Bkash

পটুয়াখালী

নদীর বুকে এক টুকরো শহর

কাজী সাঈদ, কুয়াকাটা

কাজী সাঈদ, কুয়াকাটা

০৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ২০:৪৫

প্রিন্ট এন্ড সেভ

নদীর বুকে এক টুকরো শহর

লাল, নীল, সবুজ ও হলুদ বাতির ঝলমল আলোয় নদীটি এক টুকরো শহরে রূপান্তরিত হয়। রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙে নদীর বুক জুড়ে জ্বলে ওঠে মাছ ধরা ট্রলারের রঙিন বাতির ঝলকানি। দূর থেকে মনে হয় নদীর বুকে বসেছে কোনো আলোর মেলা।

জেলেদের কোলাহল, জালের শব্দ আর ইঞ্জিনের গর্জন মিলিয়ে নদীটি যেন পরিণত হয় শ্রম, আশা আর সংগ্রামের প্রতীকে। সন্ধ্যার পরে মনভোলানো এ সৌন্দর্য আকর্ষণ করে যে কাউকে।

তাই তো নানা বয়সী মানুষ ছুটে আসছেন নদীর তীরে। এটি পটুয়াখালী জেলার মৎস্যবন্দর আলীপুর-মহিপুরের মাঝখান দিয়ে প্রবাহিত খাপড়াভাঙ্গা নদী। অনেকের কাছে শিববাড়িয়া নদী নামেও পরিচিত।

নদীটির দুই তীরে অবস্থিত মহিপুর-আলীপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র। সমুদ্রে মাছ ধরা অবস্থায় বৈরী আবহাওয়া বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় বঙ্গোপসাগর থেকে জেলেরা দ্রুত আশ্রয় নেয় এ নদীতে। ফলে নদীটি জেলেদের কাছে পোতাশ্রয় নামেও পরিচিতি লাভ করেছে।

দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা এসব ট্রলার নদীর বুকে ভেসে থাকায় এক টুকরো শহরে রূপান্তরিত হয়। রাতে নদীর দৃশ্য যেন অন্য এক রূপ নেয়। লাল, সবুজ, নীল বাতির আলোয় মুখরিত হয়ে ওঠে নদীর বুক।

খাপড়াভাঙ্গা সেতুর ওপর দাঁড়িয়ে শতশত মানুষ এই দৃশ্য উপভোগ করতে আসেন প্রতি সন্ধ্যায় ।অনেকে মোবাইল ক্যামেরায় ভিডিও ও সেলফি তুলে ছড়িয়ে দেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ধীরে ধীরে স্থানীয়দের কাছে এটি একটি জনপ্রিয় বিনোদন স্পটে পরিণত হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে কথা হয় কুয়াকাটা টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি কাজী সাঈদের সাথে। তিনি বলেন, আলীপুর-মহিপুর মৎস্যবন্দর, খাপড়াভাঙ্গা নদীটি চমৎকার একটি পর্যটন স্পট হতে পারে। এই নদীটিতে কিছু প্রমোদতরী ভাসতে পারে।

যাতে পর্যটকরা নদীটির দু’মাথার আন্ধারমানিক ও রামনাবাদ মোহনায় যেতে পারে। নদীটির দু’পাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে ছাতা বেঞ্চ বসানোর ব্যবস্থা করতে পারলে আকর্ষণ বাড়বে।

তিনি আরও বলেন, নদীর পাড়ে নির্দিষ্ট একটি জায়গায় স্টল করে সকাল-সন্ধ্যা মাছের দোকান বসালে পর্যটকরা তাজা মাছ কেনার পাশাপাশি সামুদ্রিক বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পরিচয় জানতে পারবে।

সর্বোপরি পরিকল্পিত পরিকল্পনার মাধ্যমে খাপড়াভাঙ্গা নদীটির সৌন্দর্য আরও বৃদ্ধি করতে পারলে সাগরকন্যা কুয়াকাটা পাবে আরও একটি দর্শনীয় পর্যটন স্পট এবং দেশী-বিদেশী ভ্রমণপিপাসু দর্শনার্থীদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।

স্থানীয় বাসিন্দা রাজিব হাওলাদার বলেন, এখন সন্ধ্যা নামলেই মনে হয় নদীর মাঝখানে একটা শহর জেগে উঠেছে। বাতিগুলোর ঝলকানি নদীকে যেন অন্য রকম রূপ দিয়েছে।

খাপড়াভাঙ্গা সেতুতে ঘুরতে আসা কুয়াকাটা থেকে আগত পর্যটক মো. কামাল উদ্দিন বলেন, “আমরা কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত থেকে শুধু এই দৃশ্য দেখার জন্য এখানে এসেছি। সত্যি অসাধারণ লেগেছে।

সেতুর দক্ষিণ প্রান্তে ফুচকা দোকানী জসিম মোল্লা বলেন, আগে শুধু ট্রলার ভীড়ত, এখন সন্ধ্যা নামলেই মানুষ এখানে ঘুরতে আসে। আমাদের ব্যবসাও ভালো হচ্ছে।

পর্যটক মাহমুদা আক্তার বলেন, এ দৃশ্যটাকে ভাষায় বোঝানো সম্ভব নয়। মনে হয় নদীর মধ্যে আলোকসজ্জা করা শহর ভাসছে। আমি ভিডিও করে পরিবারের সবাইকে পাঠিয়েছি।

এ বিষয়ে কলাপাড়া উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসীন সাদেক বলেন, খাপড়াভাঙ্গা সেতুর দু'পাশে সন্ধ্যার পরের দৃশ্যটি অত্যন্ত মনোরম।

এটি আগত পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় করার জন্য স্থানীয় রাখাইন সম্প্রদায়ের বিভিন্ন প্রজাতির খাবারগুলো ভাসমান দোকান আকারে রেস্টুরেন্টের করলে পর্যটকরা এই স্পটে আসবে। পাশাপাশি ট্রলারের মাধ্যমে নদীর মোহনাগুলো ঘুরে দেখার ব্যবস্থা হলে এই স্পটটি আরো আকর্ষণীয় হবে। এ বিষয়ে আমরা জেলা প্রশাসকের সাথে কথা বলব।

বিরল প্রজাতির সজারু উদ্ধার

কাজী সাঈদ, কুয়াকাটা

কাজী সাঈদ, কুয়াকাটা

০৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১৬:১৯

প্রিন্ট এন্ড সেভ

বিরল প্রজাতির সজারু উদ্ধার

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় বিরল প্রজাতির গুরুতর আহত একটি সজারু উদ্ধার করেছে এনিমেল লাভারস অফ পটুয়াখালীর কলাপাড়া শাখার সদস্যরা। এটির দৈর্ঘ্য দুই ফুট ও ওজন ৭ কেজি। গতকাল রাত দশটায় উপজেলার চাকামাইয়া ইউনিয়নের বেতমোর গ্রাম থেকে প্রাপ্ত বয়স্ক এ সজারুটি উদ্ধার করা হয়।

এনিমেল লাভারস অফ পটুয়াখালীর কলাপাড়া শাখার সদস্যরা জানায়, স্থানীয়রা সজারুটিকে আটক করে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। তাৎক্ষনিক খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে সজারুটিকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে। সজারুটি পরিপূর্ণ সুস্থ হলে সংরক্ষিত বনাঞ্চলে অবমুক্তের কথা জানান তারা।

কলাপাড়ার ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসীন সাদিক বলেন, বিপদগ্রস্থ বন্যপ্রাণী উদ্ধারে এনিমেল লাভারস অফ পটুয়াখালীকে সব সময় সহযোগিতা করা হচ্ছে। সজারুটিকে চিকিৎসা শেষে উন্মুক্ত বনে অবমুক্ত করা হবে। বন্যপ্রাণী নিধনকারীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

কুয়াকাটা সৈকতে ভেসে এসেছে ১০ ফুট লম্বা ডলফিন

কাজী সাঈদ, কুয়াকাটা

কাজী সাঈদ, কুয়াকাটা

০৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১৬:১৪

প্রিন্ট এন্ড সেভ

কুয়াকাটা সৈকতে ভেসে এসেছে ১০ ফুট লম্বা ডলফিন

পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সৈকতে ১০ ফুট লম্বা একটি মৃত ইরাবতি ডলফিন ভেসে এসেছে। এটির পুরো মাথা ও শরীরের বিভিন্ন অংশে চামড়া ওঠানো। মাথা ও শরীরে ক্ষত রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) শেষ বিকেলে কুয়াকাটা সৈকতের চর-গঙ্গামতি এলাকায় এটিকে দেখতে পান উপকূল পরিবেশ রক্ষা আন্দোলন, কুয়াকাটার (উপরা) সদস্যরা। পরে বন বিভাগ এবং কুয়াকাটা পৌরসভার সঙ্গে সমন্বয় করে ডলফিনটিকে মাটিচাপা দেন তাঁরা।

উপকূল পরিবেশ রক্ষা আন্দোলন, কুয়াকাটার (উপরা) আহ্বায়ক আবুল হোসেন রাজু বলেন, আমাদের একটি টিম বন পরিদর্শন শেষে ফেরার পথে এটিকে জঙ্গলে দেখতে পায়। দেখে মনে হচ্ছে এটি সকালের জোয়ারে ভেসে এসেছে। ইরাবতী প্রজাতির এই ডলফিন সাধারণত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও বঙ্গোপসাগর সমুদ্র উপকূলের কাছে নদীর মোহনায় দেখা যায়।

কুয়াকাটা ডলফিন রক্ষা কমিটির টিম লিডার রুমান ইমতিয়াজ তুষার জানান, এখানে পরিবেশ নিয়ে কাজ করে এমন সংগঠনগুলো ডলফিনের বিষয়ে যথেষ্ট সতর্ক। তাঁদের সহযোগিতায় এটিকে মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানাচ্ছি, যাতে এই মৃত্যুর সঠিক কারণগুলো বের করা হয়।

বাংলাদেশ মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী গবেষক সাগরিকা স্মৃতি বলেন, ডলফিনের মরদেহ ভেসে আসা অনেক পুরোনো ঘটনা। বর্ষা মৌসুমে এগুলো বেশি দেখা যায়। উন্নত বিশ্ব সামুদ্রিক পরিবেশ রক্ষায় আমাদের থেকে বেশি এগিয়ে। আসলে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন ২০১২ অনুযায়ী ডলফিন ও সংরক্ষিত সামুদ্রিক প্রাণী বাঁচাতে যত দিন সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো এগিয়ে না আসবে, তত দিন এই সমস্যার সমাধান হবে না।

বন বিভাগের মহিপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা এ কে এম মনিরুজ্জামান বলেন, খবর পেয়ে আমাদের সদস্যদের পাঠিয়ে দ্রুত ডলফিনটিকে মাটিচাপা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি, যাতে দুর্গন্ধ না ছড়ায়।

সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীকে ভালোবেসে প্রাণ দিতে হলো ১০ শ্রেণির আরমানকে

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

০৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১৬:০৮

প্রিন্ট এন্ড সেভ

সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীকে ভালোবেসে প্রাণ দিতে হলো ১০ শ্রেণির আরমানকে

একাধিক ছেলেতে আসক্ত স্কুলছাত্রীকে ভালোবেসে খেসারত হিসেবে প্রাণ দিতে হয়েছে পটুয়াখালীর গলাচিপা সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আমরানকে। একই বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী রোদেলা দীর্ঘদিনের হৃদয়ঘটিত সম্পর্কে অস্বীকার করায় দু:খ, কষ্টে গত ৩০ আগস্ট আরমান গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। ছেলের মৃত্যু এবং দাফনের অন্তত সপ্তাহখানেক পরে শুক্রবার (০৫ সেপ্টেম্বর) মিডিয়ার সামনে এসে মা সাবেরা সুলতানা লিয়া এমন তথ্য দিয়েছেন।

তার অভিযোগ, তার ছেলের সাথে প্রেমের নামে প্রতারণা করেছে গলাচিপা সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী রোদেলা। ছেলে তার প্রেমিকা একাধিক পুরুষে আসক্ত থাকার বিষয়টি জানতে পারে এবং এগুলো পরিহার করার পরামর্শ দেয়। এনিয়ে গত ৩০ আগস্ট রাতে উভয়ের মধ্যেকার বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে রোদেলা ওই দিন থেকে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার কথা জানায়। এতে মনবল হারিয়ে স্বেচ্ছায় প্রাণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় আরমান।

শুক্রবার (০৫ সেপ্টম্বর) গলাচিপা টেলিভিশন ফোরামের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আরমানের মা জানান, সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীর সাথে তার ছেলের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচয় হয়। আবার একই স্কুলের পড়ার সুবাদে তাদের মধ্যেকার অতি সহজেই যোগাযোগ বৃদ্ধি পায়। একপর্যায়ে তারা দুজন প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। কিন্তু একাধিক পুরুষে আসক্ত রোদেলা গত ৩০ আগস্ট সেই সম্পর্কের কথা অস্বীকার করে। এবং এও বলেছেন, ‘ব্রো’ তোমার সাথে আমার আজ থেকে কোনো সম্পর্ক নেই!

আরমানের মুঠোফোন ঘেটে এই চ্যাঞ্চল্যকার তথ্য-উপাত্ত্ব সামনে এসেছে বলে জানিয়েছেন তার মা লিয়া। তিনি জানান, আমার ছেলে ওই মেয়েকে বলে তোমার সাথে কথা না বললে আমি মরে যাবো। মেয়ে বলে তুই মরলে আমার কী? ওই আঘাত আমার ছেলে আমরান সহ্য করতে না পেরে মেয়েকে মুঠোফোন সংযোগে রেখে আত্মহত্যার পথ বেঁচে নেয়।

ছেলের এই মৃত্যুর ঘটনায় স্কুলছাত্রীকে দায়ী করে তাকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ছাড়পত্র দিয়ে বের করে দেওয়ার দাবি রাখেন সাবেরা সুলতানা। এবং স্কুলছাত্রীর প্ররোচনায় তার ছেলে আত্মহত্যা করেছে, এমন অভিযোগ এনে মামলাও করবেন বলে জানিয়েছেন।’

custom sidebar ads

Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.

জনপ্রিয়

Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.