নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল:‍ সারাদেশের মতো কুয়াকাটাসহ উপকূল জুড়েও চলছে তাপপ্রবাহ। প্রচণ্ড গরম ও তাপদাহে জনজীবন অতিষ্ট হয়ে পড়েছে। শ্রমজীবি-খেটে খাওয়া মানুষগুলো কাজ করতে না পারায় পরিবারের ভরণপোষণ নিয়ে পড়ছে বিপাকে।

অনাবৃষ্টি ও তাপপ্রবাহে উপকূলের বনাঞ্চলের গাছের পাতাও ঝড়ে যাচ্ছে, মানুষ হয়ে পড়ছে অসুস্থ। শিশুসহ অনেকে ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়ে কাতরাচ্ছে। শুধু মানুষ নয় পশু পাখিকেও গরম থেকে স্বস্তি পেতে গাছের ছায়া, পানির ডোবায় শরীর ভেজাতে দেখা গেছে।

গ্রামাঞ্চলের খাল বিল, নদী-নালাগুলো শুকিয়ে মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে। পুড়ছে উপকূলের রবি শস্যের ক্ষেত খামার। লোকসানের প্রহর গুণতে হচ্ছে প্রান্তিক চাষিদের। কুয়াকাটার নয়াপাড়া এলাকার কৃষক মনির হোসেন বলেন, ‘এ বছর বৃষ্টি না হওয়ার কারণে আমার তরমুজ, ডাল ও ভূট্টা ক্ষেতে লাভ তো দূরের কথা প্রায় তিন লক্ষাধিক টাকা লোকসান গুণতে হবে। আমার কাছে যে টাকা ছিল তা এই ক্ষেতের পেছনেই শেষ করে ফেলছি, জানি না কিভাবে এই ঋণ পরিশোধ করব।’

বেসরকারি সংস্থা এসএসডিপির নির্বাহী পরিচালক মো: হাবিবুর রহমান বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পানির স্তর নিচে চলে গেছে। এছাড়া অনাবৃষ্টি ও অতিরিক্ত দাপদাহর পাশাপাশি আঁকাবাঁকা নদীগুলো প্রভাবশালীদের দখলে। ফলে নদী-নালার পানি শুকিয়ে মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার মতো কাউকে না কাউকে নেতৃত্ব দিয়ে এসব খাল দখল মুক্ত করতে হবে কৃষকদের স্বার্থে।’ কলাপাড়া উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সুজন মাহমুদ বলেন, ‘অনাবৃষ্টির প্রভাবে বর্তমানে কোনো প্রকার চাষাবাদ করা সম্ভব নয়, তাই বৃষ্টি একান্ত প্রয়োজন।

একটু বৃষ্টি হলে চাষাবাদ শুরু করতে হবে। তবে দেশের স্বার্থে নিজেদের স্বার্থে বেশি বেশি বৃক্ষ রোপণ করতে হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘যে সকল নদী-নালা প্রভাবশালীদের দখলে রয়েছে সেগুলো দখল মুক্ত করতে হবে।’