শুরুতে হামলার কথা অস্বীকার করলেও শ্রীলঙ্কায় সিরিজ বোমা হামলা ও আত্মঘাতী বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করেছে জামাত আল তৌহিদ আল ওয়াতানিয়া (ন্যাশনাল তাওহীদ জামাত) নামের একটি সংগঠন। সৌদিভিত্তিক আল আরাবিয়া টেলিভিশনকে উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে রাশিয়ান সংবাদ সংস্থা তাস।

তাসের খবরে বলা হয়, আল আরাবিয়া টিভি চ্যানেল সোমবার (২২ এপ্রিল) টুইটারে জানিয়েছে, স্থানীয় সন্ত্রাসী সংগঠন জামাত আল তৌহিদ আল ওয়াতানিয়া হামলার দায় স্বীকার করেছে। তবে টুইটে তারা এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানায়নি।

এর আগে দেশটির সংবাদমাধ্যম জানিয়েছিল, পনের দিন আগে ন্যাশনাল তাওহিদ জামায়াত নামে একটি সংগঠন এমন হামলা চালাতে পারে বলে তথ্য ছিলো শ্রীলঙ্কার পুলিশের কাছে। কিন্তু, সে হামলা ঠেকাতে পারেনি তারা।

তবে শুরুতে হামলার কথা অস্বীকার করেছিল সংগঠনটি। যদিও হামলার পেছনে এনটিজেই দায়ী বলে পুলিশের তরফ থেকে সন্দেহ করা হচ্ছিল।

২৬ বছর স্থায়ী গৃহযুদ্ধের বিভীষিকা কাটিয়ে শ্রীলঙ্কায় শান্তি ফিরেছে এক দশক আগে। ২০০৯’র পর শ্রীলঙ্কায় এতো বড় রক্তপাত এটিই প্রথম। অন্যভাবে বললে গৃহযুদ্ধের সময় ১৯৯৫ সালে একই রকম একটি হামলায় মারা গিয়েছিলেন ১৪৭ জন খ্রিস্টান নাগরিক। কিন্তু, দেশটিতে যখন আপাত শান্তি বিরাজ করছে সেই সময় প্রায় তিনশ নিরীহ নাগরিকের প্রাণহানি, তাও ধর্মীয় উপাসনালয়ে- হতবাক করেছ পুরো বিশ্বকে।

রবিবার সকালে স্টার সানডের উপাসনা চলার সময় শ্রীলঙ্কায় সিরিজ বোমা হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে এখন পর্যন্ত ২৯০ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছেন প্রায় ৫শ’র বেশি মানুষ। ৩টি গির্জা, ৩টি হোটেলসহ অপর দু’টি স্থানে আত্মঘাতী বোমা হামলা চালানো হয়। আত্মঘাতী দুই জঙ্গি হিসেবে তদন্তকারী সংস্থা দু’টি নাম জানিয়েছে- মাওলানা জাহরান হাশিম এবং আবু মোহাম্মেদ। এই দুজন ন্যাশনাল তাওহীদ জামায়াত (এনটিজে) নামের উগ্রপন্থি মুসলিম সংগঠনের সদস্য।

দেশটির গোয়েন্দারা জানায়, হামলায় ব্যবহার করা হয় ২৫ কেজি সি-৪ প্লাস্টিক এক্সপ্লোসিভ।

এদিকে শ্রীলঙ্কায় আজ সোমবার মধ্যরাত থেকে জরুরি অবস্থা জারি করা হচ্ছে। মধ্যরাত থেকে শর্তসাপেক্ষে জরুরি অবস্থা জারির এই পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল।