নতুন রূপে সাজছে বরিশাল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, পরিণত হবে দর্শনীয়স্থানে

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: ভাষার মাস ঘিরে শুরু হয়েছে শহীদ মিনারের সৌন্দর্যবর্ধন ও আশপাশের এলাকার উন্নয়নকাজ। একুশের চেতনার রঙে চলছে শহীদ মিনার সাজানোর কাজ।

কাজ শেষ হলে শহীদ মিনারের আশপাশের এলাকার সৌন্দর্য ফুটে উঠবে। একই সঙ্গে শহীদ মিনার পরিণত হবে দর্শনীয়স্থানে। এমনটাই জানিয়েছেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) কর্মকর্তারা।

জানা যায়, ১৯৭৩ সালের ৩ জানুয়ারি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বরিশাল সফরকালে এ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। গণপূর্ত অধিদপ্তরের ৬০ শতাংশ জমির উপর এ শহীদ মিনার। এর উচ্চতা ৪৪ ফুট। বরিশালের সাংস্কৃতিক জনদের ভাষ্য মতে রাজধানীর পরে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহীদ মিনার এটি। এছাড়া বরিশালের এ শহীদ মিনারের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি।

বরিশাল শহীদ মিনার সংরক্ষণ কমিটির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা এনায়েত হোসেন চৌধুরী বলেন, ১৯৭৩ সালের ৩ জানুয়ারি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বরিশাল সফরকালে এ শহীদ মিনারটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

আড়াই লাখ টাকা ব্যয়ে এটি নির্মাণ করা হয়। বরাদ্দ হওয়া টাকা পেতে দেরি হওয়ায় এখানকার উদ্যোক্তারা নিজস্ব উদ্যোগে ৫২ হাজার ১১৫ টাকা চাঁদা সংগ্রহ করে নির্মাণ কাজ শুরু করেছিলেন।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর এ উদ্যোগ থমকে দাঁড়ায়। নির্মাণ কাজ সম্পন্ন না হলেও চেতনাদীপ্ত মানুষ প্রতিবছর একুশের ভোরে বঙ্গবন্ধুর ভিত্তিপ্রস্তর করা স্তম্ভেই শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করতো।

পরে ১৯৮৫ সালে শহীদ দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসন আয়োজিত সভায় পূর্ণাঙ্গ শহীদ মিনার নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। তৎকালীন জেলা প্রশাসক আজিজ আহমেদ ১২ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রশাসক সভা কক্ষে ২১ সদস্য বিশিষ্ট শহীদ মিনার নির্মাণ কমিটি গঠন করেন।

পরে ২১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির সদস্য সংখ্যা ৫৭তে উন্নীত করা হয়। পরে নগরীর বিভিন্ন ব্যক্তিদের কাছ থেকে চাঁদা সংগ্রহ করে শহীদ মিনারটি নির্মাণ করা হয়।

শহীদ মিনার নির্মাণে মোট ব্যয় হয় ছয় লাখ টাকা। ১৯৮৬ সালে সাংস্কৃতিক সমন্বয় পরিষদ ১৭ থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পাঁচ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে।

বরিশাল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারটিতে প্রতি বছর একুশে ফেব্রুয়ারির আগে সৌন্দর্যবর্ধন, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও রংয়ের কাজ করা হয়। তাছাড়া এর চারপাশে চারুকলা শিক্ষার্থীরা আলপনা করে এর সৌন্দর্য দ্বিগুণ বাড়িয়ে তোলে।