মুক্তিপণ দিয়ে মুক্তি পেলেন অপহৃত ৯ জেলে

হেলাল উদ্দিন লিটন, তজুমদ্দিন ॥ মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেলেন ভোলার তজুমদ্দিনের মেঘনায় অপহৃত ৯ জেলে। বিকাশের মাধ্যমে মুক্তিপণের টাকা পরিশোধ করার পর তাদের মুক্তি দেয় জলদস্যু সকেট জামাল বাহিনী।

মুক্তি পেয়ে অসুস্থ অবস্থায় গভীর রাতে আত্নীয়-স্বজনের কাছে আসেন ৯ জেলে। দস্যুরা মুক্তিপণের টাকার জন্য তাদেরকে শারীরিকভাবে ব্যাপক নির্যাতন করায় বর্তমানে তারা চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়, মুক্তি পাওয়া জেলেরা ৩০ থেকে ৮০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিলে জলদস্যুরা তাদেরকে ভোলার ইলিশা ঘাটের সামনে মদনপুর ও বঙ্গের চরে ছেড়ে দেয়।

পরে জেলে ছোট নৌকা দিয়ে ইলিশা ঘাটে উঠে গভীর রাতে তজুমদ্দিনে ফিরে আসেন। অপহৃত জেলেদেরকে মুক্তিপণের টাকার জন্য শারীরিকভাবে প্রচুর নির্যাতন করায় বর্তমানে তারা গুরুতর অসুস্থ বলে মৎস্য আড়ৎদার সুত্রে জানা গেছে।

সকেট বাহিনীর প্রধান ভোলার বাপ্তা ইউনিয়নের তুলাতলী এলাকার সকেট জামাল বর্তামানে জেলে থাকায় তার দুই ভাগিনা নিরব ও শাহীন, একই এলাকার কামাল, রুবেল, সাজু মাঝি এবং রফিক মাঝি সকেট বাহিনী পরিচালনা করেন বলে আড়ৎদাররা জানান।

তারা আরো জানান, নৌ-ডাকাতিতে ব্যবহৃত বোডটি সাজু মাঝির নিজের এবং তার ব্যবহৃত ০১৭৯১৬৬৯৯৯৫ এই বিকাশ নম্বরে মুক্তিপণের টাকা নেন। এছাড়াও ০১৭৫৮-১১২৯৫৮, ০১৩১৫-৩৯৪৬৫৯, ০১৮৭৭-২৪৪৬৮৮ এই বিকাশ নম্বরগুলিতেও মুক্তিপণের টাকা পরিশোধ করেন জেলেদের স্বজনরা।

মুক্তি পাওয়া জেলেরা হলেন, হান্নান মাঝি, লোকমান মাঝি, মিরাজ মাঝি, হাশেম মাঝি, আরিফ মাঝি, আলাউদ্দিন মাঝি, হাসান মাঝি, সালাউদ্দিন মাঝি ও ইউসুফ মাঝি।

জানতে চাইলে শশীগঞ্জ সুইজঘাটের আড়ৎদার মো. সিরাজ মেম্বার ও আমিন মহাজন বলেন, মেঘনায় এধরনের ডাকাতির দ্বারা আমরা ব্যবসায়ীরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত।

তাই সর্বক্ষণিক মেঘনায় পুলিশ ও কোষ্টগার্ডের টহলের দাবী জানাচ্ছি। মির্জাকালু নৌ-পলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, অপহৃত মাঝি ও ডাকাতির সাথে জড়িতদের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।

তাদের আটক করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি আরো বলেন, নৌ-পুলিশের জন্য সরকারীভাবে ট্রলার ও
ডিজেলের বরাদ্দ না থাকায় মেঘনায় ডাকাতির সংবাদ পাওয়ার সাথে সাথে অভিযান পরিচালনা করা যায় না।

উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট একটি ট্রলার ও মাসিক ডিজেল বরাদ্দ দেয়ার জোড়দাবীও জানা তিনি। ভোলা কোষ্টগার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা বলেন, মুক্তিপণ দিয়ে জেলেরা মুক্ত হওয়ার বিষয়টি আমাদের জানা নেই।

তবে অপহরণের বিষয়ে আমাদের কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। জনমুখে অপহরণের বিষয়টি জেনে গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। অপহৃত জেলেদের বক্তব্য শুনে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।