যাদেশের মাধ্যমে বাস্তবায়নের বিষয়টি বর্তমান সংবিধান কার্যকর থাকা অবস্থায় কঠিন ও সাংঘর্ষিক হবে। সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে।
গণভোটের মাধ্যমে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করলে এতে জনগণের ইচ্ছা ও মতামতের প্রতিফলন ঘটবে, যা জুলাই জাতীয় সনদের আইনি ভিত্তি প্রদানের সবচেয়ে বাস্তবসম্মত উপায়। পাশাপাশি গণপরিষদ গঠনের মাধ্যমেও এটি বাস্তবায়ন করা যেতে পারে।
তিনি আরও বলেন, পরবর্তী সাধারণ কোনো সংসদ জুলাই জাতীয় সনদের আইনি ভিত্তি দিতে পারবে না। সংবিধানের ভিত্তিমূল পরিবর্তনে আইনি বৈধতা দিতে হলে গণভোট অথবা গণপরিষদ বা সংস্কার পরিষদ গঠনের মাধ্যমে বৈধতা দিতে হবে।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ও রাজনীতি বিশ্লেষক ড. মো. সাহাবুল হক বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন হবে বাংলাদেশের জন্য একটি যুগান্তকারী রাজনৈতিক মাইলফলক, যদি এটিকে রাজনৈতিক দলগুলোর সুবিধাবাদী সমঝোতার বাইরে নিয়ে গিয়ে আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর মধ্যে আবদ্ধ করা যায়। অন্যথায় এটি শুধু ইতিহাসের আরেকটি ব্যর্থ দলিলে পরিণত হবে।
তাই এ মুহূর্তে দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বের ওপর দায়িত্ব পড়েছে কথায় নয়, কাজে দেখানোর, যাতে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক যাত্রা আরেক ধাপ এগিয়ে যেতে পারে। সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোকেই কার্যকরের উপায় বের করতে হবে।

০৯ নভেম্বর, ২০২৫ ১৯:৩৭
বিভিন্ন সময় দল থেকে বহিষ্কার হওয়া ও স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করা ৪০ নেতার পদ ফিরিয়ে দিয়েছে বিএনপি। রবিবার বিকেলে বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী স্বাক্ষরিত পৃথক দুটি বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রথম বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়ে, বিগত সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় যথাক্রমে ১ নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা-সৈয়দ তৌফিকুল হাদী ও মুফতি কমর উদ্দীন কামু; ৩ নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা-মিজানুর রহমান মিঠু; ৫ নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা-মো. কামাল মিয়া, খালেদ আকবর চৌধুরী, আমিনুর রহমান খোকন ও শাহেদ সিরাজ; ৬ নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা-ফরহাদ চৌধুরী শামীম; ১০ নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা-মো. সাঈদুর রহমান জুবের; ১১ নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা-আব্দুর রহিম মতছির; ১৪ নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম মুনিম; ১৫ নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা-মো. মুজিবুর রহমান; ১৮নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা- এ বি এম জিল্লুর রহমান উজ্জ্বল ও সালমান চৌধুরী শাম্মী; ২২নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা বদরুল আজাদ রানা; ২৩নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা মামুনুর রহমান মামুন; ২৪নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা হুমায়ুন কবির সুহিন; ২৫নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা অ্যাড. রুকশানা বেগম শাহনাজ; ২৬নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা-সেলিম আহমদ রনি; ২৮নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা-আলী আব্বাস; ২৯নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা-গোলাম মোস্তফা কামাল ও সাহেদ খান স্বপন; ৩০নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা-জাবেদ আমিন সেলিম, রাজু মিয়া ও সানর মিয়া; ৩১নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা-মো. আব্দুল মুকিত; ৩২নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা- অ্যাড. হেদায়েত হোসেন তানভীর ও দুলাল আহমদ; ৩৩নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা-গউছ উদ্দিন পাখী ও দেলওয়ার হোসেন নাদিম; ৩৭নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা দিলওয়ার হোসেন জয়; ৩৮নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা উসমান হারুন পনির; ৩৯নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা-আলতাফ হোসেন সুমন; ৪০নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা আব্দুল হাছিব; ৪২নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা সুমন আহমদ সিকদার; ২২,২৩,২৪নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সালেহা কবির শেলী; ১০,১১,১২নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের রুহেনা বেগম মুক্তা ও অ্যাড. জহুরা জেসমিন; ১৬,১৭,১৮ নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কামরুন নাহার পিন্নিসহ ২নং ওয়ার্ডের নেহার রঞ্জন পুরকায়স্থকে দলের প্রাথমিক সদস্যসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে বহিস্কার করা হয়েছিল। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দলীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক আজ তাদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে প্রাথমিক সদস্য পদ ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আরেক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ইতিপূর্বে পঞ্চগড় জেলাধীন তেঁতুলিয়া উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সুলতানা রাজিয়া ব্যক্তিগত কারণে স্বেচ্ছায় দল থেকে অব্যাহতি নিয়েছিলেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দলে তার প্রাথমিক সদস্য পদ ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বিভিন্ন সময় দল থেকে বহিষ্কার হওয়া ও স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করা ৪০ নেতার পদ ফিরিয়ে দিয়েছে বিএনপি। রবিবার বিকেলে বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী স্বাক্ষরিত পৃথক দুটি বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রথম বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়ে, বিগত সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় যথাক্রমে ১ নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা-সৈয়দ তৌফিকুল হাদী ও মুফতি কমর উদ্দীন কামু; ৩ নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা-মিজানুর রহমান মিঠু; ৫ নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা-মো. কামাল মিয়া, খালেদ আকবর চৌধুরী, আমিনুর রহমান খোকন ও শাহেদ সিরাজ; ৬ নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা-ফরহাদ চৌধুরী শামীম; ১০ নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা-মো. সাঈদুর রহমান জুবের; ১১ নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা-আব্দুর রহিম মতছির; ১৪ নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম মুনিম; ১৫ নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা-মো. মুজিবুর রহমান; ১৮নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা- এ বি এম জিল্লুর রহমান উজ্জ্বল ও সালমান চৌধুরী শাম্মী; ২২নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা বদরুল আজাদ রানা; ২৩নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা মামুনুর রহমান মামুন; ২৪নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা হুমায়ুন কবির সুহিন; ২৫নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা অ্যাড. রুকশানা বেগম শাহনাজ; ২৬নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা-সেলিম আহমদ রনি; ২৮নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা-আলী আব্বাস; ২৯নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা-গোলাম মোস্তফা কামাল ও সাহেদ খান স্বপন; ৩০নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা-জাবেদ আমিন সেলিম, রাজু মিয়া ও সানর মিয়া; ৩১নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা-মো. আব্দুল মুকিত; ৩২নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা- অ্যাড. হেদায়েত হোসেন তানভীর ও দুলাল আহমদ; ৩৩নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা-গউছ উদ্দিন পাখী ও দেলওয়ার হোসেন নাদিম; ৩৭নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা দিলওয়ার হোসেন জয়; ৩৮নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা উসমান হারুন পনির; ৩৯নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা-আলতাফ হোসেন সুমন; ৪০নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা আব্দুল হাছিব; ৪২নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা সুমন আহমদ সিকদার; ২২,২৩,২৪নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সালেহা কবির শেলী; ১০,১১,১২নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের রুহেনা বেগম মুক্তা ও অ্যাড. জহুরা জেসমিন; ১৬,১৭,১৮ নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কামরুন নাহার পিন্নিসহ ২নং ওয়ার্ডের নেহার রঞ্জন পুরকায়স্থকে দলের প্রাথমিক সদস্যসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে বহিস্কার করা হয়েছিল। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দলীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক আজ তাদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে প্রাথমিক সদস্য পদ ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আরেক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ইতিপূর্বে পঞ্চগড় জেলাধীন তেঁতুলিয়া উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সুলতানা রাজিয়া ব্যক্তিগত কারণে স্বেচ্ছায় দল থেকে অব্যাহতি নিয়েছিলেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দলে তার প্রাথমিক সদস্য পদ ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

০৯ নভেম্বর, ২০২৫ ১৪:৪৭
রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের দাবিতে ১২৩ ঘণ্টা ধরে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) প্রধান ফটকের সামনে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করে আসছেন আমজনতার দলের সদস্যসচিব তারেক রহমান। কিন্তু এ কর্মসূচি ৫২২ ঘণ্টা হলেও কিছু করার নেই বলে জানিয়েছেন ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। আজ রবিবার নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ইসি সচিব বলেন, ‘৫২২ ঘণ্টা হলেও কিছু করার নেই। আপনি আমাকে বলেন... ক্যান ইলেকশন কমিশন গো বিয়ন্ড দ্য রুলস? সো... ইউ গট মাই আনসার।’
দিকে নিজের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলেও দল নিবন্ধনের দাবিতে অনড় রয়েছেন তারেক রহমান। গতকাল শনিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে মূল গেটের সামনে সরেজমিন দেখা যায়, তারেক রহমানের হাতে স্যালাইন লাগানো অবস্থায় শুয়ে আছে। তেমন কথাও বলছেন না।
তার আশপাশে মানুষের ভিড়। কেউ আসছেন তার সঙ্গে সংহতি জানাতে, কেউ আসছে শুধু তাকে দেখতে। এমন মানুষের ভিড়েই চোখ বন্ধ করে নীরবে শুয়ে আছেন তারেক। দুর্বল হয়ে এসেছে কণ্ঠস্বর, ঠিকমতো কথা আর বলতে পারছেন না তিনি।
এ সময় নিজের সিদ্ধান্তে অনড় আছেন কি না জানতে চাইলে খুবই ধীরে তারেক রহমান বলেন, ‘অবশ্যই আমি আমার সিদ্ধান্তে অনড় আছি। এটা চলবে, অবশ্যই চলবে। ওরা তিনটা উপজেলা কোথায় পেয়েছে? পরে সেটা ৩৩ কিভাবে হয়েছে? এটা আমি মানতে পারছি না।'
ইসি থেকে আর কেউ যোগাযোগ করেছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কেউ আর যোগাযোগ করেনি। সেদিন (বৃহস্পতিবার) যে একজন উপসচিব এসেছিলেন... তিনি যে গিয়েছেন আর কেউ এরপর আসেনি।
কেউ যোগাযোগ করেনি। কোনো চিঠি বা কিছুই দেয়নি।'
শারীরিক অবস্থা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘শরীরে অনেক ব্যথা করছে। তবে এমন অবস্থাতেও আমি অনশন চালিয়ে যেতে চাই।’
গত মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) চূড়ান্ত পর্যালোচনা শেষে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্ক্সবাদী), বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টিকে নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এখন দাবি-আপত্তি চেয়ে পত্রিকায় গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে। এরপর দাবি-আপত্তি এলে তা নিষ্পত্তি করে চূড়ান্ত নিবন্ধন প্রদান করা হবে। সেদিন দল নিবন্ধনের তালিকা থেকে ছিটকে পড়ে তারেক রহমানের ‘আম জনতার দল’। এরপর বিকেল থেকেই আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের মূল ফটকে অনশনে বসে যান তারেক। সে অনশনের এখন ১২৩ ঘণ্টা চলমান রয়েছে।
রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের দাবিতে ১২৩ ঘণ্টা ধরে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) প্রধান ফটকের সামনে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করে আসছেন আমজনতার দলের সদস্যসচিব তারেক রহমান। কিন্তু এ কর্মসূচি ৫২২ ঘণ্টা হলেও কিছু করার নেই বলে জানিয়েছেন ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। আজ রবিবার নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ইসি সচিব বলেন, ‘৫২২ ঘণ্টা হলেও কিছু করার নেই। আপনি আমাকে বলেন... ক্যান ইলেকশন কমিশন গো বিয়ন্ড দ্য রুলস? সো... ইউ গট মাই আনসার।’
দিকে নিজের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলেও দল নিবন্ধনের দাবিতে অনড় রয়েছেন তারেক রহমান। গতকাল শনিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে মূল গেটের সামনে সরেজমিন দেখা যায়, তারেক রহমানের হাতে স্যালাইন লাগানো অবস্থায় শুয়ে আছে। তেমন কথাও বলছেন না।
তার আশপাশে মানুষের ভিড়। কেউ আসছেন তার সঙ্গে সংহতি জানাতে, কেউ আসছে শুধু তাকে দেখতে। এমন মানুষের ভিড়েই চোখ বন্ধ করে নীরবে শুয়ে আছেন তারেক। দুর্বল হয়ে এসেছে কণ্ঠস্বর, ঠিকমতো কথা আর বলতে পারছেন না তিনি।
এ সময় নিজের সিদ্ধান্তে অনড় আছেন কি না জানতে চাইলে খুবই ধীরে তারেক রহমান বলেন, ‘অবশ্যই আমি আমার সিদ্ধান্তে অনড় আছি। এটা চলবে, অবশ্যই চলবে। ওরা তিনটা উপজেলা কোথায় পেয়েছে? পরে সেটা ৩৩ কিভাবে হয়েছে? এটা আমি মানতে পারছি না।'
ইসি থেকে আর কেউ যোগাযোগ করেছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কেউ আর যোগাযোগ করেনি। সেদিন (বৃহস্পতিবার) যে একজন উপসচিব এসেছিলেন... তিনি যে গিয়েছেন আর কেউ এরপর আসেনি।
কেউ যোগাযোগ করেনি। কোনো চিঠি বা কিছুই দেয়নি।'
শারীরিক অবস্থা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘শরীরে অনেক ব্যথা করছে। তবে এমন অবস্থাতেও আমি অনশন চালিয়ে যেতে চাই।’
গত মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) চূড়ান্ত পর্যালোচনা শেষে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্ক্সবাদী), বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টিকে নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এখন দাবি-আপত্তি চেয়ে পত্রিকায় গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে। এরপর দাবি-আপত্তি এলে তা নিষ্পত্তি করে চূড়ান্ত নিবন্ধন প্রদান করা হবে। সেদিন দল নিবন্ধনের তালিকা থেকে ছিটকে পড়ে তারেক রহমানের ‘আম জনতার দল’। এরপর বিকেল থেকেই আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের মূল ফটকে অনশনে বসে যান তারেক। সে অনশনের এখন ১২৩ ঘণ্টা চলমান রয়েছে।

০৯ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০৯
বছর ঘুরে আবারও নিকটে এসে পড়ছে পবিত্র রমজান মাস। গতকাল শনিবার (৮ নভেম্বর) ইসলাম ধর্মবিষয়ক ওয়েবসাইট ‘ইসলামিক ইনফরমেশন’ তাদের সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে আসন্ন রমজান নিয়ে একটি পোস্ট করেছে। সেখানে তারা জানায়, রমজান শুরু হতে ১০০ দিন বাকি আছে।
২০২৬ সালে ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে রমজান মাস শুরু হতে পারে।
সেই অনুযায়ী ২০ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) থেকে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে রোজা শুরু হতে পারে।
আমিরাতের জ্যোতির্বিদ্যা সংস্থা এমিরেট অ্যাস্ট্রোনমি সোসাইটির চেয়ারম্যান ইব্রাহিম আল জারওয়ান সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজকে এ তথ্য জানিয়ে বলেছেন, ‘১৭ ফেব্রুয়ারি মধ্যপ্রাচ্যে ১৪৪৭ হিজরি সনের রমজানের চাঁদ আকাশে উঠবে। কিন্তু ওইদিন সূর্যাস্তের মাত্র ১ মিনিট পরই চাঁদটি অস্ত যাবে। ফলে এটি খালি চোখে দেখা যাবে না।
তাই ১৮ ফেব্রুয়ারি শুরু না হয়ে ১৯ ফেব্রুয়ারি হবে রমজান।’
আগামী বছর মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব, মিসর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার এবং কুয়েতে রমজানের শুরুর কয়েকদিন প্রায় ১২ ঘণ্টা রোজা রাখতে হবে। রমজান যত শেষের দিকে যাবে এই সময় ততই বৃদ্ধি পাবে। এটি বাড়তে বাড়তে ১৩ ঘণ্টা দীর্ঘ হবে।
সংবাদমাধ্যম আল-আরাবিয়া জানায়, আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি সৌদি আরবের চাঁদ দেখা কমিটি বৈঠকে বসবে।
মধ্যপ্রাচ্যের একদিন পরেই বাংলাদেশে রোজা ও ঈদ শুরু হয়ে থাকে। সে হিসেবে বাংলাদেশে আগামী বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি রমজানের প্রথমদিন এবং ২১ মার্চ ঈদুল ফিতর পালিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বছর ঘুরে আবারও নিকটে এসে পড়ছে পবিত্র রমজান মাস। গতকাল শনিবার (৮ নভেম্বর) ইসলাম ধর্মবিষয়ক ওয়েবসাইট ‘ইসলামিক ইনফরমেশন’ তাদের সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে আসন্ন রমজান নিয়ে একটি পোস্ট করেছে। সেখানে তারা জানায়, রমজান শুরু হতে ১০০ দিন বাকি আছে।
২০২৬ সালে ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে রমজান মাস শুরু হতে পারে।
সেই অনুযায়ী ২০ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) থেকে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে রোজা শুরু হতে পারে।
আমিরাতের জ্যোতির্বিদ্যা সংস্থা এমিরেট অ্যাস্ট্রোনমি সোসাইটির চেয়ারম্যান ইব্রাহিম আল জারওয়ান সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজকে এ তথ্য জানিয়ে বলেছেন, ‘১৭ ফেব্রুয়ারি মধ্যপ্রাচ্যে ১৪৪৭ হিজরি সনের রমজানের চাঁদ আকাশে উঠবে। কিন্তু ওইদিন সূর্যাস্তের মাত্র ১ মিনিট পরই চাঁদটি অস্ত যাবে। ফলে এটি খালি চোখে দেখা যাবে না।
তাই ১৮ ফেব্রুয়ারি শুরু না হয়ে ১৯ ফেব্রুয়ারি হবে রমজান।’
আগামী বছর মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব, মিসর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার এবং কুয়েতে রমজানের শুরুর কয়েকদিন প্রায় ১২ ঘণ্টা রোজা রাখতে হবে। রমজান যত শেষের দিকে যাবে এই সময় ততই বৃদ্ধি পাবে। এটি বাড়তে বাড়তে ১৩ ঘণ্টা দীর্ঘ হবে।
সংবাদমাধ্যম আল-আরাবিয়া জানায়, আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি সৌদি আরবের চাঁদ দেখা কমিটি বৈঠকে বসবে।
মধ্যপ্রাচ্যের একদিন পরেই বাংলাদেশে রোজা ও ঈদ শুরু হয়ে থাকে। সে হিসেবে বাংলাদেশে আগামী বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি রমজানের প্রথমদিন এবং ২১ মার্চ ঈদুল ফিতর পালিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.
Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.