বরিশাল: বরিশালের কীর্তনখোলা নদীতে ঢাকাগামী সুরভি-৭ লঞ্চের সঙ্গে বরিশালগামী পিএস মাহসুদ স্টিমারের সংঘর্ষে ৫ যাত্রী নিহত হয়েছেন। এসময় আহত হয়েছেন আরও ৫ জন। সোমবার ভোররাত ৪টার দিকে বরিশাল সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়ন সংলগ্ন কীর্তনখোলার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতদের মধ্যে দুইজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে।

 

তারা হলেন- বরিশাল নগরীর কাউনিয়া ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা জামাল উদ্দিনের মেয়ে তামান্না (১২) এবং বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জের সীমা আক্তারের (২০)। বাকি ৩জনের পরিচয় নিশ্চিত হতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।’ এ ঘটনায় আহতরা হলেন, বরিশাল নগরীর কাশিপুর এলাকার কালু (৩৫), মোড়লগঞ্জের ফারজানা (২০), বাগেরহাট সদরের শাকিল সরদার (২৩), রুবেল (২২) এবং চাঁদপুরের নুরুল ইসলাম (৫০)।

 

তাদের বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।’ পিএস মাহসুদের মাস্টার জয়নাল আবেদিন জানান, স্টিমারটি ঢাকা থেকে চাঁদপুর হয়ে বরিশালের দিকে যাচ্ছিল। সেই সময় নদীর চরবাড়িয়া এলাকায় ঢাকামুখী সুরভি-৭ লঞ্চটি টানা হর্ন দেয়। নৌ আইন অনুযায়ী এক টানা হর্ন দিলে নৌযান যে যার ডান দিক থেকে চলে।

 

আইন মোতাবেক স্টিমারটি ডান দিকে নিয়ে যাওয়া হলেও লঞ্চটি দিক পরিবর্তন না করে স্টিমারকে ধাক্কা দেয়। এতে স্টিমারের বাম দিকের প্যাডেলসহ ডেকের অংশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়। কয়েকটি কেবিন যাত্রীদের নিয়ে দুমড়ে-মুচরে যায়। পরে স্টিমারটি নদীর ওই স্থানে নোঙর করে উদ্ধার অভিযান শুরু করা হয়। বরিশাল বিআইডব্লিউটিসির সহকারী মহাব্যবস্থাপক আবুল কালাম বাংলামেইলকে জানান, ঘটনার পরপরই আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।’ সেই সাথে নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সদস্যরা।

 

বরিশাল বিআইডব্লিউটিসি জানিয়েছে- স্টিমারটিতে ৭শ মতো যাত্রী ছিল। তাদের আরেকটি সরকারি জাহাজ এমভি মধুমতির সাহায্যে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।’ বরিশাল বিআইডব্লিউটিএর প্রধান কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান- স্টিমারটিকে টাগবোট দুর্বারের সাহায্যে টেনে বরিশাল নৌ বন্দরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সুরভি-৭ ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে।’

 

 

বরিশাল ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ফারুক হোসেন জানান, তারা ৩ জন নারীসহ ৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছেন। উদ্ধার অভিযান সকাল ৯টায় শেষ হয়েছে।’ বেলা ১০টার দিকে বরিশালের জেলা প্রশাসক ড. গাজী মো. সাইফুজ্জামান, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার এসএম রুহুল আমিন, পুলিশ সুপার এসএম আকতারুজ্জামানসহ জেলা প্রশাসন, নৌ পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

 

পরিদর্শন শেষে জেলা প্রশাসক ড. গাজী মো. সাইফুজ্জামান জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আহতদের চিকিৎসায় সার্বিক সহযোগিতা এবং এছাড়া নিহতদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেন।’