‘এই রূপালী গিটার ফেলে একদিন চলে যাবো দূরে বহু দূরে’, ‘অভিলাষী আমি, অভিমানী তুমি… আর বেশি কাঁদালে উড়াল দেবো আকাশে’, ‘সেই তুমি কেন এত অচেনা হলে… তুমি ক্ষমা করে দিও আমায়।’

সদ্যপ্রয়াত কিংবদন্তি সঙ্গীতশিল্পী আইয়ুব বাচ্চুর জনপ্রিয় এই গানে গানে তাকে স্মরণ করেছেন বরগুনার উন্নয়ন কনসার্টের সঙ্গীতশিল্পীরা। সঙ্গীতশিল্পীদের কণ্ঠে কণ্ঠ মিলিয়ে অশ্রুসিক্ত নয়নে এসব গান গেয়ে আইয়ুব বাচ্চুকে স্মরণ করেছেন কনসার্টে আগত আইয়ুব বাচ্চুর ২০ সহস্রাধিক ভক্ত ও শ্রোতা।

কিংবদন্তি এই সঙ্গীতশিল্পীর মূত্যুর দিনে তার ভক্তরা কেউ বা এসেছেন কালো ব্যাচ ধারণ করে আবার কেই কেউ এসেছেন শোক জানিয়ে ব্যানার-ফেস্টুনে লিখে নিয়ে।

সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে বরগুনা জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় বরগুনা স্টেডিয়ামে এ উন্নয়ন কনসার্ট অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন দেশের জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী জেমস, বাপ্পা মজুমদার, পুলক এবং মেহেরীনসহ স্থানীয় শিল্পীরা।

আইয়ুব বাচ্চুর স্মৃতিচারণ করে উন্নয়ন কনসার্টে সঙ্গীতশিল্পী পুলক বলেন, ‘গত কয়েকদিন আগেও আমরা এই উন্নয়ন কনসার্টে একই মঞ্চে গান গেয়েছি। আগামী কয়েকদিন পরও একই মঞ্চে আমাদের আবারও গান গাওয়ার কথা ছিল। অথচ তিনি হঠাৎ করে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে আমাদের মাঝ থেকে চলে গেছেন। তাকে ভীষণ মনে পড়ছে আমার।’

কণ্ঠশিল্পী মেহেরীন বলেন, ‘বাচ্চু ভাই নিজেই সঙ্গীত ছিলেন। তিনি সঙ্গীত হয়েই আমাদের মাঝে সারাজীবন বেঁচে থাকবেন। আমার মতো কোটি কোটি ভক্তের হৃদয়ে চিরজীবী হয়ে থাকবেন তিনি।’

বরগুনার উন্নয়ন কনসার্টে আইয়ুব বাচ্চুকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করে বাপ্পা মজুমদার বলেন, ‘আমি সেই সময়ে গান শুনেছি বাংলাদেশের, যেই সময়ে আইয়ুব বাচ্চু ভাই গান গেয়েছেন। আমি সেই সময়ের সাক্ষী, যেই সময়ে বাচ্চু ভাইকে দেখেছি দুর্দান্ত গিটার বাজাতে। মন্ত্রমগ্ধের মতো শুনেছি আমি সেই গিটারের শব্দ। আমি অনেক মর্মাহত।’

আইয়ুব বাচ্চুর নাম নিতে গিয়ে চাপা কান্নার স্রোতে কথা হারিয়ে ফেলেন জেমস। নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে বলেন, ‘বাচ্চু ভাইয়েরই একটা কথা মনে পড়ে গেল। একটা গল্প বলি। অনেক আগে একটা শোতে হাস্যোজ্জ্বল বাচ্চু ভাই বলেছিলেন- যাই হোক শো ইজ মাস্ট অন! আজও অন। আমি চেষ্টা করছি।’

এরপর জেমস বাচ্চুর স্মরণে গিটারে সুর তোলেন। সেই সুরেও ছিল কান্না। তিনিও কাঁদছিলেন। কাঁদাচ্ছিলেন দর্শকদেরও।