বার্তা পরিবেশক, অনলাইন :: চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ থানায় কর্মরত এক এসআইয়ের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন তার স্ত্রী। অভিযুক্ত এসআই রাজশাহী জেলার বাগমারা উপজেলার মৃত সাহেব আলীর ছেলে তৌহিদুল ইসলাম।

২৬ মার্চ সন্ধ্যায় শাহনাজ পারভিন তার ফেসবুক আইডিতে তিনটি ছবি পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখেন, ‘আর কত, আমিও মানুষ। আজ ১৪ দিন থেকে সইতেছিলাম। এর আগেও চুপ ছিলাম, এবারও চুপ থাকতে চেয়েছিলাম কিন্তু আর না। কারণ কুকুর কোনোদিন ভালো হয় না। পুলিশের চাকুরি করে বেআইনি কাজ করে। আর সইতে পারবো না। ওর বোন বা ভাই বা ওকে কেউ এমন করলে কী করতো?’

প্রায় ৬ বছর আগে ১০ লাখ টাকা যৌতুক নিয়ে তৌহিদুল বিয়ে করেন একই উপজেলার আপন খালাতো বোন শাহনাজ পারভিনকে। বিয়ের কিছু দিন পর থেকেই সংসারে কলহ সৃষ্টি হয়।

এসবের বিচার চেয়ে শাহনাজ পারভিন মুঠোফোনে শুক্রবার (২৭ মার্চ) শিবগঞ্জে কর্মরত সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাকে দেখতে এসেই বিয়ে করেন খালাতো ভাই তৌহিদুল ইসলাম। এর কিছুদিন পর যৌতুক হিসেবে ১০ লাখ টাকা দাবি করেন আমাদের কাছে। আমার সংসার টেকাতে সেসময় তাকে নগদ ১০ লাখ টাকা দেয়া হয়। এরপর বগুড়ায় চাকরির সুবাদে সেখানে গিয়ে আদম দিঘির চাপাপুর গ্রামের রিমা নামের এক নারীকে বিয়ে করেন তৌহিদুল ইসলাম। সেই বিয়ে আমাকে মেনে নিতে চাপ প্রয়োগ করেন। আমি তার দ্বিতীয় বিয়ে না মানায় প্রায়ই আমার ওপর নির্যাতন চালানো হয়। তারপরও সাড়ে তিন বছরের একটি বাচ্চা থাকায় নীরবে তার নির্যাতন সহ্য করে গিয়েছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘সম্প্রতি দ্বিতীয় স্ত্রী রিমাকে ঘরে তোলার জন্য আমাকে চাপ দিতে থাকেন। এনিয়ে আমি প্রতিবাদ করায় ১৪ দিন আগে মেরে আমার বাম পা ভেঙে দেন। এছাড়াও শরীরে বিভিন্ন স্থানে আঘাত করা হয়। পরে আমি কোনো রকমে শিবগঞ্জ থানার গেটের বাসা থেকে বের হয়ে একা শিবগঞ্জ হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা করাই। দিন দিন আমার স্বাস্থ্যের অবনতি হওয়ায় বৃহস্পতিবার বাবার বাড়ি বাগমারায় চলে আসি।’

তিনি জানান, বিষয়টি শিবগঞ্জ থানার ওসি শামসুল আলম, ওসি (তদন্ত) আতিকুল ইসলাম ও এসআই আনামকে জানালেও তারা কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। উল্টো তারা আমার স্বামী তৌহিদুলের পক্ষ নিয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিবগঞ্জ থানার এসআই ও শাহনাজ পারভিনের স্বামী তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি শাহনাজ পারভিনকে নির্যাতন করিনি। সিঁড়ি থেকে পড়ে তার পা ভেঙে গেছে।’

এছাড়া তিনি দ্বিতীয় বিয়ের কথা অস্বীকার করে বলেন, শাহনাজের মাথায় সমস্যা আছে। শরীরে আঘাতের চিহ্নর কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওগুলো ইনজেকশনের দাগ। এলার্জি থাকায় শরীরের বিভিন্ন স্থানে দাগ পড়ে গেছে। এছাড়াও তিনি সংবাদিকদের সঙ্গে সমঝোতার প্রস্তাব দেন।

এ ব্যাপারে শিবগঞ্জ থানার ওসি শামসুল আলম শাহ বলেন, ‘এটি তাদের পারিবারিক বিষয়। তাছাড়া এ বিষয়ে আমার কাছে কেউ অভিযোগ দেয়নি।’