বরিশাল শহরের বগুরা রোড এলাকার ‘‘তৃপ্তি কোচিং সেন্টার’’র আড়ালে দীর্ঘদিন যাবত দেহব্যবসার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সম্প্রতি ওই কোচিং সেন্টারটির পরিচালকের একটি আপত্তিকর ভিডিও ফাঁস হয়ে যাওয়ায় পুরো বিষয়টি প্রকাশ হয়ে যায়। এখন এই বিষয়টি নিয়ে ওই কোচিং সেন্টারটিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের মাঝে তোলপাড় চলছে।

এমতাবস্থায় অনেক অভিভাবক কোচিং সেন্টারটি থেকে তাদের শিশুদের সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন বলে শোনা গেছে। এই বিয়ষটি শিক্ষার্থীদের মাছে জানাজানি হলে শিক্ষা ব্যবস্থায় বিরুপ প্রভাব পড়বে বলে মনে করছে সচেতন মহল। এমন বাস্তবতায় ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি বন্ধে দ্রুত জেলা প্রশাসনকে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।

খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে- হাসপাতাল রোড হ্যাপি নিবাস লাগোয়া ও বগুরা রোড এলাকায় ওই কোচিং সেন্টারটি দুটি শাখা ‘‘অক্সফোর্ড কোচিং সেন্টার’’ নামে পরিচিত ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিকালে সেটির নাম বদলে ‘‘তৃপ্তি কোচিং সেন্টার’’ করেন মালিক পরিচালক কেরোলা তৃপ্তি। বরিশাল শহরের বগুরা রোডের নাহার মঞ্জিলের তারই পরিচালনায় ‘‘তৃপ্তি’’ নামক আরও একটি কোচিং সেন্টার পরিচালিত হচ্ছে।

মূলত কোচিং সেন্টারটির দুটি শাখাতেই সমানতালে দেহব্যবসা চালিয়ে আসছেন এমভি কীর্তনখোলা ১০ লঞ্চের সুপারভাইজার জন’র স্ত্রী তৃপ্তি। অভিযোগ রয়েছে- কোচিং সেন্টার পরিচালক চলি¬শার্দ্ধো নারী তৃপ্তি নারী শিক্ষকদেরও এই ব্যবসায় পর্যায়ক্রমে যুক্ত করেন। কোচিং সেন্টারের অন্তরালে এই ব্যবসা করে তিনি কোটি কোটি টাকা কামিয়েছেন বলেও শোনা যাচ্ছে। বিশেষ করে ওই ভিডিও চিত্রটি ফাঁস হওয়ার পরে কোচিং সেন্টারে দেহব্যবসার পুরো বিষয়টি ফাঁস হয়ে গেছে।

সেই ভিডিও চিত্রটি বরিশালটাইমস’র এ প্রতিবেদকের হাতেও এসেছে। ১ মিনিট ৫৯ সেকেন্ডের ওই ভিডিওটিতে আপত্তিকর অবস্থায় কোচিং মালিকের সাথে এক যুবককে দেখা গেছে। ভিডিও চিত্র দেখে অনুমান কোচিং সেন্টারটির ভেতরে বসে এক যুবকের সাথে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের সময় কেউ জানালার পাশ থেকে পুরো বিষয়টি মোবাইল ফোনে ধারণ করেন।

তাছাড়া খোঁজখবর নিয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে- অসামাজিক কার্যকলাপে অংশ নেওয়া ওই যুবকের নাম সুবজ। তার বাড়ি শহরের নথুল্লাবাদ এলাকায়। তিনি প্রায়ই কোচিং সেন্টারটিতে এসে পরিচালক তৃপ্তির সাথে সময় কাটিয়ে যান। সবুজ রাজশাহীতে একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকুরি করেন।

কোচিং সেন্টারটির দুটি শাখায় গিয়ে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের সাথে আলাপচারিতায় জানা গেছে- পরিচালকের আপত্তিকর ভিডিও প্রকাশ হওয়ার খবরে দুটি শাখার শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে গেছে। অনেক অভিভাবক তাদের শিশু সন্তানদের নিয়ে অন্যত্র কোচিং সেন্টারগুলোতে ভর্তি করছেন।

এমতাবস্থায় ওই কোচিং সেন্টারের পরিচালক ক্লারা তৃপ্তির সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি গোপন রাখতে সমঝোতার প্রস্তাব দিয়ে অফিসে দেখা করতে বলেন। এদিকে অভিযুক্ত সবুজের মুঠোফোনে শতাধিক ফোন দিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।

এমন বাস্তবতায় তৃপ্তির স্বামী জনও স্ত্রীর পক্ষে সাফাই গাইছেন। যদিও পরবর্তীতে তিনি একই প্রস্তাব দিয়ে পুরো বিষয়টি চেপে যাওয়ার অনুরোধ করেন।

এই ধরণের একটি বিষয়ে স্ত্রীর পক্ষে স্বামীর অবস্থান নানা প্রশ্নের সৃষ্টি করেছে।

অনেকে অভিযোগ করে বলছেন- কোচিং সেন্টারের আড়ালে দেহব্যবসা চালিয়ে যেতে তৃপ্তিকে তার স্বামী সহযোগিতা করছেন (!) যদিও এই অভিযোগ জন পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন।

এমতাবস্থায় বরিশাল জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান বলেন- বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত নন। তবে খোঁজখবর নিয়ে দেখবেন। পরবর্তীতে তদন্ত করে এই ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে কোচিং সেন্টারটির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’’