বাউফলে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ

মোঃ জসীম উদ্দিন,বাউফল >> পটুয়াখালীর বাউফলে একটি বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণকাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অনিয়মের প্রতিবাদ করায় এলাকার যুবকদের নামে থানায় অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কেশবপুর ইউনিয়নের ভরিপাশা ইসমাইলিয়া দাখিল মাদ্রাসায় একটি বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেয় দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। ২০১৬-২০১৭ ইং অর্থবছরে ২ কোটি ৬ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়। এর আগে টেন্ডার প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়ে আল আমিন সিকদার নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব পায়। প্রকল্পটির নির্মাণকাজ শুরুর পর থেকে নিম্মমানের উপকরণ ব্যবহার ও সিডিউল অনুযায়ী কাজ না করার অভিযোগ ওঠে ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। এলাকাবাসী কয়েকবার অনিয়মের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠলেও প্রকল্পটি তদারকির দায়িত্বে থাকা বাউফল উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) রাজিব বিশ্বাসকে ম্যানেজ করে বিল তুলে নেয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

ভরিপাশা ইসমাইলিয়া দাখিল মাদ্রাসার সভাপতি ফেরদৌস ভুট্টো বলেন, ভবনটির নির্মাণকাজ শুরুর পর থেকেই কাজে ব্যাপক অনিয়ম হচ্ছে। অনিয়ম সম্পর্কে একাধিকবার অভিযোগ করার পর উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিল স্থগিত করে দেয়। এরপর আবার সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে বিল তুলে নিয়েছে ওই ঠিকাদার। তিন বছর আগে প্রকল্পটির মেয়াদকাল শেষ হলেও ঠিকাদার কয়েক দফা সময় বাড়িয়েছে। বর্তমানে প্রকল্পটির ফিনিশিংয়ের কাজ চলছে। এরই মধ্যে দেয়ালে একাধিক ফাটল ধরেছে। মেঝেতে মাত্র ২ ইঞ্চি পুরো ঢালাই দেওয়া হয়েছে। ঢালাই তুলে হাতে নিয়ে চাপ দিলে ভেঙে যাচ্ছে। আঙ্গুল দিয়ে খোঁচা দিলেই পলেস্তরা উঠে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার এলাকার কতিপয় যুবক এসব অনিয়মের প্রতিবাদ করলে ঠিকাদারের প্রতিনিধি রুহুল আমিন থানায় গিয়ে উল্টো চাঁদাবাজির অভিযোগ দাখিল করেন। এরপর থেকে পুলিশ ফোন দিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে। অনিয়মের বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে অবহিত করা হয়েছে।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অংশিদার শামিম সিকদার বলেন, নির্মাণকাজে কোন অনিয়ম হয়নি। এলাকার কতিপয় উশৃঙ্খল যুবক হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে দেয়াল ভেঙে ফেলেছে। এ ব্যাপারে আমরা থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছি।

বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আল মামুন বলেন, ঠিকাদারকে বিরক্ত করার একটি অভিযোগ পেয়েছি। সত্যতা যাচাই করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে জানার জন্য উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রাজিব বিশ্বাসকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আল আমিন বলেন, ভবনটির নির্মাণকাজে অনিয়মের বিষয়ে বৃহস্পতিবার একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি । বিষয়টি তদন্তের জন্য পিআইওকে নির্দেশ দিয়েছি।’