ভারত গরু না দিলেই বরং আমরা কৃতজ্ঞ থাকব : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, সড়ক দুর্ঘটনায় সর্বোচ্চ সাজার সুপারিশ নিয়ে সংশোধিত আইন শিগগিরই সংসদে উত্থাপিত হবে। সেখানে পার্কিংসহ বিভিন্ন অপরাধে জরিমানার পরিমাণ অত্যধিক বলে যে অভিযোগ আছে তা আবারও আলোচনা করা হবে।

শনিবার দুপুরে রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ডভ্যান ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি মালিক সমিতির সাধারণ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

তার আগে সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত দুই দিনব্যাপী পোল্ট্রি প্রফেশনাল বাংলাদেশ (পিপিবি) আয়োজিত প্রথম বাংলাদেশ পোল্ট্রি কনভেনশন-২০২৩ এর প্রথম দিনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

এসময় সেখানে তার বক্তব্যে বলেছেন, ‘যত বারই ভারত সফর করি, সেখানকার সরকার বলে তোমাদের গরু দেবো না। তখন বলি, আপনারা গরু দেওয়া বন্ধ করে দিলেই বরং আমরা কৃতজ্ঞ থাকবো।

আমরা গবাদিপশুতে প্রায় স্বনির্ভরশীল। আপনারা বন্ধ করলেই পুরোপুরি হয়ে যাবো। কেবল পোল্ট্রি শিল্পে নয়, আমরা গবাদিপশুতেও এগিয়ে আছি।’

ট্রাক-কাভার্ডভ্যান ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি মালিক সমিতির অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশে একটা শিল্পবিপ্লব ঘটে গেছে। আধুনিক যুগের সাথে তাল মিলিয়ে আধুনিক ট্রাক ও উন্নত মানের যন্ত্রাংশ ব্যবহার করতে হবে।

ভবিষ্যতে বাংলাদেশে পণ্য পরিবহনের চাপ আরও বাড়বে। ২০০৮ সালে বাংলাদেশকে বদলে দেয়ার অঙ্গীকার করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজকে বাংলাদেশ কিন্তু ঠিকই বদলে গেছে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ‘ক্যান্টনমেন্টের নলের’ ওপর বিশ্বাস করে না। জনগণ যাকে ক্ষমতায় রাখবে তারাই থাকবে। এ সময় সড়কে চাঁদাবাজি নিয়েও জড়িতদের সতর্ক করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সড়কে কোনো চাঁদাবাজি হবে না, কমিশন নেয়া যাবে না।

সংগঠনের নামে চাঁদা তুলতে চাইলে ট্রাক প্রতি কত টাকা এবং কোথা থেকে তোলা হবে তা আগেই পুলিশকে জানাতে হবে। এর বাইরে কোথাও যদি কেউ চাঁদাবাজি করে, তার বিরুদ্ধে হাইওয়ে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।

এদিকে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, বাংলাদেশের জনগণ সবসময়ই উদ্যমী। পোল্ট্রি শিল্প অনেক সংগ্রাম করেও এখনো টিকে আছে।

আপনাদের নিজেদের ডিম সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণে এগিয়ে আসতে হবে। মানুষ বাড়ছে জ্যামিতিক হারে, আর খাদ্য বাড়ছে গাণিতিক হারে। কৃষিবিদরা ভূমিকা না রাখলে একটা হাহাকার পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো। আমাদের যতটুকু সম্পদ তার পুরোপুরিই চাষাবাদে ব্যবহার করতে হবে।

অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল হক বেগের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন শেকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শহীদুর রশীদ ভূঁইয়া, ইউনিডো’র বাংলাদেশ প্রতিনিধি ড. জাকি উজ জামান, পিপিবি’র উপদেষ্টা ও প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক ডা. মোছাদ্দেক হোসেন।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বর্তমানে দেশে ৮৪ হাজার পোল্ট্রি ফার্ম রয়েছে। যার সঙ্গে পেশাগতভাবে প্রায় দেড় কোটি মানুষ ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আর্থিক ক্ষতির কারণে প্রতিনিয়তই পোল্ট্রি ফার্মগুলো হারিয়ে যাচ্ছে।

তারা কেন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সেটি নিয়ে আমাদের গবেষণা করতে হবে। বলিষ্ঠ জাতি গঠনে নিয়ামক প্রাণীজ প্রোটিন সবার জন্য শতভাগ নিশ্চিত করতে হবে।

পোল্ট্রি শিল্পকে বাঁচাতে খাদ্যের দাম, ভুট্টার দাম কমাতে হবে। প্রয়োজনীয় ওষুধের দাম বেড়েছে কয়েকগুণ। ওষুধের ওপর ভর্তুকি দেওয়ারও দাবি জানান তারা।