বেতাগী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক্স-রে কক্ষ ১০ বছর ধরে তালাবদ্ধ

বরগুনা প্রতিনিধি >> বরগুনার বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল সংকটের কারণে ১০ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে এক্স-রে মেশিন। দীর্ঘদিন ধরে অযত্ন-অবহেলায় হাসপাতালের একটি তালাবদ্ধ রুমে পড়ে আছে অর্ধ কোটি টাকা মূল্যের এই এক্স-রে মেশিনটি। উপজেলার একমাত্র সরকারি হাসপাতালটিতে এক্স-রে মেশিন চালু না থাকায় ভোগান্তিতে পড়ছেন রোগীরা। বাধ্য হয়ে বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে গিয়ে বাড়তি টাকা গুনতে হচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বারবার চিঠি দিয়েও সমাধান হয়নি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫০ শয্যার। এখানে প্রতিদিন আউটডোরে ৩শ’ থেকে সাড়ে ৩শ’ রোগী সেবা নেয়। আরও ৪০-৪৫ জন রোগী ভর্তি হয়। প্রতিদিন প্রায় ৪শ’ রোগীর সেবা দেওয়া হয় হাসপাতালে। রোগীর রোগ নির্ণয়ে সরকার এক্স-রে মেশিন সরবরাহ করলেও হাসপাতালে এক্স-রে সেবা চালু না থাকার কারণে সেটি মানুষের উপকারে আসছে না। ফলে সাধারণ মানুষ সরকারি সুবিধা বঞ্চিত হচ্ছে। প্রতিদিন বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন শত শত রোগী। বাধ্য হয়ে অধিক মূল্যে বিভিন্ন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে তাঁদের এক্স-রে করিয়ে নিতে হচ্ছে।

সরেজমিনে বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের রেডিওলোজি বিভাগে গিয়ে দেখা যায়, এক্স-রে মেশিনের কক্ষটি বন্ধ রয়েছে। কক্ষের সামনে মরিচা ধরা তালা ঝুলছে। দরজা জুড়ে রয়েছে মাকড়শার জাল।

মনিরুল ইসলাম নামের এক রোগীর স্বজন বলেন, ‘গত মাসে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় তাঁর এক আত্মীয়ের ডান পা ভেঙে যায়। হাসপাতালে নিয়ে এলে এক্স-রে করাতে বলা হয়। কিন্তু হাসপাতালে এক্স-রে মেশিন অকেজো থাকায় পাশের ক্লিনিক থেকে দ্বিগুণ টাকা দিয়ে করাতে হয়েছে। রোগীকে বাইরের ক্লিনিকে নিয়ে গেলে রোগীরও কষ্ট হয়, সঙ্গে থাকা স্বজনদেরও ভোগান্তি পোহাতে হয়।’

বেতাগী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) রবীন্দ্রনাথ সরকার বলেন, সরকারি হাসপাতালে ৭০ টাকায় এক্স-রে করানো যায়। কিন্তু এক্স-রে মেশিনটি অকেজো থাকায় বাইরে থেকে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় এক্স-রে করতে হচ্ছে। এর বাইরেও বাড়তি যাতায়াত খরচ হচ্ছে।

বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. তেন মং বলেন, দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালের এক্স-রে মেশিনটি বন্ধ রয়েছে। জনবল সংকটের কারণে এক্স-রে মেশিনটি চালু করা যাচ্ছে না। একাধিকবার চাহিদা করা কথা জানিয়েছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বারবার চিঠি দিয়েও সমাধান হয়নি।