নির্বাচন পূর্ব একজন কাউন্সিলর প্রার্থী কতটা ভয়ংকর সন্ত্রাস জন্ম দিতে পারেন তার একটি বাস্তব উদাহরণ মিলেছে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের ১১ নম্বর ওয়ার্ডে। ওই ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ক্ষমতাসীন আ’লীগের প্রার্থী দাবিদার মজিবর রহমান ধারাবাহিক সন্ত্রাস সৃষ্টি করে পুরো এলাকাকে একটি আতঙ্কের জনপদ হিসেবে পরিনত করেছে।

অভিযোগ রয়েছে বেশ কয়েক ভাই মিলে একটি সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলেছে ক্ষমতার গত ৫ বছরে। এই বাহিনী আগামী ৩০ জুলাই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীদের এলাকাছাড়া করতে স্বশস্ত্র সন্ত্রাস সৃষ্টি করছে। এমনকি এলাকার নিরপরাধ মানুষকেও ভোটের আগে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের অনুকুলে নেওয়ার একটি সুযোগ খুঁজছে। মজিবরের এই মূর্তিমান সন্ত্রাসের বর্তমান ও অতীত ইতিহাস তুলে ধরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা কামনা করেছেন ওই ওয়ার্ডের প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী রেজাউল ইসলাম রাজা।

অভিযোগকারী এই রাজাও ক্ষমতাসীন আ’লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। এই প্রার্থীর অভিযোগ আসন্ন নির্বাচনে ফায়দা লুটতে মজিবর তার ভাই ও সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে ওয়ার্ডে ধারাবাহিক সন্ত্রাস চালাচ্ছে। প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী ও তার সমর্থকদের নির্বাচনী মাঠ থেকে তাড়াতে হয়রানির ওপরে রাখছে। বস্তুত কাউন্সিলর মজিবরের ভাবনা হচ্ছে নির্বাচন পূর্ব ভয়াত্বক সন্ত্রাস চালিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী ও তার সমর্থকদের এলাকা ছাড়া করে আধিপত্য বিস্তার করা। এই মিশন বাস্তবায়িত হলে ৩০ জুলাই ভোটের মাঠে একক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় তিনি সক্ষম হবেন বলে শোনা যাচ্ছে। যে কারণে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার আগেই প্রার্থী রেজাউল ইসলাম রাজা তার অভিযোগটি বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার বরাবর তুলে ধরলেন। অবশ্য কমিশনারের নির্দেশে এই বিষয়টি বর্তমানে তদন্তনাধীন রয়েছে।

এছাড়াও ক্ষমতার গত ৫ বছরের ওয়ার্ডে সন্ত্রাস ও মাদক বাণিজ্যের মত ঘটনায়ও জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে মজিবরের বিরুদ্ধে। প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী রেজাউল ইসলাম রাজা ওই অভিযোগে বলেন-কাউন্সিলর মজিবর তাকে অস্ত্র ও মাদক দিয়ে ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুঙ্কার করেছেন। ফলে অনেকটা ভয় পেয়ে তিনি ও তার কর্মী-সমর্থকরা আতঙ্কিত রয়েছেন। যে কারণে বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করতে তিনি বাধ্য হয়েছেন। এই বিষয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার (ভারপ্রাপ্ত) মাহফুজুর রহমান সাংবাদিকদের জানিয়েছেন পুরো বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।

নির্বাচন পূর্ব এ ধরনের অপরাধ বা অপরাধীকে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। তদন্ত করে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে এই সকল অভিযোগ অস্বীকার করলেন কাউন্সিলর মজিবর রহমান। তার দাবি প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী নির্বাচনে ফায়দা লুটতে এমন অভিযোগ করে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। এমনকি মজিবর নিজেকে ক্ষমতাসীন আ’লীগের প্রার্থী দাবি করে বলেন- কোন ধরনের সন্ত্রাসের উদাহরণ নেই তার বিরুদ্ধে। এমতাবস্থায় প্রশ্ন হচ্ছে মজিবর নিজেকে কিভাবে আ’লীগের প্রার্থী দাবি করলেন। যদিও এমন প্রশ্নের কোন উত্তর নেই এই কাউন্সিলরের কাছে।

কারণ অনেকটা আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতাসীন আ’লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের মিডিয়াকে জানিয়ে দিয়েছেন ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে আ’লীগের কোন সমর্থন থাকবে না। এই নেতার ভাষ্য হচ্ছে এবারের সিটি নির্বাচনে কাউন্সিলর প্রার্থীদের নিয়ে ভাবার সুযোগ নেই। সুতরাং ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদটি উন্মুক্ত রেখে শুধু সমর্থিত মেয়র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করবেন নেতাকর্মীরা এমন দিক নির্দেশনাই দেয়া হয়েছে।’