গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ১০ আসামির সর্বোচ্চ সাজার রায় দিয়েছে আদালত। ঢাকার ২ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মমতাজ বেগম রোববার (২০ আগস্ট) এই রায় ঘোষণা করে বলেন, “হাই কোর্টে বিভাগের অনুমোদন সাপেক্ষে মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত নির্ধারিত পদ্ধতিতে গুলি করে দশ আসামির দণ্ড কার্যকর করা হোক।”

সতের বছর আগের ওই ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইন ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের দুটি মামলার অপর ১৩ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

মামলায় অভিযোগপত্রভুক্ত ২৫ আসামির মধ্যে হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি আবদুল হান্নানের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে অন্য একটি মামলায়। এ কারণে তার নাম এ মামলা থেকে বাদ দেওয়া হয়।

বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে নাশকতা ও গুরুতর অন্তর্ঘাতমূলক তৎপরতার অভিযোগ আনা হয়েছিল, যার সর্বোচ্চ শান্তি ছিল মৃত্যুদণ্ড

মুফতি হান্নান বাদে মামলার বাকি ২৪ আসামির মধ্যে ১০ জনের মৃত্যুদণ্ড; একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা; তিনজনকে ১৪ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

অপরাধে সংশ্লিষ্টতা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় এ মামলার ১০ আসামি আদালতের রায়ে খালাস পেয়েছেন।

এই আদালতেই রায় হবে শেখ হাসিনাকে কোটালীপাড়ায় হত্যাচেষ্টার মামলার
বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় মুফতি হান্নান বাদে আসামি ছিলেন ১৩ জন। তাদের মধ্যে নয় জনকে ২০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। খালাস পেয়েছেন চারজন।

কোটালীপাড়ার একটি কলেজের কাছে ২০০০ সালের ২০ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভামঞ্চের নির্ধারিত স্থান ও হ্যালিপ্যাডে মাটিতে পুঁতে রাখা ৭৬ ও ৮০ কেজি ওজনের দুটি বোমা পাওয়ার পর এই মামলা করে পুলিশ।

রায়ের পর এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ শামসুল হক বাদল সাংবাদিকদের বলেন, তিনি ‘আংশিক সন্তুষ্ট’। রায়ের কপি পাওয়ার পর আপিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।

অন্যদিকে আসামিপক্ষের অন্যতম আইনজীবী ফারুক আহম্মেদ বলেন, তার মক্কেলদের ‘টাকা পয়সা নেই’। তারা জেল আপিল করবেন।

দণ্ডাদেশ পাওয়া আসামিরা এই রায়ের ৩০ দিনের মধ্যে হাই কোর্টে আপিল করার সুযোগ পাবেন।”