ঘুস গ্রহণের অভিযোগে দুমকি থানার ওসিসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা

দুমকি (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি:: পটুয়াখালীর দুমকিতে ব্লাকমেইল, নির্যাতন, চাঁদা গ্রহণসহ একাধিক অভিযোগ এনে দুমকি থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আব্দুস সালাম ও দুই এসআইসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন এক যুবক। গত ২১ মার্চ পটুয়াখালী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করা হয়। যার মামলা নং-৫৬।

নালিশী সূত্রে জানা যায়, বাউফল উপজেলার রাজনগর এলাকার সুনাম উদ্দিনের ছেলে মো: জাকির হোসেনের খালাতো ভাই মো: সাদমান সাকিবের নামে উপজেলার আঙ্গারিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা সৈয়দ ফরহাদ হোসেনের স্ত্রী হোসনে আরা বেগম ও মেয়ে রিজোয়ানা হিমেল, শ্রীরামপুর ইউনিয়নের তাহের আলী রুমাসহ একটি সংঘবদ্ধ চক্র মিলে উপজেলার মুরাদিয়া ইউনিয়নে মৃত আলী শরীফের মেয়ে খাদিজা শিমুকে দিয়ে ভুয়া কাবিননামা করে পটুয়াখালী কোর্টে একটি যৌতুক মামলা দায়ের করেন। ঘটনার বিপরিতে পুলিশ সুপার বরাবর সাদমান সাকিবের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন।

বিষয়টি পুলিশ সুপার দুমকি থানাকে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে তদন্ত কর্মকর্তা এসআই দেলোয়ার হোসেন ফোন করে আমাদেরকে থানায় আসতে বলেন। গত (২৮ ফেব্রুয়ারি) মঙ্গলবার সন্ধায় (আমরা) থানায় আসলে পূর্বপরিকল্পিতভাবে ওৎ পেতে থাকা বিবাদীগণ বাদী সাদমান সাকিব এবং সাক্ষী জাকির হোসেনকে দেখেই সবার সামনে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে আহত করেন। পরবর্তীতে পুলিশ উল্টো সাদমান সাকিব এবং জাকির হোসেনকে আটক করেন এবং এসআই সাখওয়াত হোসেন বিবাদীদের পক্ষ নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং বিবাদীদের নারী নির্যাতন মামলা করতে নির্দেশ দেন।  এসময় ওসি আব্দুস সালাম তাদের মোবাইল ফোন কেড়ে নেন। পাশাপাশি ওসি আব্দুস সালাম খাদিজা শিমুকে সাদমান সাকিবের পাসে বসিয়ে ছবি তোলার চেষ্টা করেন এবং ৫০ হাজার টাকা ঘুস দাবি করেন। একপর্যায়ে এসআই সাখওয়াত ও এসআই দেলোয়ার হোসেন, আটক সাদমান সাকিব ও জাকিরের পরিবার থেকে ৩৫ হাজার টাকা ঘুস নিয়ে সাদা কাগজে মুচলেকা নেয় এবং দুজনকে মামলার ভয়ভীতি দেখিয়ে শিখানো কথা দিয়ে ভিডিও ধারণ করেন। একই সাথে ওসি আব্দুস সালাম কেড়ে নেয় মোবাইল ফোন। কোন জব্দ তালিকা না দেখিয়ে মোবাইল রেখে তাদেরকে ছেড়ে দেন।

পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়ে কোন প্রতিকার না পেয়ে উল্টো পুলিশ কর্তৃক নির্যাতনের শিকার হয়ে মো: জাকির হোসেন, দুমকি থানা অফিসার ইনচার্জ মো: আব্দুস সালাম, এসআই দেলোয়ার, এসআই সাখওয়াত হোসেনসহ ঘটনায় জড়িত ১০ জনের বিরুদ্ধে কোর্টে মামলা দায়ের করেন। সংশ্লিষ্ট আদালতের বিচারক মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের আদেশ দিয়েছেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ওসি আব্দুস সালাম বলেন, মামলা হয়েছে আদালতে, সত্যি মিথ্যা যাচাই-বাছাই হবে, এতে আমার কোন মতামত নেই।

পটুয়াখালী পুলিশ সুপার মো: সাইদুল ইসলাম বরিশালটাইমসকে বলেন, মামলার বিষয়ে আমি অবগত আছি। যেহেতু মামলাটি তদন্তধীন আছে আদালতই সত্য মিথ্যা যাচাই করবেন।’