বাঘা বাঘা ব্যাটসম্যানরা সব হতাশ করে বিদায় নিয়েছিলেন। সাকিব, মুশফিক, মাহমুদউল্লাহর মতো ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতা যখন দারুণ হতাশার জন্ম দিল বাংলাদেশের ক্রিকেট সমর্থকদের হৃদয়ে, তখন সেটাকে নিমিষে দূর করে দিলেন আফিফ হোসেন ধ্রুব। বয়স মাত্র ২০ ছুঁই ছুঁই। মোসাদ্দেক হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে এই বয়সে দলকে নিশ্চিত হার থেকে রক্ষা করলেন এই তরুণ ক্রিকেটার। বাংলাদেশকে এনে দিলেন ৩ উইকেটের এক লজ্জা এড়ানো জয়।

আফগানিস্তানের কাছে চট্টগ্রাম টেস্টে হারের পরই বাংলাদেশ ক্রিকেটের নখ-দন্ত বেরিয়ে পড়ে। এরপর জিম্বাবুয়ের কাছে বিসিবি একাদশের নামে একঝাঁক জাতীয় দলের ক্রিকেটারের হার চিন্তা বাড়িয়ে দিয়েছিল। তবুও আশা ছিল, মূল লড়াইয়ে সাকিব আল হাসানরা ঠিকই পারবে হয়তো।

কিন্তু জিম্বাবুয়েকে ১৪৪ রানে বেধে ফেলার পরও যখন মাত্র ৬০ রানেই ৬ উইকেটের পতন ঘটে, তখন তো নিশ্চিত হারের যন্ত্রণাই চেপে বসতে যাচ্ছিল। আরও একটি লজ্জাজনক পরাজয় তখন যেন দরজায় কড়া নাড়ছিল।

কিন্তু আফিফ হোসেন ধ্রুবর ওপর অনেকেরই আস্থা ছিল। মিরপুরের প্রেসবক্সেও সবাই বলাবলি করছিল, এই ছেলেটির মধ্যে প্রতিভা আছে। সেই পারে বাংলাদেশকে এই লজ্জা থেকে বাঁচাতে। সঙ্গে যদি মোসাদ্দেক তাকে যোগ্য সঙ্গ দিতে পারে!

শেষ পর্যন্ত সেটাই প্রতিফলিত হলো। আফিফ হোসেন ধ্রুব জিম্বাবুয়ে বোলারদেরকে নিজেদের ওপর চেপে বসতে দেননি। বরং দেখিয়ে দিয়েছেন শন উইলিয়ামস, তেন্দাই চাতারা কিংবা কাইল জার্ভিসদের চেয়ে বাংলাদেশ এখন অনেক বেশি এগিয়ে। জিম্বাবুয়ে বোলারদের উইতেটের চারপাশে পিটিয়ে মাত্র ২৪ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করলেন তিনি। যাতে ছিল ৮টি বাউন্ডারি আর ১টি ছক্কার মার।

Winমোসাদ্দেক হোসেন সৈকত জুটি তৈরিতে দারুণ সহযোগিতা করলেন। কোনো বাউন্ডারি নেই তার ৩০ রানের ইনিংসে। রয়েছে ২টি ছক্কা। শেষ পর্যন্ত বিজয়ীর বেশেই মাঠ ত্যাগ করলেন তিনি।

টস হেরে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ১৮ ওভারে বাংলাদেশের সামনে ১৪৫ রানের চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য ছুড়ে দেয় জিম্বাবুয়ে। দুই ওপেনার লিটন দাস আর সৌম্য সরকার মোটামুটি একটা ভালো শুরু দিয়েছিলেন; কিন্তু ৩ ওভারে ২৬ রান যোগ করেই তারা দুজন সাজঘরের পথ ধরেন।

চাতারার করা ইনিংসের তৃতীয় ওভারের শেষ বলে বোল্ড হন লিটন (১৪ বলে ১৯)। কাইল জার্ভিসের পরের ওভারের প্রথম বলেই তুলে মারতে গিয়ে বোকার মতো আউট সৌম্য সরকার (৭ বলে ৪)।

এর তিন বলের ব্যবধানে মুশফিকুর রহীমকেও (০) উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানিয়েছেন জারভিস। এরপর ১ রান করে চাতার দ্বিতীয় শিকার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। এ সময় দলের রান মাত্র ২৯। উইকেট নাই ৪টি।

এরপর মাহমুদউল্লাহ আর সাব্বির রহমান কিছুটা আশার আলো জাগান। ২৭ রানের জুটি গড়ার পর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ হয়ে যান এলবিডব্লিউ। ১৬ বলে তিনি করেন ১৪ রান। ৪ রান পরই, ১৬০ রানের মাথায় ফিরে যান সাব্বির রহমানও।