সরকারি চাকুরি করে অফিসে না গেলেও বেতন পাওয়া যায়। একটু আধটু গেলেও নিজের ইচ্ছা মত ঘুরাফেরা করে, বাসায় ঘুমানো যায়। কাজে ফাঁকি দিয়ে হাজারো অনিয়মে চললেও কাউকে কৈফিয়ত দিতে হয় না। বছর বছর নতুন মোটরসাইকেল, চকচকে শার্ট প্যান্ট, ফুরফুরা মেজাজে চিফ হুইপ আ.স.ম ফিরোজের অজান্তে তার নাম ভাঙিয়ে দৌড়ায় যে সর্বক্ষণ তিনি ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারি প্রকৌশলী মো. জহিরুল হক খান।
তার অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতায় কার্যালয়টির কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়েছে। উপ-সহকারি প্রকৌশলী থেকে সহকারি প্রকৌশলী পদে পদোন্নতি পাওয়ার পর অন্যত্র বদলি হওয়ার নিয়ম থাকলেও তিনি এখনও নলছিটিতে কর্মরত রয়েছেন। সবমিলিয়ে নলছিটি উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরটিতে বর্তমান হ-য-ব-র-ল অবস্থা বিরাজ করছে।
ভুক্তভোগি ও প্রত্যক্ষদর্শীরা অভিযোগ করেন, উপজেলার মধ্যে এ কার্যালয়টি অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। কিন্তু বর্তমান সহকারী প্রকৌশলী জহিরুল হকের অনিয়মের কারণে কর্মচারীরাও অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন। ফলে কার্যক্রম স্থবির হয়ে রয়েছে।
জানা গেছে, ঝালকাঠির নলছিটি পৌর এলাকায় পাইপ লাইনের মাধ্যমে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহে উপজেলার নান্দিকাঠিতে নির্মাণ করা হচ্ছে ‘সারফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট’। এ নির্মাণ কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ কোটি ৭৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। ঢাকার মেঘনা স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ২০১৭ সাল থেকে নির্মাণ কাজ শুরু করেছেন। ইতোমধ্যে পাইপ লাইন বসানো এবং বোরিংয়ের অধিকাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্মাণ কাজে ব্যবহার করছেন নিম্নমানের উপকরণ। সম্প্রতি ঠিকাদার ঢালাইয়ের জন্য মজুদ করেন নিম্নমানের পাথর, রড ও বালি। পরে স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর ও এলাকাবাসী নিম্নমানের ওই উপকরণ ব্যবহারের বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করলেও কর্তৃপক্ষ নিরব ভূমিকায় রয়েছেন বলে তাদের অভিযোগ। সহকারি প্রকৌশলী জহিরুল হক ঠিকাদারের সঙ্গে গোপনে আঁতাত করে নিম্নমানের এসব উপকরণ দিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে সহকারি প্রকৌশলী জহিরুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে কোন তথ্য দেয়া যাবে না। কোন তথ্য পেতে হলে তথ্য অধিকার আইনের লিখিতভাবে তথ্যপ্রাপ্তির আবেদন করতে হবে।
অফিসে নিয়মিত না আসা ও হাজিরা খাতার কথা জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।
এ ব্যাপারে নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আশ্রাফুল ইসলাম বলেন, ‘এ কাজের ব্যাপারে সহকারি প্রকৌশলী জহিরুল হক আমাকে এখনও কিছু জানননি। উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত না করার বিষয়টি ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসক স্যারকে জানানো হয়েছে।’