বরিশালে দেবী বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব। হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ শুক্রবার চোখের জলে বিদায় দিয়েছেন জগজ্জননী মা দেবী দুর্গাকে। বিসর্জন দিয়েছেন প্রতিমা। সেই সঙ্গে আসছে বছর আবারও এই মর্ত্যলোকে ফিরে আসবেন মা- এই আকুল প্রার্থনাও জানিয়েছেন তারা।

অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে শুভ-কল্যাণ ও সব সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে নিরন্তর শান্তি-সম্প্রীতির আকাঙ্খা নিয়ে গত বৃহস্পতিবার ষষ্ঠীপূজার মধ্য দিয়ে এই উৎসব শুরু হয়েছিল।

সনাতন বিশ্বাস ও পঞ্জিকামতে, জগতের মঙ্গল কামনায় দেবী দুর্গা এবার ঘোটকে (ঘোড়া) চড়ে মর্ত্যলোকে (পৃথিবী) এসেছিলেন (আগমন)। যার ফল হচ্ছে ফসল ও শস্যহানি। দেবী স্বর্গালোকে বিদায় নেন (গমন) দোলায় (পালকি) চড়ে। যার ফল হচ্ছে মড়ক।

বিজয়া দশমী উপলক্ষে শুক্রবার ছিল সরকারি ছুটি। দেবী বিসর্জনের দিনটিতে বিষাদের পাশাপাশি উৎসবমুখর হয়ে উঠেছিল গোটা বরিশাল শহর। হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে উৎসবে যোগ দিয়েছেন অন্যান্য ধর্মের মানুষও।

এবার বরিশাল মহানগরীতে ৩৮টিসহ পুরো জেলায় ৬০০টি পূজামÐপে দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হয়। পাঁচদিনের শারদীয় দুর্গোৎসবের শেষদিনের মূল আকর্ষণ বিজয়া শোভাযাত্রা ও প্রতিমা বিসর্জন।

প্রতিমা বিসর্জনের আগে দিনব্যাপী নানা পূজা-অর্চনা চলে। সকাল ৯টা ৫৭ মিনিটের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয় দশমীবিহিত পূজা ও দর্পণ বিসর্জন। চলে ভক্তদের আরতি আর রঙের হোলি খেলা। পরম ভক্তি নিয়ে নিজ নিজ মনের বাসনা জানিয়ে দেবীর পায়ে সিদুর ছোঁয়ান নারীরা। এরপর বিসর্জনের জন্য সধবা নারীরা দেবীকে সাজান ফুল, সিঁদুর ও নানা অলঙ্কার দিয়ে। পুরোহিতরা দেবীর জন্য সাজান সেদ্ধ চালের নৈবেদ্য, কচু-ঘেচু, শাপলা দিয়ে। এরপর শেষ মন্ত্রোচ্চারণের মধ্যদিয়ে বিদায় জানানো হয় দেবীকে।

বিজয়া দশমীকে ঘিরে বরিশালে কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়। বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্যের পাশাপাশি মোতায়েন করা হয় র‌্যাব ও গোয়েন্দা সদস্যদের।’