মোঃ জসীম উদ্দিন, বাউফল:: পটুয়াখালীর বাউফলে অপহরণের পর ধর্ষণের শিকার হয়েছে এমন দুই শিশুর ১৬৪ ধারা জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) দুপুরে পটুয়াখালীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সিহাব উদ্দিনের আদালতে ওই দুই শিশুর জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।

জবানবন্দিতে বলা হয়েছে, বাউফল উপজেলার বগা ইউনিয়নের বানাজোরা গ্রামের কালাম মৃধা (৫৫) নামের এক ব্যক্তি গত শুক্রবার রাত পৌনে ৯টার দিকে বগা ডা. ইয়াকুব আলী শরীফ ডিগ্রী কলেজ এলাকায় স্থানীয় এক শিশুকে (১০) ধর্ষণ করে। একইভাবে কালাম শনিবার রাতে সাড়ে ৮টার দিকে স্থানীয় ব্রিজ বাজার এলাকার আরেক শিশুকে (১১) অপহরণ করে বগা বন্দরের মসজিদ এলাকায় নিয়ে ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় শনিবার রাতে এক শিশুর বাবা বাউফল থানায় মামলা দায়ের করলে রোববার পুলিশ কালাম মৃধাকে গ্রেপ্তার করে পটুয়াখালী আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়।

এদিকে এই ঘটনা সাজানো বলে দাবি করে খোদ মামলার বাদি আদম আলী মৃধা মঙ্গলবার সকালে স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে জানান, বগা তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মহিবুল্লাহ গত শনিবার রাতে তাকে বাড়ি থেকে তদন্ত কেন্দ্রে ডেকে নিয়ে একটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেন। পরে জানতে পারেন তার ছেলেকে ধর্ষণের অভিযোগে কালাম মৃধা নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই মামলায় তাকে বাদি করা হয়েছে। তার ছেলে তাকে জানিয়েছেন এ ধরণের কোন ঘটনা তার সাথে ঘটেনি। তার নাবালক ছেলেকে ভয় দেখিয়ে স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছে বলেও বাদী আদম আলী অভিযোগ করেছেন।

ওই শিশুটির মা মানোয়ারা বেগম বলেন, সোমবার রাতে তাদেরকে খবর দিয়ে বাউফল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। তারা থানার ওসিকে ঘটনাটি মিথ্যা বলে জানিয়েছেন। কিন্তু ওসি তাদের কথা কর্ণপাত করেননি। ববং তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করেছেন। একপর্যায়ে ওসি তার ছেলেকে থানায় রেখে দেন এবং তাদেরকে বাড়ি চলে যেতে বলেন। রাত ১টার দিকে তারা বাড়ি চলে আসেন।

বগা তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মহিবুল্লাহ বরিশালটাইমসকে জানান, ‘কোন বিরোধের জের ধরে নয়, বরং সুনিদৃষ্ট অভিযোগের প্রেক্ষিতে কালাম মৃধাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ১০ ও ১১ বছরের দুই শিশুকে অপহরণ করে ধর্ষণের অভিযোগে থানায় মামলা রয়েছে’।

তিনি আরও বলেন, ‘আমিও শুনেছি মামলার বাদি এখন ঘটনাটি অস্বীকার করছেন। স্থানীয় এক প্রভাবশালী ব্যক্তির চাপে পরে তিনি (বাদি) এ ঘটনা অস্বীকার করছেন।’

বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বরিশালটাইমসকে জানান,‘ ধর্ষণের শিকার ওই দুই শিশু থানায় উপস্থিত হয়ে তার কাছেও ঘটনার বিবরন দিয়েছেন। ওই দুই শিশুর বক্তব্য তার কাছে রেকর্ড রয়েছে’।