নিজস্ব প্রতিবেদক,বরগুনা:: বরগুনার আলোচিত রিফাত হত্যাকাণ্ডের অন্যতম আসামী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হক কিশোর মিন্নির কিছু হলে আত্মহত্যা করবেন বলে হুমকি দিয়েছেন।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, বাংলাদেশে যতো আইনজীবী আছে তাদের কাছে আমার অনুরোধ, আপনারা দেখুন আমার মেয়েকে চাপ দিয়ে জবানবন্দী নেয়া হয়েছে। আমার মেয়ের কিছু হলে আমি আত্মহত্যা করবো।

শুক্রবার (১৯ জুলাই) সন্ধ্যায় বরগুনা আদালত প্রাঙ্গনে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। মিন্নির বাবা বলেন, নির্যাতন ও জোরজবরদস্তি করে তার মেয়ের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী নেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, আমার মেয়ে মিন্নি নির্দোষ, রিফাত হত্যার পেছনে শুরু হয়েছে নোংরা রাজনীতি। প্রশাসনের লোকেরা শোনেন, আপনারা সঠিক তদন্ত করেন তাহলে রিফাত হত্যার মূল রহস্য বেরিয়ে আসবে।

মিন্নির বাবা আরও বলেন, আমি আইনি লড়াই করে সত্যটা বের করব ইনশাল্লাহ। আমার মেয়ে জীবন বাজি রেখে তার স্বামীকে রক্ষা করতে গেছে। এটাই তার অপরাধ? এসব কিছুই শম্ভু বাবুর (স্থানীয় সাংসদ ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু) খেলা। তার ছেলে সুনাম দেবনাথকে বাঁচানোর জন্য আমাদের বলি দেয়া হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, আমার পরিবার এখন গৃহবন্দী, আমার ছেলেমেয়েদের স্কুল কলেজ বন্ধ, আমার হাট বাজার বন্ধ, আমাকে হুমকি দেয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, সারা দেশের মানুষ দেখেছেন আমার মেয়ে কীভাবে তার স্বামীকে রক্ষার জন্য সন্ত্রাসীদের সঙ্গে লড়াই করেছে। একটি প্রভাবশালী মহল আমার মেয়েকে ফাঁসিয়ে খুনিদের আড়াল করতে চাইছে।

রিফাত শরীফ হত্যা মামলার ১ নম্বর সাক্ষী এবং তার স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি শুক্রবার বরগুনার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জবানবন্দী দেন।

এর আগে গত মঙ্গলবার মিন্নিকে প্রায় ১৩ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশ এ মামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাকে গ্রেফতার দেখায়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির মিন্নিকে সাতদিনের রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করেন। আদালত পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

গত ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

হত্যাকাণ্ডের পরের দিন রিফাত শরীফের বাবা আবদুল হালিম শরীফ বরগুনা থানায় ১২ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। এ ছাড়া সন্দেহভাজন অজ্ঞাতনামা আরও চার-পাঁচজনকে আসামি করা হয়।

এ মামলার প্রধান আসামি সাব্বির আহম্মেদ ওরফে নয়ন বন্ড ২ জুলাই পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন। মামলার এজাহারভুক্ত ৬ আসামিসহ ১৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ১০ জন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছেন ’