নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল:: রাজধানী ঢাকা থেকে বরিশালগামী একটি বিলাসবহুল লঞ্চের কেবিনে সন্তান প্রসব করেন এক নারী। এমভি মানামী নামের লঞ্চটির কেবিনে ২ জুলাই গভীর রাতে আকস্মিক নারী প্রসব বেদনা ওঠে। লঞ্চ স্টাফদের সহযোগিতায় নারী কণ্যাসন্তান জন্ম দিলে পরদিন সকালে মা ও সন্তানকে স্বজনদের হাতে নিরাপদে তুলে দেওয়া হয়। মানবিক এই ঘটনাটি কয়েকদিন চাপা থাকলেও লঞ্চটির এক স্টাফ ওই রাতের পুরো কাহিনী গতকাল রোববার ফেসবুকে তুলে ধরেন এবং নেটিজেনদের প্রশংসা কুড়ান।

লঞ্চ কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে- গত ২ জুলাই রাতে ঢাকা থেকে বরিশালের উদ্দেশে যাত্রী নিয়ে রওয়ানা হয় বিলাসবহুল এমভি মানামী লঞ্চ। মধ্যরাতে কেবিনের এক নারী যাত্রী বাথরুমে যাওয়ার সময় প্রসব বেদনায় প্রথম শ্রেণির করিডোরে বসে পড়েন। বিষয়টি তাৎক্ষণিক কেবিন ক্রুদের চোখে পড়ে। ওই নারী তখন কেবিন বয়দের জানান তার প্রসব বেদনা শুরু হয়েছে। বিষয়টি জানতে পেরে বয়রা তাৎক্ষণিক তাকে কেবিনে নিয়ে যান।

ওই লঞ্চের যাত্রী সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসাপাতালের মেডিক্যাল অফিসার ডা. মুহাম্মদ রেজাউল কবির ও মিডওয়াইফ (ধাত্রী) মিসেস শিরিন মধ্যরাতেই এগিয়ে আসেন। তারপরও চিকিৎসক ও ধাত্রীর চেষ্টায় লঞ্চের কেবিনেই নিরাপদে ছেলে সন্তানের জন্ম দেন সেই গর্ভধারিনী।

এমভি মানামী লঞ্চের সিনিয়র সুপারভাইজার শাহাদাত হোসেন শুভ বরিশালটাইমসকে বলেন, যাত্রাপথে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি, যা মানামী লঞ্চ কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আমরা সবসময় সমাধান করার চেষ্টাও করে থাকি। তবে এ ধরনের পরিস্থিতির শিকার কখনও হবো তা ভাবিনি। বিশেষ করে প্রি-ম্যাচিউর নবজাতকের জন্য আমাদের অনেকটা সময় ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে হয়েছে। আমরা ওই নারীর নিরাপত্তার খাতিরেই রাতে সর্বোচ্চ গতিতে লঞ্চ চালনার নির্দেশ দিয়েছিলাম। যে কারণে নির্ধারিত সময়ের বহু আগে গত ৩ জুলাই ভোররাত ৩টা ১৭ মিনিটে বরিশাল ঘাটে পৌঁছাতে সক্ষম হই। এদিকে ওই নারীর স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করে আগেই ঘাটে অ্যাম্বুলেন্স আনিয়ে রাখা হয়েছিল।

ওই নারী ও তার ছেলে সন্তানকে তাদের স্বজনদের উপস্থিতিতে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে দেওয়া হয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য। মা ও সন্তান উভয়ই সুস্থ অবস্থায় বাড়িতে চলে গেছেন।’