ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের প্রবেশ পথের বেহাল দশা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঝালকাঠি>> ঝালকাঠিতে উন্নত চিকিৎসার একমাত্র ভরসা ১০০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতাল। এতে প্রবেশে পূর্ব ও পশ্চিম দিকে দুটি পৃথক গেট ও সড়ক রয়েছে। পূর্ব গেট দিয়ে প্রবেশে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রেও একমাত্র যাতায়াতের পথ।

উভয় দিকের সড়কেই খানাখন্দ রয়েছে অসংখ্য। বৃষ্টি হলেই পানি জমে সড়কটি ডুবে যায়। ফলে কোন জায়গা খানাখন্দ তা বোঝাই দায়। দুর্ঘটনার আশঙ্কা নিয়ে হাসপাতালে চলাচল করতে হচ্ছে রোগী ও স্বজনদের।

মঙ্গলবার (৮ জুন) বেলা ১১টায় ঝালকাঠি সদর উপজেলার বেতলস গ্রামের বারেক হাওলাদারের অসুস্থ স্ত্রী রাজিয়া বেগম (৫৪) কাদা-পানির সড়ক দিয়ে চিকিৎসা সেবা নিতে প্রবেশের সময় হোঁচট খেয়ে গুরুতর আহত হন।

রাজিয়া বেগম বলেন, ‘ইজিবাইকে করে সদর হাসপাতালে ঢুকছিলাম চিকিৎসা সেবার জন্য। ১০ কিলোমিটার দূর থেকে এসে বিপদে পড়েছি ৫০গজ জায়গায়। পূর্ব গেট পার হয়ে ঢুকতেই অটোবাইক হেলে পড়লে আমি ছিটকে পড়ে যাই। হাঁটুতে এবং কনুইতে প্রচণ্ড আঘাত লাগে।’

পোনাবালিয়া ইউনিয়নের দেউরী গ্রামের শিউলী আক্তার জানান, ঝালকাঠি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে ঢুকতেছিলাম মাতৃত্বকালীন চিকিৎসা নেয়ার জন্য। গেট দিয়ে ঢুকতেই বিশাল গর্ত। আমাদের গ্রামের বাড়ির পুকুরের মতোই গর্তটি। যাবার কোনো পথ না পেয়ে বাইরে ডাক্তার দেখিয়ে বাড়িতে যাই।’

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল চত্বরে আড়াইশ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল ভবনের নির্মাণ কাজ চলছে। ভবনের জন্য মালামাল সরবরাহের ভারী গাড়ির কারণে রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেদিকে খেয়াল না করেই পুরাতন হাসপাতালের ওয়াল ও ফ্লোরে টাইলস ব্যবহার করে সুসজ্জিত করার কাজ করছে গণপূর্ত অধিদফতর। এ প্রকল্পগুলো কয়েক লাখ টাকা ব্যয় করলেও জনসাধারণের চলাচলের রাস্তাটি সংস্কারে কোনো উদ্যোগ নেই।

অভিযোগ রয়েছে, জনস্বার্থের দিকে তোয়াক্কা না করে অজ্ঞাত কারণে ঠিকাদারদের স্বার্থের দিকেই তাকাচ্ছে সংশ্লিষ্ট গণপূর্ত বিভাগ। এ উন্নয়ন রোগীদের সেবা বা পরিসেবার ক্ষেত্রে কোনো কাজে লাগছে না।

এ ব্যাপারে ঝালকাঠি সিভিল সার্জন ডা. রতন কুমার ঢালী বলেন, ‘গণপূর্ত বিভাগকে সংক্ষিপ্ত এই সড়কটুকু সংস্কার করার জন্য বারবার লিখিত ও মৌখিকভাবে জানানো সত্ত্বেও কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না। তারা শুধু হাসপাতালেল টাইলস বসিয়ে চলছে।’

গণপূর্ত অধিদফতরের সহকারী প্রকৌশলী সমীর দাস বলেন, ‘হাসপাতালের সামনেই ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ৯তলা ভবনের কাজ নির্মাণাধীন। মালামাল পরিবহনে রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সিভিল সার্জন রাস্তার দুর্ভোগের বিষয়ে ফোন দিয়ে জানিয়েছেন। জরুরি সংস্কার খাতে পূর্ব পাশের রাস্তাটি রোগীদের স্বাভাবিক যাতায়াতের জন্য সংস্কার করা হবে। অতিদ্রুতই এ কাজ শুরু করা হবে। পশ্চিম পাশের প্রবেশ সড়কটি দিয়ে মালামাল বহন করা হবে।’