বরিশাল-ঢাকা রুটে খুব শিগগির চালু হতে যাচ্ছে অত্যাধুনিক বিলাসবহুল লঞ্চ ‘এমভি মানামি’। বাংলাদেশে এই প্রথম রিমোট কন্ট্রোলিং সিস্টেমে লঞ্চটি নির্মাণ করা হয়েছে।

ইতোমধ্যে লঞ্চের কাজ ৮৫ শতাংশ শেষ হয়েছে। এ বছরের শেষের দিকে অথবা আগামী বছরের জানুয়ারির শুরুতে লঞ্চটি যাত্রা শুরু করবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

লঞ্চ কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রায় ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৯৬ ফুট দৈর্ঘ এবং ৫০ ফুট প্রস্থের লঞ্চটি চারতলা বিশিষ্ট। লঞ্চে জরুরি রোগীদের জন্য একটি আইসিসিইউ কেবিনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও জিপিআরএস ও ইকো সাউন্ডার সিস্টেমের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যাত্রী সাধারণের জন্য ওয়াইফাই নেটওয়ার্কিংয়েরও ব্যবস্থা রয়েছে। ২ হাজার ৭০০ হর্স পাওয়ার ইঞ্জিন থাকায় লঞ্চটি খুব দ্রুতগতি সম্পন্ন হবে।

সালাম শিপিং লাইন্স কোম্পানির লঞ্চটি নির্মাণ করছে দেশীয় কোম্পানি থ্রি এঙ্গেল করপোরেশন। লঞ্চটিতে ৭৬টি সিঙ্গেল, ৬৪টি ডাবল, ছয়টি ভিআইপি, ১২টি সেমি ডাবল কেবিন এবং ৩২টি সোফার ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়াও ডেকে নারীদের জন্য ড্রেস চেঞ্জ রুম ও শিশুদের জন্য বেবি ফিডিং এবং আলাদা ডাইনিং রয়েছে। লঞ্চের চারপাশে ফগ লাইট এবং ফিস ফাউন্ডার রয়েছে। যা থেকে মনিটরে পানির তলদেশে মাছ দেখা যাবে।

এমভি মানামি লঞ্চের ম্যানেজার জসিম উদ্দিন বলেন, লঞ্চটি ২০১৬ সালের পহেলা এপ্রিল থেকে নির্মাণ কাজ শুরু হয়। প্রতিদিন গড়ে ৭৯/৯০ জন শ্রমিক নির্মাণ কাজে অংশ নেয়। গত ২ বছর ৭ মাসে লঞ্চের ৮৫ শতাংশ কাজ সমাপ্ত হয়েছে, এখন চার তলার কাজ চলছে। ডিসেম্বর কিংবা জানুয়ারিতে পানিতে ভাসবে মানামি।

সালাম শিপিং লাইন্সের পরিচালক আহম্মেদ জকি অনুপম বলেন, দেশে এই প্রথম অত্যাধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে লঞ্চটি নির্মাণ করা হয়েছে। লঞ্চের চারপাশে ৩২টি সিসি ক্যামেরা রয়েছে। লঞ্চের যাত্রী ও লঞ্চের অবস্থান দেখার জন্য দেশ-বিদেশ থেকে লাইভ মুভিং দেখা যাবে। ইউটিউব থেকে সার্চ করে সরাসরি লঞ্চের অবস্থান দেখতে পাওয়া যাবে। সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হচ্ছে লঞ্চটির তলদেশ ডাবল বোটমে নির্মাণ করা হয়েছে যা এই প্রথম।

তিনি আরো জানান, লঞ্চটি পরিচালনার জন্য দুইজন প্রথম শ্রেণির সুকানি, দুইজন মাস্টার এবং চারজন গ্রিজার রয়েছে। যেকোন সময় যেকোন পরিস্থিতিতে রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে লঞ্চটি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। সিপিআরএস’র মাধ্যমে গভীরতা নির্ণয় এবং দূরের ডুবোচর সহজেই দেখা যাবে। বিলাসবহুল লঞ্চটিতে সব ধরনের আধুনিক প্রযুক্তি রাখা হয়েছে, যা যাত্রীদের জন্য আরামদায়ক।