‘শ্বশুরকে খাওয়াতে’ মুরগির ঠ্যাং, গিলা-কলিজাই ভরসা মোটরশ্রমিকের

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম কমতির দিকে। রোজার শুরুতে ২৮০ থেকে ২৯০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও তা কমে ঢাকার বিভিন্ন বাজারে ২১০ থেকে ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এই দামেও মুরগি কিনতে হিমশিম খাচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষ। ফলে অনেকেই গোটা মুরগি কিনতে না পেরে ভরসা রাখছেন মুরগির ঠ্যাং আর গিলা কলিজায়। আজ শুক্রবার কারওয়ান বাজার মুরগির দোকানে কথা হয় মোহাম্মদ আলালের সঙ্গে। মোটরশ্রমিক আলাল থাকেন বেগুনবাড়ি এলাকায়।

আলাল জানান, বাসায় শশুর এসেছে, তাই ভালোমন্দ কিনতে কারওয়ান বাজার এসেছেন। ১৪০ টাকা দরে মুরগির ঠ্যাং কিনছেন সঙ্গে সামান্য গিলা কলিজাও নিয়েছেন। আলাল বলেন, ‘যে টাকা পাই, ঘরে ভাড়াতেই অনেক চলে যায়। বেতনে পোষায় না, খুব কষ্ট, টানা-খিচার মধ্যে আছি।’

বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করেন পুরান ঢাকার বকশীবাজার এলাকার আবু সাঈদ। কম দামে সবজি কিনতে এসেছেন কারওয়ান বাজারে। তিনি লাল শাক কিনেছেন ২০ টাকায়, মিষ্টি কুমরার একভাগ কিনেছেন ৩০ টাকায়, ৬০ টাকায় কিনেছেন সজনে ডাটা।

কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা জরিপ মন্ডল জানান, রোজা দুইতিন যাওয়ার পর সবজির দাম কিছুটা কমেছিল। এখন বিভিন্ন সবজির দাম ৫ থেকে ১০ টাকা দাম বেড়েছে।

বিশেষ করে গত একদিনে ঢেড়সের দাম ১০ টাকা বেড়েছে। গতকাল ৪০ টাকা দামে ঢেড়স বিক্রি করলেও আজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। তবে কারওয়ান বাজারের তুলনায় ঢাকার অন্য বাজারে সবজির দাম অনেক বেশি। রামপুরা বনশ্রী-এ ব্লকের সবজি দোকানি রিয়াজ হোসেন বলেন, ‘কাঁচামালের দাম ওঠানামা করে।’ তিনি টমেটো বিক্রি করছেন ৫০ টাকায়। ঢেড়স ৮০ টাকা, পটল ৮০ টাকা ও বেগুন ৮০ টাকা।

পলাশীর বুয়েট বাজারের সবজি বিক্রেতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘কেনায় বেশি পড়ছে, তাই বিক্রিও করতে হচ্ছে বেশি দামে। এছাড়া পাইকারি কেনার পর যাতায়াত খরচ যোগ হয়। সবজি নষ্ট হলে তা বিক্রি থেকেই খরচ ওঠাতে হয়। সেজন্যই দাম একটু বেশি।’

এদিকে বাজার ঘুরে দেখা গেছে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭৫০ টাকায়। আর খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১১শ টাকায়। মাছের বাজারেরও দেখা গেছে চড়া দাম। কিছুটা কমেছে ডিমের দাম। ডজন বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়।