নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: লক্ষ্মীপুরে চোর অপবাদ দিয়ে আক্তার হোসেন বাবু নামে এক স্কুল শিক্ষককে বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন চালিয়েছে বখাটেরা। এ ঘটনায় রোববার (১৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় নির্যাতনের মূল হোতা সুমন ওরফে পেঁচা সুমনসহ পাঁচজনের নাম উল্লেখ এবং আরও আটজনকে অজ্ঞাত আসামি করে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন নির্যাতিত স্কুল শিক্ষকের ভাই মাসুদুর রহমান। নির্যাতনের একটি ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

এর আগে গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের আইয়ুব আলী পোলের গোড়া নামক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ওই শিক্ষককে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি। বাবু জেলার সদর উপজেলার পৌরসভার লাহারকান্দি এলাকার মৃত লকিয়ত উল্যাহর ছেলে। তিনি ঢাকার ক্যামব্রিজ স্কলারর্স স্কুলের শিক্ষক।

১৬ সেকেন্ডের একটি ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, শিক্ষক আক্তার হোসেন বাবুকে একটি খুঁটির সঙ্গে হাত-পা বেঁধে একটি লাঠি দিয়ে পেটাচ্ছেন সুমন ওরফে পেঁচা সুমন নামে এক যুবক। এসময় পাশে বেশ কয়েকজন লোক ঘটনাটি দাঁড়িয়ে দেখছেন। নির্যাতনে তাদেরও সহযোগিতা ছিল। নির্যাতনের ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় অভিযুক্ত বখাটেদের গ্রেপ্তারের দাবি জানায় এলাকাবাসী।

নির্যাতনের শিকার শিক্ষকের পরিবার জানান, ঈদের ছুটিতে বাড়িতে আসেন স্কুল শিক্ষক বাবু। শুক্রবার রাতে পৌরসভার আইয়ুব আলী পোলের গোড়া এলাকায় ছোটভাই মাসুদুর রহমানের বাসায় বেড়াতে যান তিনি। ডায়াবেটিস থাকায় রাতে হাঁটতে বের হন বাবু।

এ সময় পেঁচা সুমন, সাইমন হোসেন, অটোরিকশাচালক আলাউদ্দিন আলো, মমিন উল্যাহ ও সুমনসহ ১০ থেকে ১২ জনের একদল বখাটে ওই শিক্ষককে চোর অপবাধ দিয়ে বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে হাত-পা বেঁধে ফেলেন। পরে তাকে পিটিয়ে আহত করা হয়। স্থানীয় লোকজন তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে যান।

শিক্ষক পরিবারের অভিযোগ, বখাটেরা তার কাছে থাকা নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়েছে। সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. একে আজাদ বলেন, আক্তার হোসেন বাবুকে বেদম মারধর করা হয়েছে। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

অভিযুক্ত সুমন গা-ঢাকা দেওয়ায় এ বিষয়ে তার বক্তব্য জানা যায়নি। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুদ্দিন আনোয়ার সাংবাদিকদের বলেন, এ ঘটনায় একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।