শরীয়তপুরের ৬ উপজেলার মাঠে মাঠে এখন পাকা ধান। তবে শ্রমিক সঙ্কটে ধান কাটতে পারছেন না অনেক কৃষক। পাইকারি বাজারে প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬৫০ টাকায়। যা গত বছরের থেকে ২০০ টাকা কম। আর একজন শ্রমিককেই দৈনিক মজুরি দিতে হচ্ছে ৫০০-৬০০ টাকা। তবুও মিলছে না শ্রমিক। সব মিলিয়ে বোরো ধান নিয়ে অসন্তুষ্ট কৃষকরা।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, এ বছর জেলার ছয় উপজেলায় বোরো ধান চাষের জন্য ২৭ হাজার ৪৯৩ হেক্টর জমির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া থাকা সত্ত্বেও কৃষকদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে ২৮ হাজার ১৮০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়। কয়েকবার ঝড়ো হাওয়ায় বোরো ধানের ক্ষতি হয়েছে।

শরীয়তপুর সদর উপজেলার চাষি মো. হেলাল সিকদার জানান, এক মণ ধানের দাম মজুরি দিয়েও মিলছে না একজন শ্রমিক। শ্রমিক মিললেও জনপ্রতি মজুরি দিতে হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। সঙ্গে থাকছে আবার দুই বেলা খাবার। অন্যান্য খরচ তো আছেই। চলতি বোরো মৌসুমে ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টির কারণে শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। তাই কৃষক নিজেরাই ধান কাটতে নেমে গেছেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-সহকারী কৃষি অফিসার বিষ্ণুপদ বিশ্বাস জানান, চলতি বোরো মৌসুমে এ জেলায় ২৮ হাজার ১৮০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়েছে। এতে ১ লাখ ১৩ হাজার ২৪ মেট্রিক টন ধান পাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

কৃষকরা জানান, কমবেশি সব এলাকায় বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। তাই শ্রমিকদের চাহিদা বেশি। ধান কাটার জন্য শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। তাই রাজবাড়ি জেলা থেকে কিছু শ্রমিক এনে তাদের সঙ্গে নিজেরাও ধান কাটছেন।

আংগারিয়া বাজারের ধান ব্যবসায়ী দেলোয়ার হাওলাদার বলেন, ঘন ঘন বৃষ্টির কারণে ধানের দাম গত বছরের চেয়ে মণ প্রতি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা কমে কিনছি। এ বছর কৃষকদের কাছ থেকে ভেজা ও শুকনা প্রতি মণ ধান কিনছি ৫০০ থেকে ৬৫০ টাকা দরে। যা গত বছর ছিল ৭০০ থেকে ৮৫০ টাকা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের (খামারবাড়ী) উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. রিফাতুল হোসাইন জানান, এবার জেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বোরো ধান বেশি অর্জিত হয়েছে। তবে দাম কম, তারা কৃষকদের ধান ভালোভাবে শুকিয়ে সংরক্ষণ করার পরামর্শ দিচ্ছেন। যাতে সংরক্ষিত ধান কৃষকরা পরে বিক্রি করে ভালো দাম পান ও লাভবান হন।