ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ডাকসু নির্বাচনে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল সংসদে ভিপি নির্বাচিত হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী রিকি হায়দার আশা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল সংসদ নির্বাচনে ছাত্রলীগের একক প্রাধান্যের ভেতরেও রিকির জয় নতুন দৃষ্টান্ত রেখেছে। দলীয় ব্যানারের বাইরে বেরিয়ে স্বতন্ত্র প্যানেল দিয়ে জয় পাওয়ার গল্প ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাসে খুবই কম।

বিজয়ের আগে তিনি জানিয়েছিলেন ‘আমার এই বিশ্ববিদ্যালয় আমাকে আশাবাদী করে অচলায়তন ভেঙে সচলায়তনের পৃথিবী গড়তে দরকার যোগ্য নেতৃত্বের। আমার বিশ্ববিদ্যালয় আমার পৃথিবীর মত। আমার হল আমার বাসার মত। আমার হলের সবাই আমার পরিবারের মত। এই পরিবারের সদস্যরা তাদের নেতা নির্বাচন করতে ভুল করতে পারে না। আমি কথা দিচ্ছি আমার চেয়ে যোগ্য কাউকে পেলে আমার ভোটটিও আমি তাকে দিব। আমার হলকে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য হলের মধ্যে সেরা অবস্থানে দেখতে চাই। আমি আমার জন্য এই হলের জন্য ভোট চেয়েছি। তার এ আহ্বানে সাড়া দিয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রিকি বরিশালের মেয়ে। নগরীর ফকিরবাড়ি রোডে তাদের বাসা। তার বাবা আলী হায়দার বাবুল সুপ্রিম কোর্ট ও বরিশাল জজকোর্টের একজন সিনিয়র আইনজীবী। বরিশাল সদর গার্লস ও সরকারি মহিলা কলেজে পড়াশুনা করেছেন রিকি। তিনি একজন বিতার্কিকও। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও বিতার্কিক হিসেবে প্রশংসিত।

জয়ের পরে তিনি ফেসবুক স্ট্যাটাসে তার মনের কথা জানিয়েছেন। সেখানে তিনি বলেন, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের সকল আপুদের অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আপনাদের সকলের সমর্থন পেয়ে আমি হল সংসদে স্বতন্ত্র থেকে ভিপি (সহ-সভাপতি) পদে নির্বাচিত হয়েছে। এই ভালোবাসা আমার কতটুকু প্রাপ্য আমি জানি না, তবে আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো আপনাদের সকল সমস্যায় পাশে থাকার। আপনাদের সকল যৌক্তিক দাবি-দাওয়াগুলি পূরণ করার।

তিনি বলেন, আজকের এই জয় বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের জয়, আজকের এই জয় হলের প্রত্যেকটি মেয়ের জয়। চারিদিকে যখন নেতিবাচক খবরের ছড়াছড়ি, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল আবারও প্রমাণ করেছে এই হলে কোন অন্যায়ের ঠাঁই নেই। প্রশাসন, পোলিং অফিসার, রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ সকল শিক্ষার্থীদের সার্বিক সহায়তায় একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত হয়েছে। প্রচারণাজনিত কারণে সময়ে অসময়ে আমরা আপনাদের বিরক্ত করেছি।

কিন্তু সর্বদাই আমরা আপনাদের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পেয়েছি। এই ভালোবাসা এই সমর্থনকে পুঁজি করেই আমরা নির্বাচিত সকলে এক হয়ে যেকোন স্বার্থের উর্ধ্বে গিয়ে আপনাদের হয়ে হলের সার্বিক উন্নয়নে আমাদের সর্বোচ্চ ভূমিকা পালন করতে চেষ্টা করবো।

আশা করি ভবিষ্যতেও আমরা একইভাবে আপনাদের সকলকে পাশে পাবো। আপনাদের সকলের দোয়া ও সমর্থন একান্তভাবে কাম্য।’