নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল:: বরিশালে এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে আসামি আবু বক্কর সিদ্দিককে (২৫) যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার দুপুরে বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের বিচারক আবু শামীম আজাদ এ রায় দেন। একইসঙ্গে ধর্ষণের ঘটনার পর জন্ম নেওয়া শিশুটিকে ধর্ষক আবু বক্কর সিদ্দিকের সন্তান হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন আদালত। শিশুটি সাবালক না হওয়া পর্যন্ত তার যাবতীয় ভরণ-পোষণ রাষ্ট্রকে বহন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নের লামচড়ি গ্রামের শামসুল হক সিদ্দিকের ছেলে আবু বক্কর ২০০৫ সালের ১৩ মার্চ তার চাচাতো বোনকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় কিশোরী গর্ভবতী হয়ে পড়ে। বিষয়টি এলাকাবাসী সালিশ ডেকে ধর্ষক আবু বক্করকে ওই কিশোরীকে বিয়ে করতে বলে।

কিন্তু সে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায়। এই ঘটনায় কিশোরী বাদী হয়ে ২০১৬ সালের ১৬ মার্চ বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করে। তদন্ত শেষে একই বছরের ০৩ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন বরিশাল মেট্রোপলিটন কাউনিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শিশির পাল। দীর্ঘ ৩ বছর ধরে মামলা চলার পর ১৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষে বিচারক বুধবার আসামি আবু বক্কর সিদ্দিককে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেন।

সরকার পক্ষে মামলা পরিচালনাকারী আইনজীবী সংশ্লিষ্ট আদালতের পিপি ফজলুল হক ফয়েজ বরিশালটাইমসকে জানান, ‘এটি একটি যুগান্তকারী রায়। কারণ ১৪ বছর আগের ধর্ষণের মামলায় আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেইসঙ্গে ধর্ষণের শিকার নারীর গর্ভে জন্ম নেওয়া শিশুটি সাবালক না হওয়া পর্যন্ত রাষ্ট্রকে তার ভরণ পোষণের যাবতীয় খরচ বহন করার আদেশ দিয়েছেন বিচারক।

এই রায়ের মাধ্যমে ন্যায় বিচার হয়েছে বলে আমরা মনে করি।’